বাংলাহান্ট ডেস্ক: নেপালের (Nepal) প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির (KP Sharma) পদত্যাগের পর প্রায় ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও রাজনৈতিক অস্থিরতার মেঘ কাটেনি কাঠমান্ডু (Kathmandu) থেকে। তার আঁচ এসে পৌঁছেছে ভারতের বাণিজ্য জগতে। বিশেষ করে যেসব ভারতীয় সংস্থার নেপালে কারখানা বা অফিস রয়েছে, তাদের উদ্বেগ এখন চরমে। হিন্দুস্তান ইউনিলিভার, ডাবর, স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার মতো সংস্থাগুলি নেপালের বিভিন্ন শাখা থেকে প্রতি মুহূর্তে খোঁজখবর নিচ্ছে। যদিও, উৎপাদন এখনও স্বাভাবিক রয়েছে, তবুও কাঁচামাল সরবরাহ ও পণ্য পরিবহণের ক্ষেত্রে বড়সড় অনিশ্চয়তার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
নেপালের পরিস্থিতির প্রভাব ভারতেও (Nepal)
এই পরিস্থিতিতে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে কলকাতার (Kolkata) আইটিসির সদর দফতরের কপালেও। নেপালের (Nepal) বাজারে আইটিসির বিভিন্ন পণ্যের বিপুল চাহিদা রয়েছে। রাজনৈতিক অচলাবস্থা দীর্ঘায়িত হলে রপ্তানিতে বড়সড় প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, যেহেতু নেপালে আইটিসির নিজস্ব কারখানা নেই, তাই তাদের ক্ষতির পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম হতে পারে। অন্যদিকে, টাটা মোটরস ও মারুতি সুজুকির মতো বড় গাড়ি সংস্থাগুলির ডিলারশিপে ইতিমধ্যেই বিক্রির গতি মন্থর হয়েছে। ফলে অটোমোবাইল খাতও চাপে পড়েছে।
আরও পড়ুন:- বেড়াতে যাওয়ার মরশুমে উত্তপ্ত নেপাল! পুজোর আগেই বুকিং বাতিলের হিড়িক, ক্ষতির মুখে পর্যটন
বাজার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামী ৪৮ ঘণ্টা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ রাজনৈতিক সংকট যদি আবারও রাস্তায় বিক্ষোভ, অবরোধ বা বনধের রূপ নেয়, তবে ভারতীয় সংস্থাগুলির সাপ্লাই চেন পুরোপুরি ধসে যেতে পারে। এতে শুধু নেপালের (Nepal) অভ্যন্তরীণ বাজার নয়, ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলির সঙ্গেও যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে, তার উপরও বিরূপ প্রভাব পড়বে।
বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা থেকে নেপালে (Nepal) রপ্তানি ও আমদানির প্রবাহ বহু সংস্থার উপর নির্ভরশীল। ইতিমধ্যেই কলকাতার ব্যবসায়িক মহলে সতর্কতা জারি হয়েছে। একাধিক সংস্থা তাদের কর্মীদের নেপালে পাঠানোর পরিকল্পনা স্থগিত করেছে। পাশাপাশি, অনলাইন মিটিং ও দূরবর্তী সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ চালানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:-সিএএ-তে আবেদন, হাতে নাগরিকত্বের শংসাপত্র পেলেন বাংলাদেশের প্রমথ রঞ্জন বিশ্বাস
ভারতীয় বাজার বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নেপালের (Nepal) রাজনৈতিক অস্থিরতা যদি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে না আসে, তবে এভারেস্টের দেশের অর্থনীতির পাশাপাশি ভারতের একাধিক সংস্থার উপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে বাধ্য। আপাতত সব সংস্থা “ওয়েট অ্যান্ড ওয়াচ” নীতি অবলম্বন করছে। তবে দীর্ঘমেয়াদে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে উঠতে পারে। অর্থনৈতিক মহলের মতে, প্রতিবেশী দেশের অশান্তি ভারতের বাণিজ্যের উপর এক বড়সড় ঝড় বইয়ে দিতে পারে।