বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ভারত (India) বাস্তবিক নিয়ন্ত্রণ রেখায় চীনকে (China) কড়া জবাব দেওয়ার জন্য বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চীনের কাছ থেকে ২০২০ এর বদলার সাথে সাথে ১৯৬২ সালেরও বদলা নেওয়া হবে। ভারত সীমান্তে চীনকে কড়া শিক্ষা দিতে আমেরিকা থেকে এমন এক অস্ত্র আনছে, যেটা শুধু ভারতের সীমান্তেরই রক্ষাই করবে না, মাটি থেকে আকাশ পর্যন্ত রেড আর্মির প্রতিটি ষড়যন্ত্রকে ব্যর্থ করবে। চীনকে শিক্ষা দিতে আর নিজেদের শক্তি বাড়াতে ভারত একের পর এক বড় সিদ্ধান্ত নিয়ে চলেছে। আর সেই সিদ্ধান্তের মধ্যে একটি হল আমেরিকা থেকে ৩০ টি MQ-9 রিপার ড্রোন কেনা।
এই MQ-9 রিপার ড্রোন শুধু চীনের ষড়যন্ত্রের উপর নজরই রাখবে না, তাঁদের প্রতিটি দুঃসাহসের যোগ্য জবাব দেবে। আমেরিকার এই MQ-9 রিপার ড্রোন এখনো পর্যন্ত বিশ্বের সবথেকে বিপজ্জনক ড্রোনের মধ্যে একটি, আর এটি সবথেকে অত্যাধুনিকও। জানিয়ে দিই, আমেরিকা এই ড্রোনের মাধ্যমেই ইরানের জেনারেল সুলেমানীকে নিকেশ করেছিল। আমেরিকা প্রথম ব্যাচে ছয়টি MQ-9 রিপার ড্রোন পাঠাবে ভারতে। এরপর দ্বিতীয় ব্যাচে ২৪ টি ড্রোন পাঠাবে। এই বিধ্বংসী ড্রোন ভারতের হাতে আসা মাত্রই, ভারতের সৈন্য শক্তি কয়েকগুন বৃদ্ধি পাবে।
আরেকদিকে, পূর্ব লাদাখে (Ladakh) চীনের সাথে সীমান্ত নিয়ে জারি বিবাদের মধ্যে ভারত (India) নিজের প্রতিরক্ষা ক্ষমতা লাগাতার মজবুত করার কাজ করে চলেছে। আর সেই ক্রমেই প্রতিরক্ষা মন্ত্রালয় সোমবার ২ হাজার ২৯০ কোটি টাকার হাতিয়ার অধিগ্রহণের মঞ্জুরি দিয়েছে। এই চুক্তিকে আমেরিকার থেকে কেনা ৭২ হাজার অ্যাসাল্ট রাইফেলও যুক্ত আছে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের নেতৃত্বাধীন প্রতিরক্ষা অধিগ্রহণ কাউন্সিল (DCA) আমেরিকার ফার্ম এসআইজি সৌর (SiG Sauer) এর থেকে ৭৮০ কোটি টাকার অ্যাসাল্ট রাইফেল কেনার মঞ্জুরি দিয়েছে। জানিয়ে দিই, গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে হওয়া ফাস্ট ট্র্যাক ক্রয় চুক্তি অনুযায়ী ভারতীয় সেনাকে এর আগেই ৭২ হাজার ৪০০ এসআইজি রাইফেল দেওয়া হয়েছে। 7.62×51 ক্যালিবারের এই রাইফেলের প্রভাবি মারক ক্ষমতা ৫০০ মিটার।
এর সাথে সাথে প্রতিরক্ষা অধিগ্রহণ কাউন্সিল সোমবার ৯৭০ কোটি টাকার স্বদেশী স্মার্ট অ্যান্টি এয়ারফিল্ড হাতিয়ার আর ৫৪০ কোটি টাকার এইচএফ ট্রান্স রিসিভার সেট কেনার মঞ্জুরি দিয়ে দিয়েছে।
এছাড়াও ফ্রান্স (France) ভারতের (India) হাতে পাঁচটি রাফাল (Dassault Rafale) লড়াকু বিমানের দ্বিতীয় ব্যাচ তুলে দিলো। এই বিমান গুলো এখনো ফ্রান্সেই আছে আর অক্টোবর মাসে ভারতে চলে আসবে। এই বিমান গুলোকে পশ্চিমবঙ্গের (West Bengal) কলাইকুন্ডা এয়ারফোর্স স্টেশনে (Kalaikunda Air Force Station) মোতায়েন করা হবে, এখান থেকে বিমান গুলো ভারত-চীন সীমান্তের পূর্ব ভাগের সুরক্ষা প্রদান করবে।
ভারতে ফ্রান্সের রাজদূত এমানুয়েল লেনিন বলেন, রাফাল ফাইটার জেটের দ্বিতীয় ব্যাচ ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আপাতত এই বিমান গুলো ফ্রান্সেই আছে। এখন ভারত নির্ণয় নেবে যে, কখন এই বিমান গুলোকে তাঁরা দেশে নিয়ে যাবে।
ভারত আর চীনের মধ্যে উত্তেজনা লাগাতার বেড়েই চলেছে, আর এই কারণে ভারতের হালে রাফাল বিমানের দ্বিতীয় ব্যাচ তাড়াতাড়ি আসা খুবই দরকার। কারণ এই বিমান গুলো কম তাপমাত্রাতেও সহজেই কাজ করতে পারবে। ভারতে আসা পাঁচ রাফাল বিমানের প্রথম ব্যাচ ২৫০ ঘণ্টার বেশি উড়ান আর ফিল্ড ফায়ারিং পরীক্ষণ সম্পূর্ণ করেছে। এই বিমান গুলোকে আম্বালায় ১৭ গোল্ডেন অ্যারো স্কোয়াডে যুক্ত করা হয়েছে। সেখানে একজন মহিলা ফাইটার বিমান চালকও আছে।
ভারত ৩৬ টি রাফাল বিমান কেনার জন্য ফ্রান্সের সাথে একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। ৩৬ টির মধ্যে ৩০ টি ফাইটার জেট থাকবে, আর ছয়টি থাকবে প্রশিক্ষণ বিমান। এই প্রশিক্ষণ বিমান গুলোতে দুটি করে সিট থাকবে আর লড়াকু বিমানের মতো সব সুবিধাই উপলব্ধ থাকবে। রাশিয়া থেকে শুখোই বিমান কেনার প্রায় ২৩ বছর পর প্রথমবার ভারত কোনও লড়াকু বিমান কিনল।