বাংলাহান্ট ডেস্ক: দেশের প্রথম আদিবাসী ডিজিটাল মিউজিয়ামের (Tribal Museum) পর্দা উঠছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাত ধরে। ছত্তিশগড়ের নব রায়পুর অটল নগরে তৈরি হওয়া এই মিউজিয়াম আদিবাসী স্বাধীনতা সংগ্রামীদের বীরত্ব, রক্ত, ত্যাগ ও সংগ্রামের ইতিহাসকে নতুন করে সামনে আনবে। শহিদ বীর নারায়ণ সিং-এর নামে উৎসর্গ করা এই মিউজিয়াম দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে উপজাতি সমাজের অবদানকে স্মরণ করার এক ঐতিহাসিক উদ্যোগ।
ছত্তিশগড়ে দেশের প্রথম আদিবাসী ডিজিটাল মিউজিয়াম (Tribal Museum):
আজ ছত্তিশগড় সফরে পৌঁছে প্রধানমন্ত্রী প্রথমেই শহিদ বীর নারায়ণ সিং মেমোরিয়ালে যাবেন। ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করা ওই মহান স্বাধীনতা সংগ্রামী ছিলেন ছত্তিশগড়ের প্রথম শহিদ। তাঁর স্মৃতিকেই কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে এই সম্পূর্ণ ডিজিটাল মিউজিয়াম (Tribal Museum)। প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০ একর জমির উপরে নির্মিত এই প্রকল্পে ইতিহাস, প্রযুক্তি এবং সংস্কৃতির অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটেছে।
এই মিউজিয়ামে (Tribal Museum) ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে আদিবাসী সমাজের বিভিন্ন বিদ্রোহ ও আন্দোলনকে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। হালবা বিদ্রোহ, সরগুজা বিপ্লব, ভোপালপতনম আন্দোলন, পারালকোট ও তারাপুরের সংগ্রাম, কোই ও মেরিয়া আন্দোলন, রানি চাউরি বিদ্রোহ, ভূমকাল আন্দোলন—আদিবাসী স্বাধিকার ও স্বদেশের জন্য এই সব আন্দোলনের ইতিহাস দর্শকদের সামনে জীবন্ত হয়ে উঠবে ডিজিটাল ডিসপ্লে, প্রজেকশন ম্যাপিং, ভার্চুয়াল গ্যালারি ও সাউন্ড-লাইট ইন্টার্যাক্টিভ শোয়ের মাধ্যমে।
মিউজিয়ামে (Tribal Museum) প্রবেশ করতেই দর্শকদের স্বাগত জানাবে সরগুজা শিল্পীদের তৈরি আদিবাসী কাঠের নকশা। শাল ও মহুয়া গাছের বিশাল রেপ্লিকা, যার প্রতিটি পাতায় বোনা রয়েছে বিপ্লবের গল্প। রয়েছে বিরসা মুণ্ডার মূর্তি, যা এই সংগ্রামের প্রতীক হয়ে দাঁড়াবে। শুধু ইতিহাস নয়, এখানেই থাকবে সেলফি পয়েন্ট, যেখানে বিশেষ শিল্পকর্ম ও সাংস্কৃতিক চিত্রায়ণের মাধ্যমে আদিবাসী পরম্পরাকে তুলে ধরা হয়েছে।

মিউজিয়ামে (Tribal Museum) বিশেষভাবে সক্ষম এবং প্রবীণ নাগরিকদের জন্য আলাদা প্রবেশ ও চলাচলের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণু দেও সাই জানিয়েছেন, এই ডিজিটাল মিউজিয়াম আদিবাসী সংস্কৃতি ও বীরগাথাকে শুধু দেশের নয়, বিশ্বের সামনে তুলে ধরবে। সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ছত্তিশগড়ের প্রখ্যাত পণ্ডবাণী শিল্পী পদ্মবিভূষণ তীজন বাইয়ের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাঁর স্বাস্থ্যের খোঁজ নেন। পাশাপাশি পদ্মভূষণ প্রাপ্ত সাহিত্যিক বিনোদ কুমারের সঙ্গেও আলোচনা করেন তিনি।
একদিকে দেশ যখন প্রযুক্তির শক্তিতে এগিয়ে চলেছে, অন্যদিকে এই মিউজিয়ামের (Tribal Museum) মাধ্যমে ভারত নিজের শিকড়, ইতিহাস ও বীরত্বের কীর্তিকে নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরার আরও এক দৃঢ় পদক্ষেপ নিল। আদিবাসী স্বাধীনতা সংগ্রামের যে অধ্যায় বহু সময়েই উপেক্ষিত হয়েছে, আজ সেই ইতিহাসের আলোই ভারত দেখছে আরও উজ্জ্বলভাবে।













