বাংলা হান্ট ডেস্ক : রাত তখন গভীর। হঠাৎ করেই প্রসব বেদনা শুরু হয় গর্ভবতী মহিলার। এদিকে প্রবল তুষারপাতে বন্ধ রাস্তা। চারিদিকে পুরু বরফের আস্তরণ যে কারণে অ্যাম্বুলেন্সও পৌঁছাতে পারেনি বাড়িতে। পরিবারের কাছে সেরকম সামর্থ্যও নেই যে আলাদা ভালো গাড়ি ডেকে রোগিনীকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে ত্রাতা হয়ে উপস্থিত হলেন ভারতীয় সৈনদল (Indian Army)।
গর্ভবতী ও মহিলা যখন প্রসব যন্ত্রণায় কাতর তখনই সৈনদল টহল দিতে হাজির হয়। তারা এসে দেখে প্রসব যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে ঐ মহিলা। সেইসময় আর কোনোকিছু না ভেবে অবিলম্বে গর্ভবতী মহিলাকে তাদের কাঁধে তুলে নেন তারা। বরফ ভেঙে চড়াই-উতরাই পথে এগিয়ে চলেছেন ভারতীয় জওয়ানরা। তীব্র তুষারপাতকে উপেক্ষা করেই এগিয়ে চলেছেন তারা। প্রায় ৫ ঘণ্টার পথ পাড়ি দিয়ে মহিলাকে নিরাপদে হাসপাতালে পৌঁছে দিলেন জওয়ানরা।
সূত্রের খবর, এই মুহূর্তে মা ও সন্তান দুজনেই সুস্থ। ঘটনাটি ঘটেছে কুপওয়ারায়। মা ও সন্তানের সুস্থতার খবর মিলতেই উল্লাসে ফেটে পড়েছে ভারতীয় সেনা জওয়ানরা। সম্প্রতি তাদের একটি ভিডিও-ও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক মাধ্যমে। এদিকে সাধারণ মানুষও ভারতীয় সেনার এই কর্মকাণ্ডকে স্যালুট না জানিয়ে পারছেনা। সোশ্যাল মিডিয়ার পাতা ভরে গেছে ভারতীয় সেনাদের প্রশংসাবার্তায়।
এইদিন এক ইউজার লিখেছেন, ‘যদিও আজকাল মানুষের মধ্যে মানবতা নেই, তবে সেনা সৈন্যদের চেতনা থেকে সকলের শিক্ষা নেওয়া উচিত।’ ভারতীয় সেনার উদ্দেশ্যে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছে ঐ সদ্য মায়ের পরিবারও। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এই প্রথম নয়, এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে উত্তর কাশ্মীরের মোনাবলে (কুপওয়ারা) সেনাবাহিনীর ৩০RR সৈন্যরা এক গর্ভবতী মহিলাকে সাহায্য করেছিল এবং তাকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল।
ঘটনাপ্রসঙ্গে ভারতীয় সেনারা জানিয়েছেন, তুষারপাতের কারণে কুপওয়ারার অভ্যন্তরীণ এলাকার রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। এদিকে মোনাবলের বাসিন্দা মঞ্জুর আহমেদ খানের স্ত্রীর প্রসব ব্যথা শুরু হয়। তার অবস্থা দেখে আশাকর্মী তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে বললেও রাস্তা অবরুদ্ধ ও উপায় না থাকায় পরিবারের সদস্যরা অসহায় হয়ে পড়েন। সেই সময় সাহায্যের আশায় মঞ্জুর পৌঁছেছিলেন মিলিটারি ক্যাম্পে। সেনা চিকিৎসকরা প্রয়োজনীয় ওষুধ ও উদ্ধারকর্মী নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সৈন্যরা ওই নারীকে কাঁধে তুলে ৫ কিলোমিটার দূরে উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে যান।