বাংলাহান্ট ডেস্ক:- শব্দের চেয়েও ২৪ গুন বেশি বেগ, থরথর করে কাঁপবে শত্রুপক্ষ। অগ্নি-৫ মিসাইল(Agni-5 Missile) ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষায় বড় সাফল্য পেল ভারত(India)। ওড়িশার(Odisha) বালেশ্বরে সফলভাবে ইন্টিগ্রেটেড টেস্ট রেঞ্জ থেকে মাঝারি পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করা হয়। বুধবার বাংলার সৈকত নগরী দিঘাও সেই উৎক্ষেপণের সাক্ষী রইল। শত্রুপক্ষ নিধনের ক্ষেত্রে এই সাফল্য ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের (Defense Ministry) জন্য যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
অগ্নি-৫ এর বৈশিষ্ট্য (Agni-5 Missile)
অগ্নি-৫ ভারতীয় এই ক্ষেপণাস্ত্রটি বিশ্বব্যাপী গেম চেঞ্জার একটি ব্যালিস্টিক মিসাইল(Ballistic Missile)। এটি অগ্নি সিরিজের সবচেয়ে উন্নত প্রজন্ম। এটির প্রায় ১৭ মিটার দৈর্ঘ্য, ২ মিটার ব্যাস এবং ৫০ টন ওজন। যা তিন ধাপ বিশিষ্ট সলিড ফুয়েল প্রপেল্যান্ট ক্ষেপণাস্ত্র। রোড মোবাইল লঞ্চার বা ক্যানিস্টার-ভিত্তিক লঞ্চ ব্যবস্থার মাধ্যমে এটি দ্রুত বহন ও উৎক্ষেপণ করা যাবে। গঠনগত বৈশিষ্ট্যের পাশপাশি এর প্রযুক্তি গত বৈশিষ্ট্য তাক লাগানোর মতোই। অগ্নি–৫ এর পাল্লা ৫,০০০ থেকে ৫,৫০০ কিমির। যা শুধুমাত্র পাকিস্তানকেই নয় গিলে খেতে পারে প্রায় গোটা এশিয়া, ইউরোপ ও আফ্রিকার বিস্তীর্ণ অঞ্চলকে। এটি প্রায় সর্বোচ্চ ১,৫০০ কেজি পর্যন্ত পারমাণবিক ওয়ারহেড বহন করতে সক্ষম বলে জানা যাচ্ছে।
প্রতিরক্ষায় অগ্নি-৫
ভারতের প্রতিরক্ষা কৌশলে অগ্নি–৫ একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। অগ্নি-৫ একটি মধ্যম-পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। যাকে দীর্ঘ দূরত্বে পারমাণবিক ওয়ারহেড বহন করার জন্য বানানো হয়েছে। এর মধ্যে উন্নত দিক নির্দেশ করার ব্যবস্থাও রয়েছে, যা জাইরোস্কোপ-ভিত্তিক সেন্সরগুলির সঙ্গে ভারতীয় ন্যাভিক এবং আমেরিকান জিপিএস নেটওয়ার্কের মতো স্যাটেলাইট নেভিগেশন সরঞ্জামগুলিকে যোগ করে। এটি বহু দূরেও নির্ভুল নিশানায় আঘাত হানতে সক্ষম। এটি দেশের নিউক্লিয়ার ট্রায়াড সম্পূর্ণ করতে সহায়তা করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, “অগ্নি–৫ ভারতের নিরাপত্তা কৌশলকে বিশ্বমানের প্রতিরক্ষা ক্ষমতার সঙ্গে প্রতিযোগিতার যোগ্য করেছে।”
আরও পড়ুন:- একটি নয় দুটি নয় একেবার ১০টি চাকা ‘উধাও’ বিমানের! লজ্জাজনক ঘটনা বাংলাদেশে
অগ্নির বাকি সিরিজের সঙ্গে তুলনা
অগ্নি–১ ছিল সীমিত ক্ষমতার। এর রেঞ্জ ছিল প্রায় ৭০০ থেকে ১,২০০ কিলোমিটার, যা মূলত প্রতিবেশী দেশের নির্দিষ্ট কিছু লক্ষ্যবস্তুর জন্য যথেষ্ট ছিল। পরে অগ্নি–২ সেই সীমা বাড়িয়ে ২,০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত নিয়ে যায়, ফলে কৌশলগত পরিধি আরও প্রসারিত হয়। অগ্নি–৩ এর পাল্লা দাঁড়ায় প্রায় ৩,৫০০ কিলোমিটার এবং অগ্নি–৪ এর মাধ্যমে ভারত প্রায় ৪,০০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার ক্ষমতা অর্জন করে। এর ধারাবাহিকতায় অগ্নি–৫ ভারতের প্রতিরক্ষাকে আন্তঃমহাদেশীয় স্তরে পৌঁছে দেয়, যার পাল্লা ৫,০০০ থেকে ৫,৫০০ কিলোমিটার। এই দূরত্ব ভারতের হাতে এমন এক শক্তি তুলে দেয় যা ইউরোপ ও আফ্রিকার মতো দূরবর্তী অঞ্চলকেও আওতায় আনে।
অগ্নি-৫ ভারতের প্রথম আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। এর মধ্যে বর্তমান রয়েছে মাল্টিপল ইন্ডিপেন্ডেন্টলি টার্গেটেবল রি-এন্ট্রি ভেহিকেল (MIRV)। এই মিসাইলের প্রথম পরীক্ষা করা হয়েছিল ২০১২ সালের এপ্রিলে। এই মিসাইল ভারত থেকে পাকিস্তান, চিন, তুরস্কের মতো অনেক দেশে আঘাত হানতে সক্ষম।