বাংলা হান্ট ডেস্ক: বিগত কয়েক বছরে সীমান্তে ক্রমশ নিজের গতিবিধি বাড়িয়েছে চিন (China)। এমনকি, একাধিক বিতর্কিত ঘটনাও ঘটিয়েছে তারা। এমতাবস্থায়, চিনের সাথে টক্কর দিতে ভারতও কিন্তু চুপ নেই! মূলত, জিনপিংয়ের দেশের সাথে চলা দ্বন্দ্বের আবহে এবার চুশুল থেকে ডেমচোক পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ রেখা (LAC) বরাবর ১৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সিঙ্গেল লেনের মহাসড়ক আগামী দুই বছরের মধ্যে প্রস্তুত হবে বলে জানা গিয়েছে। এমতাবস্থায়, এই মহাসড়কটি দেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত সড়ক হিসেবে বিবেচিত হবে।
ইতিমধ্যেই এই প্রক্রিয়া শুরু করে গত ২৩ জানুয়ারি বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশন (BRO) চুশুল-ডুংটি-ফুকচে-ডেমচোক হাইওয়ে (Chushul-Dungti-Phukche-Demchok Highway) যেটি CDFD রোড নামেও পরিচিত তা নির্মাণের জন্য বিডের আমন্ত্রণ জানিয়েছে। এমতাবস্থায়, জানা গিয়েছে, ৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই সড়কটি আগামী দুই বছরের মধ্যে প্রস্তুত হবে। পাশাপাশি, নতুন রাস্তাটি সিন্ধু নদীর পাশ দিয়ে তৈরি হবে, যা কার্যত LAC-এর সমান্তরালে থাকবে। অর্থাৎ এটি লেহ-তে ভারত-চিন সীমান্তের খুব কাছাকাছি নির্মিত হবে।
এদিকে, কয়েক দশক ধরে ভারত-চিন সীমান্তের এই অংশে এহেন গুরুত্বপূর্ণ পথটি কেন তৈরি হয়নি তা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠেছে। অপরদিকে, চিন সিন্ধু নদীর আশেপাশের এলাকায় একাধিক পরিকাঠামোগত পরিবর্তন করেছে। মূলত, চুশুল হল সেই এলাকা যেখানে ১৯৭২ সালে রেজাং লা-র যুদ্ধ হয়েছিল। পাশাপাশি, ভারত ও চিনের মধ্যে সংঘর্ষের সাক্ষী হয়েছে ডেমচোকও। এমতাবস্থায় নতুন রাস্তার কারণে দ্রুত সৈন্যদের ট্রুপ এবং যুদ্ধ সামগ্রী পৌঁছে যাবে। সেই সঙ্গে এই এলাকাকে সার্কিটে পরিণত করেও পর্যটন বিকাশ সহজ হবে। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, ৭.৪৫ মিটার প্রশস্ত এই সড়কে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সেতুও নির্মাণ করা হবে। BRO ২০১৮ সালে এই সড়কের সম্প্রসারণের প্রকল্পে একটি রিপোর্ট তৈরি করেছিল। এমতাবস্থায়, গত ২৩ জানুয়ারি দু’টি প্যাকেজে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।
ন্যুউমা এয়ারফিল্ডের পর এটি দ্বিতীয় বড় পদক্ষেপ: লেহ অঞ্চলে সড়ক পরিকাঠামোর উন্নয়নে এটি নিঃসন্দেহে একটি বড় পদক্ষেপ হবে। এর আগে BRO লাদাখে ন্যুউমা এয়ারফিল্ড নির্মাণের জন্য বিডের আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। যা যুদ্ধবিমানগুলির জন্য একটি আধুনিক অবতরণ স্থান হিসেবে বিবেচিত হবে। এমতাবস্থায়, এই ন্যুউমা এয়ারফিল্ড হবে ভারতের সর্বোচ্চ এয়ারফিল্ডের একটি। পাশাপাশি এই অত্যাধুনিক ল্যান্ডিং গ্রাউন্ডটি নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে মাত্র ৫০ কিলোমিটার দূরে থাকবে।
আগামী দুই বছরে ২১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই অত্যাধুনিক ল্যান্ডিং গ্রাউন্ডে ফাইটার প্লেন চলাচল শুরু করবে। পাশাপাশি এটির অবস্থান CDFD রোডের কাছে হবে। এই নতুন ল্যান্ডিং গ্রাউন্ডটি প্রায় ১,২৩৫ একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত থাকবে। এছাড়াও, সেখানে উপযুক্ত সামরিক পরিকাঠামো সহ প্রায় ২.৭ কিলোমিটার লম্বা রানওয়ে তৈরি করা হবে বলেও জানা গিয়েছে।