বাংলা হান্ট ডেস্ক: ইতিমধ্যেই রাশিয়া ও ইউক্রেনের মাঝে চলা ভয়াবহ যুদ্ধ প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে চলছে। তবুও, যুদ্ধ শেষের এখনও কোনো লক্ষ্মণ দেখা যাচ্ছেনা। এমতাবস্থায়, বিধ্বস্ত ইউক্রেনের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে পড়েছেন সমগ্র বিশ্ববাসী। পাশাপাশি, যত দিন যাচ্ছে, ইউক্রেনের সেনাবাহিনীতে যোগদানকারী বিদেশিদের সংখ্যাও তত বাড়ছে।
এবার সেই রেশ বজায় রেখেই, রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছেন ভারতের এক যুবকও। ইতিমধ্যেই তামিলনাড়ুর কোয়েম্বাটুর জেলার সৈনিকেশ রবিচন্দ্রন নামের ওই যুবকের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরালও হচ্ছে ঝড়ের গতিতে।
এই প্রসঙ্গে ইউক্রেনের সংবাদমাধ্যম দ্য কিভ ইন্ডিপেনডেন্ট (The Kyiv Independent) টুইট করে দাবি করেছে যে, ভারতও সেই দেশগুলির মধ্যে রয়েছে যাদের বাসিন্দারা সেখানে সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছে। পাশাপাশি, একটি ছবি শেয়ার করে জানানো হয়েছে যে, “বিদেশিদের প্রথম দলটি ইউক্রেনের স্বেচ্ছাসেবী সামরিক বাহিনীর ইন্টারন্যাশনাল লিজিয়নে যোগ দিয়েছে এবং কিয়েভের বাইরে ফ্রন্ট নিয়েছে।”
এছাড়াও, কিয়েভ ইন্ডিপেনডেন্ট ইউক্রেনীয় বাহিনীর উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে যে, “ইউক্রেনীয় স্থল বাহিনীর মতে, স্বেচ্ছাসেবকরা আমেরিকা, ইংল্যান্ড, সুইডেন, লিথুয়ানিয়া, মেক্সিকো এবং ভারত থেকে এসেছেন।”
এদিকে, ২১ বছর বয়সী সৈনিকেশ রবিচন্দ্রনের ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীতে যোগদানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোয়েম্বাটোরে বসবাসকারী তাঁর বাবা-মাও। মিডিয়া রিপোর্টের পর, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তাঁর বাবা-মায়ের সাথে যোগাযোগ করেছিলেন। সেখানেই তাঁরা জানিয়েছেন যে, সৈনিকেশ ২০১৮ সালে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগদানের জন্য একটি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। যদিও তিনি সেখানে ব্যর্থ হন। এরপর তিনি পড়াশোনার জন্য ইউক্রেনে যান এবং খারকিভের ন্যাশনাল অ্যারোস্পেস ইউনিভার্সিটিতে (National Aerospace University in Kharkiv) ভর্তি হন।
পাশাপাশি, সৈনিকেশের বাবা-মা আরও জানিয়েছেন যে, ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তাঁদের। তবে ইউক্রেনের ভারতীয় দূতাবাসের সৌজন্যে তাঁকে খুঁজে পাওয়া যায়। যদিও, তারপর সৈনিকেশ তাঁদের জানান যে, তিনি ইউক্রেনের সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছেন। পাশাপাশি, নিজের ইচ্ছেতেই এই সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছেন বলেও জানিয়ে দেন তিনি।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী সারা বিশ্বের কাছে সাহায্যের আবেদন করেছে। পাশাপাশি তারা সরাসরি যুদ্ধের জন্য সেনাবাহিনীতে যোগদানের প্রস্তাব দিয়েছে এবং আন্তর্জাতিক সেনাবাহিনী গঠনের ঘোষণাও করেছে। বিদেশিদের নিয়ে গঠিত এই বাহিনীর নাম দেওয়া হয়েছে ইন্টারন্যাশনাল লিজিয়ন।