বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাতে ট্রেনে যাত্রা মানেই এক বিশেষ অভিজ্ঞতা। কখনও কাজের প্রয়োজনে, কখনও নিছক বেড়াতে বেরোনোর আনন্দে রাতে ট্রেন যাত্রার প্রয়োজন হয়। কিন্তু জানেন কি রাতের ট্রেনযাত্রায় এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম রয়েছে, যা না মানলে বিপাকে পড়তে পারেন আপনি নিজে, এমনকি অন্য যাত্রীদেরও সমস্যায় হতে পারে। যাত্রীদের সুরক্ষা ও আরাম নিশ্চিত করতে এই নিয়মগুলি তৈরি করেছে ভারতীয় রেল (Indian Railways)। আসুন জেনে নিন নিয়মগুলি কি কি-
জোরে কথা বলা ও আওয়াজ নিয়ন্ত্রণ | Night Travel Rules in Indian Railway
রাতের ট্রেনযাত্রায় মোবাইলে জোরে কথা বলা, স্পিকার চালিয়ে গান বাজানো, বা এমন কোনও কাজ যা সহযাত্রীদের ঘুম বা শান্তিতে ব্যাঘাত ঘটায়, তা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ২০২২ সালে যাত্রীদের অসংখ্য অভিযোগের ভিত্তিতে রেলমন্ত্রক এই নিয়ম কার্যকর করে। এমনকি রেলের টিকিট পরীক্ষক, আরপিএফ ও অন্যান্য কর্মীদেরও এই নিয়ম মানতে বলা হয়েছে। তাঁদের কাজের সময়েও যাত্রীদের বিশ্রামে যেন ব্যাঘাত না ঘটে, সেই নির্দেশই দিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ।
মাঝের বার্থের নির্দিষ্ট সময়
রাত ১০টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত সময়টিকে ঘুমের সময় হিসেবে নির্ধারণ করেছে রেল। এই সময়ে সংরক্ষিত কামরার মিডল বার্থের যাত্রী তাঁর আসন তুলতে পারেন ঘুমানোর জন্য। অন্য যাত্রী এই সময়ে তাঁকে বাধা দিতে পারবেন না। আবার সকাল ৬টা বেজে গেলে, নীচের আসনের যাত্রীও মাঝের বার্থ নামিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করতে পারেন। একই নিয়ম প্রযোজ্য সাইড আপার বার্থের ক্ষেত্রেও।
আলোর ব্যবহারেও সতর্কতা
রাত ১০টার পর থেকে ট্রেনের কামরায় শুধুমাত্র ন্যূনতম বা হালকা আলো জ্বালানোর অনুমতি রয়েছে। কোনও যাত্রী ব্যক্তিগত প্রয়োজনে নিজের আলো জ্বালিয়ে রাখতে পারবেন না, কারণ তাতে সহযাত্রীদের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে।
খাবার অর্ডারের সময়সীমা
রাত ১০টার পর থেকে ট্রেনে প্যান্ট্রিকার থেকে নতুন করে খাবার অর্ডার দেওয়া যায় না। তবে আগে থেকে অর্ডার করা খাবার সরবরাহ করতে পারেন প্যান্ট্রিকার কর্মীরা। রাতের ট্রেনে উঠলে, সকালের খাবারের জন্য আগাম অর্ডার দিয়ে রাখা যেতে পারে বলে জানানো হয়েছে।
টিকিট পরীক্ষার নিয়ম
রাত ১০টা থেকে সকাল ৬টার মধ্যে সাধারণভাবে টিকিট পরীক্ষক (TTE) টিকিট পরীক্ষা করেন না। তবে যদি মাঝরাতে নতুন যাত্রী ট্রেনে ওঠেন, সে ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য নয়। আবার কোনও ট্রেন যদি নির্দিষ্ট স্টেশন থেকে রাত ১০টার পর ছাড়ে, তখন সেই সময়েও টিকিট পরীক্ষক নিজের দায়িত্ব পালন করতে পারেন।

রাতের ট্রেনযাত্রা যতই স্বস্তিদায়ক হোক, নিয়ম মানা যে যাত্রীদের কর্তব্য, তা মনে করিয়ে দিচ্ছে ভারতীয় রেল (Indian Railways)। যাত্রীদের সম্মিলিত সচেতনতাই পারে এই ভ্রমণকে আরও নিরাপদ ও আরামদায়ক করতে।












