বাংলাহান্ট ডেস্ক : এবার হেগের আন্তর্জাতিক আদালতে বড় ধাক্কা খেল রাশিয়া। ইউক্রেনের আবেদনে আন্তর্জাতিক আইন আদালতে অনুষ্ঠিত ভোটে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট দিলেন ভারতীয় বিচারপতি দলভীর ভাণ্ডারিও। একই সঙ্গে অবিলম্বে হামলা বন্ধ করার নির্দেশ দিয়ে পুতিনের বিপক্ষেই রায় শুনিয়েছে আন্তর্জাতিক আদালত।
ভারতীয় বিচারপতি দলভীর ভাণ্ডারি বহুদিন ধরেই জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত আন্তর্জাতিক আইন আদালতের দায়িত্বে রয়েছেন। নিরপেক্ষ মতদানের জন্যই তিনি পরিচিত। এদিনের অনুষ্ঠিত এই ভোটাভুটিতে আন্তর্জাতিক আদালতের ১৩ জন বিচারপতিই ভোট দিয়েছেন রাশিয়ার বিপক্ষে। মাত্র ২ জন বিচারপতির সমর্থন পেয়েছেন পুতিন। এই ১৩ জনের মধ্যে ছিলেন দলভীর ভাণ্ডারিও। রাশিয়ার পক্ষে কথা বলেছেন রুশ বিচারপতি কিরিল গেভরজিয়ান এবং চীনা বিচারক সু হ্যানকিন।
জানেন কে এই দলভীর ভাণ্ডারি?
যোধপুরের বাসিন্দা এই বিচারপতি ২০১২ সালে প্রথম নির্বাচিত হন আন্তর্জাতিক আইন আদালতে বিচারক হিসেবে। ২০১৮ সাল পর্যন্ত প্রথম দফার মেয়াদের পর তাঁকেই আবার মনোনীত করে ভারত। পদ্মভূষণের মত ভারতের অন্যতম সবচেয়ে সম্মানীয় পুরষ্কারও রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। ২০০৫ সাল থেকে ২০১২ সাল অবধি ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের দায়িত্বেই ছিলেন তিনি। ২০১২ সালে অবসরগ্রহণের পর আন্তজার্তিক আইন আদালতের দায়িত্ব দেওয়া হয় তাঁকে। তারপর থেকে দীর্ঘ ১০ বছর সেখানেই দায়িত্ব সামলাচ্ছেন ভারতের অন্যতম সেরা এই বিচারপতি। তাঁর নিরপেক্ষ মত এবং বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক মহলে প্রভূত পরিচিত দলভীর ভাণ্ডারি।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ ইস্যুতে প্রথম থেকেই নিরপেক্ষ থেকেছে ভারত। এক মাস ধরে চলা যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে একাধিক বার আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভোটাভুটি হলেও প্রতিবারই তা এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। একদিনে রাশিয়া এবং আমেরিকা দুই মহা শক্তিধর দেশের সঙ্গেই ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, অন্যদিকে ঘাড়ের উপর চীনের নিশ্বাস দুই মিলিয়েই এই ইস্যুতে শ্যাম রাখি না কুল রাখি বিচারে মাঝামাঝি থাকতে চেয়েছে ভারত। নিরপেক্ষ থেকে মধ্যস্থতাতেই বিশ্বাস রেখেছে মোদী সরকার। এই প্রথম রাশিয়ার বিরুদ্ধে মুখ খুললেন কোনও ভারতীয় প্রতিনিধি। যা কিনা পুতিনের কাছে নিঃসন্দেহে এক বড় ধাক্কা। এই বিরুদ্ধাচারণের ঠিক কী কী প্রভাব পড়তে চলেছে ভারতে সেই উত্তর অবশ্য সময়ই দেবে।