বাংলাহান্ট ডেস্ক:- গাজায় (Gaza) সাংবাদিক হত্যার তীব্র নিন্দা জানাল ভারত (India)। গত সোমবার ইহুদি বাহিনীর (Jewis Forces) হানায় মৃত্যু হয় ৫ সাংবাদিকের। আলজাজিরাও (Al Jazeera) সাংবাদিকদের ওপর ইহুদি বাহিনীর এই নির্মম হামলার নিন্দা জানিয়েছে।সত্যের কন্ঠরোধ করার পরিকল্পিত অভিযান বলে তোপ দেগেছে এই সংবাদমাধ্যম।
গাজায় সাংবাদিক হত্যার তীব্র নিন্দা (Gaza)
গাজায় নতুন করে রক্তাক্ত অধ্যায়। গত সোমবার নাসের হাসপাতালে ইজরায়েলি সেনার হামলায় মৃত্যু হয়েছে অন্তত ২১ জনের, যাদের মধ্যে রয়েছেন পাঁচ সাংবাদিকও। রয়টার্স, অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস, আল জাজিরা এবং মিডল ইস্ট আই-এ কর্মরত ওই সাংবাদিকদের মৃত্যুতে আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। এরই মধ্যে বুধবার ভারত সরকারের তরফে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, “সাংবাদিকদের এই হত্যা মর্মান্তিক এবং অত্যন্ত দুঃখজনক। ভারত সব সময়ই সংঘাতে অসামরিক প্রাণহানির নিন্দা করেছে।”
আরও পড়ুন:-পুজোয় মোদীর বড় উপহার, দুর্গোৎসব-দীপাবলিতে চালু একগুচ্ছ স্পেশাল ট্রেন
সোমবারের হামলার পর আলাদা আরেকটি ঘটনায় খান ইউনিসে আরও এক সাংবাদিক প্রাণ হারিয়েছেন। সাংবাদিকদের উপর হামলা এবং তাদের মৃত্যু গোটা দুনিয়াকে স্তম্ভিত করেছে। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাসের প্রাথমিক হামলার পর থেকেই প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর (Benjamin Netanyahu) নেতৃত্বাধীন ইজরায়েলি সেনা গাজার বিভিন্ন জায়গায় তীব্র অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। লক্ষ্য, হামাসের শক্ত ঘাঁটিগুলিকে ধ্বংস করা। কিন্তু সেই সঙ্গে হাজার হাজার সাধারণ মানুষের প্রাণহানি ঘটছে। খোদ ইজরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, হামাস সাধারণ মানুষকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করছে, যার ফলে ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা বাড়ছে।
আরও পড়ুন:-“মোদীকে ফোনে বললাম…”, অতিরিক্ত শুল্ক চাপিয়ে ফের ভারত-পাক সংঘাত নিয়ে বড় দাবি করলেন ট্রাম্প
এদিকে, গাজা সংঘর্ষ দীর্ঘায়িত হওয়ায় ইজরায়েলি সমাজের ভিতরেই ক্রমশ অসন্তোষ বাড়ছে। সম্প্রতি ‘হোস্টেজেস অ্যান্ড মিসিং ফ্যামিলিস ফোরাম’ নামের একটি সংগঠন আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। রাজধানী তেল আভিভ-সহ বিভিন্ন শহরে এই আন্দোলনের ফলে ব্যাপক যানজট এবং অশান্তির পরিবেশ তৈরি হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু শান্তি চুক্তি বা বন্দি মুক্তিতে আন্তরিক নন। যদিও নেতানিয়াহু দাবি করেছেন, ৫০ জন পণবন্দিকে মুক্ত করার জন্য আলোচনা শুরু করার নির্দেশ তিনি দিয়েছেন। কিন্তু এর মধ্যেই গাজায় নতুন করে হামলা শুরু হওয়ায় সাধারণ মানুষের মনে সন্দেহ আরও গভীর হয়েছে।
বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ তুলছেন, নেতানিয়াহু আসলে পণবন্দিদের মুক্ত করতে চাইছেন না, বরং সামরিক অভিযান চালিয়ে যাওয়ার জন্য তাঁদের বলি দিচ্ছেন। অনুমান করা হচ্ছে, হামাসের কাছে এখনও প্রায় ২০ জন জীবিত পণবন্দি রয়েছে। এই অবস্থায় ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী দ্বিমুখী চাপের মধ্যে পড়েছেন—একদিকে হামাসের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার অঙ্গীকার, অন্যদিকে দেশের ভেতরে ক্রমশ বাড়তে থাকা শান্তির দাবিতে প্রতিবাদ। গাজার এই সাম্প্রতিক হামলা শুধু আন্তর্জাতিক মহলের নয়, ইজরায়েলি সমাজের ভিতরেও নেতানিয়াহুকে কোণঠাসা করে তুলছে।