বাংলাহান্ট ডেস্ক:- আর মাত্র ১৩ বছরের মধ্যে ভারতীয় অর্থনীতি (Indian Economy) বিশ্বের ২য় স্থানে চলে আসবে। মার্কিন প্রশাসনের আরোপ করা নতুন শুল্কের কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা ও অস্থিরতার আবহ তৈরি হয়েছে। বিশেষত রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল আমদানির ক্ষেত্রে আমেরিকা ৫০ শতাংশ শুল্ক বসিয়েছে, যা ভারতের অর্থনীতিকে সরাসরি প্রভাবিত করতে পারে। এর মধ্যে ২৫ শতাংশ বেসলাইন শুল্ক এবং অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ জরিমানা ধার্য হয়েছে। তবে এই অস্থির পরিস্থিতির মধ্যেই ভারতের জন্য এসেছে আশার আলো।
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি ভারত (Indian Economy)
বেসরকারি সংস্থা EY-এর সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী ২০৩৮ সালের মধ্যেই ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হবে। ক্রয়ক্ষমতার ভিত্তিতে ভারতের জিডিপি পৌঁছে যাবে ৩৪.২ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে। এই অনুমান আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (IMF) বিশ্লেষণের উপর ভিত্তি করে করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:-রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত আসলে “মোদীর যুদ্ধ”, অদ্ভুত যুক্তি দিয়ে বুঝিয়ে দিলেন ট্রাম্পের সচিব
ভারতের শক্তি: জনসংখ্যা ও সঞ্চয়, EY জানাচ্ছে, ভারতের সবচেয়ে বড় শক্তি হল এর জনসংখ্যা। ২০২৫ সালে যেখানে গড় বয়স মাত্র ২৮.৮ বছর, সেখানে বিশাল কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে সহায়ক হবে। পাশাপাশি ভারতের সঞ্চয় হার বিশ্বে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। আর্থিক কাঠামোতেও ইতিবাচক পরিবর্তন হচ্ছে—সরকারি ঋণ ও জিডিপির অনুপাত ২০২৪ সালের ৮১.৩ শতাংশ থেকে ২০৩০ সালে কমে হবে ৭৫.৮ শতাংশ। এর বিপরীতে বিশ্বের অন্য বড় অর্থনীতিগুলির ঋণের পরিমাণ বেড়েই চলেছে।
চিন, আমেরিকা ও জাপানের অবস্থা, প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে পিপিপি ভিত্তিতে চিন ৪২.২ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের অর্থনীতি নিয়ে শীর্ষে থাকবে। তবে তাদের জন্য প্রধান চ্যালেঞ্জ হল বয়স্ক জনসংখ্যা ও ক্রমবর্ধমান ঋণের চাপ। আমেরিকা শক্তিশালী হলেও তার ঋণের পরিমাণ জিডিপির তুলনায় প্রায় ১২০ শতাংশ। জাপানও একই সমস্যায় জর্জরিত। তুলনায় ভারত এগিয়ে রয়েছে যুবশক্তি, আভ্যন্তরীণ চাহিদা এবং ভারসাম্যপূর্ণ ঋণ-জিডিপি অনুপাতের কারণে।
আরও পড়ুন:- আমেরিকায় কড়া নিয়ম আনল ট্রাম্প প্রশাসন! চিন্তা বাড়ল লক্ষ লক্ষ ভারতীয় পড়ুয়ার
মার্কিন শুল্কে প্রভাব, বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আমেরিকার শুল্ক আরোপে ভারতের জিডিপি প্রবৃদ্ধি সর্বোচ্চ ০.৯ শতাংশ পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তবে EY আশাবাদী যে, শক্তিশালী আভ্যন্তরীণ চাহিদা, নতুন বাণিজ্য অংশীদারিত্ব ও রফতানির বিকল্প বাজার খুঁজে নেওয়ার মাধ্যমে ক্ষতি সীমিত হয়ে ০.১ শতাংশে নেমে আসবে। অর্থাৎ, যুক্তরাষ্ট্রের চাপের মধ্যেও ভারতের দীর্ঘ মেয়াদী বৃদ্ধির গতি খুব একটা থমকে যাবে না।
সামগ্রিকভাবে বলা যায়, মার্কিন শুল্ক অস্থায়ী চাপ সৃষ্টি করলেও ভারতের অর্থনীতির কাঠামোগত শক্তি এবং যুবশক্তির উপর ভর করেই দেশ আগামী দশকে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ অর্থনৈতিক শক্তি হয়ে উঠতে চলেছে।