বাংলা হান্ট ডেস্ক : পশ্চিমবঙ্গের (West Bengal) সমুদ্র সৈকত (Sea Beach) বলতে যে নামটা মাথায় আসবে তা হল দীঘা (Digha)। বাঙলার মানুষের পাশাপাশি দেশ বিদেশের বহু মানুষের কাছেই অত্যন্ত জনপ্রিয় এই জায়গা। দীঘা মূলত জনপ্রিয়তা লাভ করেছে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবেই। নিত্যদিনই হাজার হাজার পর্যটক ভিড় জমায় এখানে। তবে দীঘা যে শুধু পর্যটন কেন্দ্রের জন্যই বিখ্যাত এমনটা নয়, দীঘা হল উত্তর-পূর্ব ভারতের সবচেয়ে বড় মৎস্য নিলাম কেন্দ্র (Fish Auction Centre)।
আজ থেকে বছর তিনেক আগেই দীঘার মোহনায় মৎস্য নিলাম কেন্দ্র গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছিল। জানা যাচ্ছে ‘বেনফিস’ সংস্থাটি এই প্রোজেক্টের কারিগরি তত্বাবধান করছে। আর্থিক সহায়তা করবে মৎস্য দফতর। এদিকে কাঁথির শৌলা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের নতুন জেটি তৈরি হয়েছে তৈরি হয়েছে মৎস্য দফতর ও বেনফিসের উদ্যোগে। তারসাথে তৈরি হয়েছে একটি বরফ কল। এদিকে নজর দেওয়া হয়েছে জুনপুটের শুঁটকি প্রসেসিং কেন্দ্রকেও।
সূত্রের খবর, দীঘার এই মৎস্য নিলাম কেন্দ্রকে আরও উন্নত করে তুলতে প্রায় ১২ কোটি টাকার কাছাকাছি খরচ হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ৬ কোটি টাকার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে বলে খবর। উল্লেখ্য, দীঘা মোহনায় থাকা উত্তর-পূর্ব ভারতের সবচেয়ে বড় এই মৎস্য নিলাম কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে সামুদ্রিক মাছ রপ্তানি করার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন জায়গাতেও রপ্তানি করা হয়। বিদেশে মাছ রফতানির মাধ্যমে আসে বৈদেশিক মুদ্রাও।
তবে এতদিন যে নিলাম কেন্দ্রটি ছিল তা বহু পুরোনো। আড়তগুলি স্থায়ী ছাউনির অভাবে দীর্ঘদিন ধরেই সমস্যায় ভুগছিল। মাছ ব্যবসায়ীরা বিষয়টা নিয়ে অভিযোগ-ও জানিয়েছিলেন। অভিযোগ ছিল, বৃষ্টি হলেই নাকি জল জমে যায়। স্থায়ী ছাউনির অভাবে খোলা জায়গাতেই মাছ নিলাম হয়। আর সেই কারণেই বর্তমান নিলাম কেন্দ্র থেকে কিছুটা এগিয়ে সমুদ্রের গা ঘেঁষে মাছের নতুন নিলাম কেন্দ্র তৈরি হচ্ছে।
এর আগে ২০১৮ সালে দীঘা সফরে গিয়ে একটি আন্তর্জাতিক মানের মৎস্য নিলাম কেন্দ্রের শিলান্যাস করে গেছিলেন। জানানো হয়েছিল, মৎস্য ব্যবসায়ীদের অভিযোগের কথা মাথায় রেখেই কাজ শুরু হয়েছে। বিপুল পরিমাণ এই টাকা খরচ করে এখানে মোট ২০০ টি স্টল তৈরি করা হবে। যারমধ্যে ১৮০ টি স্টল থাকবে মাছ সংরক্ষণের জন্য এবং বাকি ২০টি স্টল থাকবে প্যাকেজিংয়ের জন্য।
পাশাপাশি খবর মিলেছে, মাছ নিলামের পুরো প্রক্রিয়া ম্যানুয়াল পদ্ধতি ব্যবহার না করে সবটাই হবে E পদ্ধতিতে। পর্যাপ্ত পরিমাণ জলের জোগান দেওয়ার জন্য তৈরি করা হচ্ছে জলাধার। এছাড়াও তৈরি হচ্ছে হিমঘর সহ অন্যান্য পরিকাঠামো। এই বিষয়ে দীঘা ফিশারমেন অ্যান্ড ফিশ ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শ্যামসুন্দর দাস জানান, ‘নিলামকেন্দ্রটি গড়ে উঠলে মৎস্যজীবী, আড়তদার ও মৎস্য ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের সমস্যার সমাধান হবে। খুব দ্রুত কাজ চলছে। আশা করা যায় কয়েকমাসের মধ্যে সম্পূর্ণ হবে সমস্ত কাজ’।