বাংলাহান্ট ডেস্কঃ দেশে হু হু করে বাড়তে থাকা করোনা সংক্রমণের মধ্যে বেঙ্গালুরুর (Bengaluru) এক অমানবিক ঘটনায় বাকী দেশবাসীরা আরও আতঙ্কিত হয়ে উঠেছেন। একজন করোনা যোদ্ধার সাথেই যদি এরকম অপ্রতিকর ঘটনা ঘটে, তবে সাধারণ মানুষের পরিণতি কি হতে চলেছে?
করোনা যোদ্ধা ডঃ মঞ্জুনাথ
রামনগর জেলার প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে করোনা রোগীদের সেবায় নিজের জীবন উতসর্গ করেছিলেন ডঃ মঞ্জুনাথ (Dr Manjunath)। বছর পঞ্চাশের এই করোনা যোদ্ধা নিজের জীবনের তোয়াক্কা না করে দিন রাত করোনা রোগীদের সেবা করে গেছেন। কিছুদিন আগেই তাঁর বাবা করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এমনকি তাঁর স্ত্রী এবং পুত্রও করোনা পজেটিভ।
করোনা আক্রান্ত করোনা যোদ্ধা
এই করোনা যোদ্ধা চিকিতসারত অবস্থায় নিজের শারীরিক অবস্থার অবন্নতির সন্দেহে করোনা পরীক্ষা করান। কিন্তু রিপোর্ট আসার আগেই তাঁর শারীরিক অবস্থা আরও আশঙ্কাজনক হয়ে পরে। তৎক্ষণাৎ তাঁর পরিবারের লোকজন তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করার জন্য নিয়ে যান। কিন্তু সেখানে গিয়ে আরও সমস্যায় পড়েন তারা। করোনা রিপোর্ট না থাকায়, কোন হাসপাতালই এই করোনা যোদ্ধাকে ভর্তি নিতে চায় না।
ফেরাল হাসপাতাল
বেড নেই, ভেন্টিলেটর নেই, এইসব অজুহাত দেখিয়ে তিনটি হাসপাতাল থেকে তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। শেষে একটি হাসপাতালে এই দুর্ভাগা করোনা যোদ্ধাকে ভর্তি করা হলেও, তাঁর অবস্থা ক্রমশ অবন্নতি ঘটতে থাকে। সেইসময় তাঁর পরিবার ঠিক করেন তাঁকে বিএমসিআরআই-তে ভর্তি করবেন। কিন্তু তাঁর ফুসুফস সংকুচিত হওয়ার কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে শুরু করে। তখন ইমিডিয়েটলি একজন সাইকোথেরাপিস্টের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। কিন্তু করোনা সংক্রমণের ভয়ে সকলে নাকচ করে দিলে, শেষ একজন বেসরকারি সাইকোথেরাপিস্ট পিপিই পরে তাঁর চিকিৎসা করতে আসেন।
শেষ রক্ষা হল না
ভেন্টিলেটরে রাখা সত্ত্বেও শেষ রক্ষা হল না ডঃ মঞ্জুনাথের। বিএমসিআরআই-তে থেরাপি শুরু হবার আগেই করোনা যুদ্ধে হেরে গেলেন স্বয়ং করোনা যোদ্ধাই। তাঁর মৃত্যুতে তাঁর শ্যালক পেশায় চিকিৎসক নাগেন্দ্র ক্ষোভ উগ্রে দিয়ে বলেন, ‘আজকে আমারা জামাইবাবু একজন চিকিৎসক হওয়া সত্ত্বেও তাঁর এই করুন পরিণতি হল। সঠিক সময়ে আমরা একটাও বেড পেলাম না’।