বাংলা হান্ট ডেস্ক: ২০২৯ সালের মধ্যেই ভারতীয় নৌসেনার (Indian Navy) হাতে এসে যাবে চারটি রাফাল-মেরিন যুদ্ধবিমান—এমনই গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করলেন নৌসেনার প্রধান অ্যাডমিরাল দীনেশ কে ত্রিপাঠী। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, ফ্রান্সের সঙ্গে হওয়া প্রতিরক্ষা চুক্তির পর অত্যাধুনিক এই যুদ্ধবিমানগুলির সরবরাহ প্রক্রিয়া দ্রুত এগোচ্ছে। চলতি বছরের ২৮ এপ্রিল ভারত ও ফ্রান্সের মধ্যে রাফাল-মেরিন কেনার চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ভারত সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল, নৌসেনার জন্য ২৬টি রাফাল-মেরিন যুদ্ধবিমান কেনার জন্য প্রায় ৬৩,০০০ কোটি টাকার বিশাল চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। এই চুক্তির আওতায় থাকবে পাইলটদের প্রশিক্ষণ, সিমুলেটর সুবিধা, আধুনিক অস্ত্রভাণ্ডার, প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম এবং দীর্ঘমেয়াদি রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা। মোট ২৬টির মধ্যে ২২টি হবে এক আসন বিশিষ্ট এবং বাকি চারটি হবে দু’আসনের রাফাল-মেরিন।
আরও শক্তিশালী হতে চলেছে ভারতীয় নৌবাহিনী (Indian Navy):
অ্যাডমিরাল ত্রিপাঠী বার্ষিক সাংবাদিক বৈঠকে অপারেশন সিঁদুর নিয়েও গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেন। তাঁর দাবি, অপারেশন সিঁদুর চলাকালীন ভারতীয় নৌসেনা (Indian Navy) অত্যন্ত আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে বিভিন্ন রণতরী মোতায়েন করেছিল, যার জেরে পাকিস্তান নৌবাহিনী বাধ্য হয়ে নিজেদের বন্দর বা মাকরান উপকূলের কাছাকাছি অবস্থান নিতে বাধ্য হয়। ভারতীয় নৌসেনার কৌশলগত প্রস্তুতি এবং কঠোর অবস্থানের কারণে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে কোনও রকম হামলার সম্ভাবনা ছিল না বলেও জোর দিয়ে জানান তিনি।
আরও পড়ুন:৫০,০০০ টাকায় ব্যবসা শুরু করে এখন ৪,০০০ জনের কর্মসংস্থান! চমকে দেবে নীরজের সাফল্যের কাহিনি
অপারেশন সিঁদুরের প্রভাব কতটা গভীর ছিল, সেটাও ব্যাখ্যা করেন নৌসেনাপ্রধান (Indian Navy)। তাঁর কথায়, ভারতের সঙ্গে উত্তেজনার সময় পাকিস্তানের উপর অর্থনৈতিক চাপ বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছিল। সংঘাতের পরিস্থিতিতে অনেক বাণিজ্যিক জাহাজ পাকিস্তানে যাতায়াত বন্ধ করে দেয়। এর ফলে দেশের আমদানি-রপ্তানি ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পাকিস্তানে যাওয়ার জন্য জাহাজের বিমার খরচও হঠাৎ বেড়ে যায়, যা তাদের বাণিজ্য পরিচালনায় বড় ধরনের সমস্যা তৈরি করে। অ্যাডমিরাল ত্রিপাঠীর মতে, যদি সেই সময়ে আরও সংঘাত বাড়ত, তাহলে পাকিস্তানের অর্থনীতির উপর আরও ভয়াবহ প্রভাব পড়ত।
এই প্রেক্ষাপটে অপারেশন সিঁদুর নিয়ে ভারতীয় নৌসেনার (Indian Navy) অবস্থান যে এখনও কঠোর, তা স্পষ্ট করেছেন তিনি। তাঁর দাবি, এই অভিযান কোনওভাবেই শেষ হয়ে যায়নি; বরং দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার স্বার্থে এটি এখনও চলমান। পরিস্থিতি অনুযায়ী যেখানেই প্রয়োজন হবে, ভারতীয় নৌসেনা সেখানে অভিযান চালাতে প্রস্তুত—এমনই দৃঢ় বার্তা দিয়েছেন তিনি।

ভারত-ফ্রান্স প্রতিরক্ষা সহযোগিতার নতুন অধ্যায় হিসেবে রাফাল-মেরিন যুদ্ধবিমান কেনা ভারতীয় নৌসেনার (Indian Navy) শক্তিকে যে বহুগুণে বাড়িয়ে তুলবে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। শত্রু শক্তির উপর কৌশলগত নজরদারি, আকাশ-সমুদ্র সমন্বিত আক্রমণ সক্ষমতা এবং সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে রাফাল-মেরিন ভারতীয় নৌসেনার সামরিক শক্তিকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। অ্যাডমিরাল ত্রিপাঠীর বক্তব্যে স্পষ্ট—সমুদ্রসীমা রক্ষা থেকে শুরু করে যেকোনও জাতীয় নিরাপত্তার প্রয়োজনে ভারতীয় নৌসেনা সর্বদা প্রস্তুত এবং আগামিদিনে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠতেই চলেছে।












