বাংলা হান্ট ডেস্ক: বিগত বেশ কয়েক বছর ধরেই চিন (China) বারংবার অরুণাচল প্রদেশের (Arunachal Pradesh) নাম বদল করেছে। এদিকে, চিনের এই নাম বদলানোর প্রচেষ্টাকে ভারতের (India) পক্ষ থেকে প্রতিবারই নস্যাৎ করে দেওয়া হয়। কয়েকদিন আগেই এই প্রসঙ্গে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর স্পষ্ট জানিয়েছিলেন যে, “নাম বদলে ফেললেই তো আর কোনো জায়গা অন্য কোনো দেশের দখলে চলে যায় না।” এমতাবস্থায়, এবার ভারত সরকারের তরফে পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেওয়ার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এবার ভারত সরকার চিনের তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের দুই ডজনেরও বেশি জায়গার নাম পরিবর্তন করতে চলেছে।
জানিয়ে রাখি যে, সংশ্লিষ্ট অঞ্চলটিকে চিন “জাংনান” বা “দক্ষিণ তিব্বত” হিসেবে বিবেচিত করে। এমতাবস্থায়, সম্প্রতি “দ্য ডিপলোম্যাট” পোর্টাল ভারতীয় সেনা সূত্রকে উদ্ধৃত করে এই বিষয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। যেটি ইতিমধ্যেই উঠে এসেছে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। ওই রিপোর্টে দক্ষিণ তিব্বতের একাধিক জায়গার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। আর সেই জায়গাগুলিরই নতুন নাম ঘোষণা করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত। এমতাবস্থায়, অনুমান করা হচ্ছে যে, সরকার গঠনের সামগ্রিক প্রক্রিয়া মিটে যাওয়ার পরেই এই নতুন নাম ঘোষণা করা হতে পারে। পাশাপাশি এটাও জানা গিয়েছে যে, ভারতীয় সেনাবাহিনীর “তথ্য যুদ্ধ বিভাগ” এই নাম পরিবর্তনের বিষয়টির দিকে নজর রাখছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, তথ্য যুদ্ধ বিভাগের তরফে চিন অবৈধভাবে যে অরুণাচল প্রদেশের একাধিক জায়গার নাম বদলানোর চেষ্টা করছে তা প্রমাণ করার জন্য কলকাতার এশিয়াটিক সোসাইটির মতো প্রতিষ্ঠানগুলির সহযোগিতায় ঐতিহাসিক গবেষণা চালানো হয়েছে। শুধু তাই নয়, সংশ্লিষ্ট অঞ্চলগুলি যে ভারতেরই অন্তর্ভুক্ত তার পরিপ্রেক্ষিতে ঐতিহাসিক প্রমাণও সংগ্রহ করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে, সামরিক বাহিনীর তরফে তিব্বতের ৩০ টিরও বেশি জায়গার একটি তালিকা তৈরি করা হয়। প্রাথমিকভাবে, এই জায়গাগুলিরই নাম পরিবর্তিত হবে বলে ঠিক করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: মন্ত্রীরা বুঝে নিচ্ছেন দায়িত্ব! নিজের কাছে কোন কোন মন্ত্রক রাখলেন প্রধানমন্ত্রী? রইল তালিকা
এদিকে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, তিব্বতের ওই পরিবর্তিত নামের জায়গাগুলির তালিকা সংবাদমাধ্যমে শীঘ্রই প্রকাশ করা হতে পারে। পাশাপাশি, সামগ্রিক বিষয়টির পরিপ্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বৃহৎ প্রচার চালানো হবে। এই প্রসঙ্গে সেনাবাহিনীর তরফে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, প্রমাণের ওপর ভর করে সংশ্লিষ্ট স্থানগুলির ঐতিহাসিক গুরুত্বকে পুনরুদ্ধার করার পাশাপাশি স্বীকৃতি দেওয়াই এই উদ্যোগের প্রধান লক্ষ্য।
আরও পড়ুন: অদ্ভুত যুদ্ধ! বোম-মিসাইল ছেড়ে শুরু বেলুন নিয়ে আক্রমণ কিম জং উনের, পাল্টা জবাব দক্ষিণ কোরিয়ার
যদিও, এই বিরাট পদক্ষেপ যে বারংবার অরুণাচলের নাম পরিবর্তনের ক্ষেত্রে চিনের প্রচেষ্টার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের যোগ্য জবাব, সেটা বলাই বাহুল্য। মূলত, অরুণাচল প্রদেশ থেকে শুরু করে চিন সীমান্তের বেশ কয়েকটি অঞ্চল নিয়ে বেজিংয়ের দাবির পাল্টা জবাব দিতে চাইছে নয়া দিল্লি। এমতাবস্থায়, কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, ভারতের এহেন পদক্ষেপের প্রভাব প্রতিশোধমূলক প্রতিক্রিয়ার বাইরেও বৃহত্তর ক্ষেত্রে পরিলক্ষিত হবে। শুধু তাই নয়, ভারতের এই পদক্ষেপের পরিপ্রেক্ষিতে তিব্বতে ফের আলোচনা শুরু হতে পারে বলেও অনুমান করা হচ্ছে। এছাড়াও, এর পরিপ্রেক্ষিতে চিন-ভারত বিরোধের সম্ভাবনা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।