বাংলাহান্ট ডেস্ক: বর্তমানে ভারতের (India) সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক যুদ্ধ চলছে। এই পরিস্থিতিতে বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে থাকলেও, কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন— ভারত কোনওভাবেই তাড়াহুড়ো করে বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করবে না কিংবা স্বল্পমেয়াদী লাভের জন্য দেশের দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক স্বার্থের সঙ্গে আপস করবে না। শুক্রবার বার্লিন থেকে এক বিবৃতিতে তিনি জানান, “বাণিজ্য চুক্তি কেবল শুল্ক বা বাজারে প্রবেশাধিকার নয়, এটি বিশ্বাস, আস্থা এবং দীর্ঘমেয়াদী অংশীদারিত্বের প্রতীক।”
তাড়াহুড়ো নয় দীর্ঘমেয়াদী বাণিজ্যে বিশ্বাসী ভারত (India)
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ভারত (India) ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ নেতারা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি (বিটিএ) নিয়ে আলোচনার গতি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। ওই সময়ই তাঁরা প্রথম ধাপের কাজ ২০২৫ সালের অক্টোবর-নভেম্বরের মধ্যে সম্পূর্ণ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিলেন। ইতিমধ্যেই পাঁচ দফা আলোচনা শেষ হয়েছে। গত মাসে পীযূষ গোয়েল নিউইয়র্কে এই চুক্তি নিয়ে আলোচনার জন্য একটি সরকারি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশে ভোটের আগে জামাতের নাটকীয় চাল!সংখ্যালঘু হত্যার দায়ে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইলেন শফিকুর রহমান
বার্লিন সফরে তিনি আরও বলেন, “ভারতের (India) লক্ষ্য তাৎক্ষণিক ফল নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদে স্থিতিশীল অর্থনৈতিক কাঠামো গঠন করা। এই চুক্তি কেবল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইস্পাত বিক্রির বিষয় নয়। এটি হল একটি টেকসই, আস্থাভিত্তিক সম্পর্কের প্রতীক।” তিনি স্পষ্ট জানান, ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি তথ্য বা রাজনৈতিক চাপে নয়, বরং কৌশলগত পরিকল্পনার উপর নির্ভর করে।
এর আগে বৃহস্পতিবার দূরদর্শনের এক সাক্ষাৎকারে মন্ত্রী জানান, ভারত (India) ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে ইতিবাচক আলোচনা চলছে। তিনি বলেন, “আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। আমাদের দলগুলি সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। সম্প্রতি বাণিজ্য সচিব মার্কিন সফরে গিয়ে তাঁর প্রতিপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। আমরা একটি ন্যায্য ও ন্যায়সঙ্গত চুক্তির দিকেই এগোচ্ছি।”

এছাড়াও বর্তমানে পীযূষ গোয়েল জার্মানি সফরে রয়েছেন, যেখানে তিনি ভারত (India)-ইউরোপীয় ইউনিয়ন মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (ইইউ এফটিএ) নিয়েও আলোচনা করেছেন। ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করে তিনি জানান, “জার্মান চ্যান্সেলর ও জি৭ ও জি২০ শেরপার অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. লেভিন হোলের সঙ্গে দেখা করে আমি অত্যন্ত খুশি। আমরা ভারত-জার্মানি সহযোগিতার গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলি নিয়ে আলোচনা করেছি। ভারত-ইইউ এফটিএ নিয়েও ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। উভয় দেশই পারস্পরিক সমৃদ্ধির জন্য একসঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
বিশেষজ্ঞ মহলের মতে, পীযূষ গোয়েলের এই বক্তব্য স্পষ্ট করে দিচ্ছে যে, ভারত (India) এখন আর তাড়াহুড়ো করে কোনও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সিদ্ধান্ত নিচ্ছে না। বরং দেশীয় অর্থনীতি ও শিল্পক্ষেত্রের স্বার্থকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছে সরকার। মার্কিন শুল্ক যুদ্ধের আবহে এই নীতিগত অবস্থান ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য কৌশলকে আরও সুসংহত করবে বলেই মনে করা হচ্ছে।













