ভারত-আমেরিকা সম্পর্কে টানাপোড়েন কাটিয়ে বরফ গলার ইঙ্গিত! বিদেশ মন্ত্রকের মন্তব্যে জল্পনা

Published on:

Published on:

বাংলাহান্ট ডেস্ক:- ভারত-আমেরিকা (India-America) সম্পর্ক নিয়ে ফের নতুন করে আশার আলো দেখা দিয়েছে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে দুই দেশের মধ্যে ‘শুল্কযুদ্ধ’কে কেন্দ্র করে টানাপোড়েন চরমে পৌঁছেছিল। রাশিয়ার (Russia) কাছ থেকে তেল আমদানি করার কারণে ভারতকে চড়া শুল্কে কষাঘাত করেছে আমেরিকা (America)। এর ফলে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক ও বাণিজ্যিক সমীকরণ নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন উঠেছিল। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দুই রাষ্ট্রনায়কের বক্তব্যে নতুন সম্ভাবনার ইঙ্গিত মিলছে।

ভারত-আমেরিকার সম্পর্কের নতুন মোড় (India-America)

শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump) নিজের সোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশাল-এ লেখেন, “মনে হচ্ছে রাশিয়া ও ভারতকে অন্ধকার চিনের কাছে হারিয়ে ফেলেছি।” তাঁর এই মন্তব্য ঘিরে কূটনৈতিক অন্দরে নানা জল্পনা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু মাত্র একদিনের মধ্যেই নিজের অবস্থান থেকে পুরোপুরি সরে আসেন ট্রাম্প। নতুন করে তিনি দাবি করেন, “মোদি এখনও আমার বন্ধুই। তবে আমি হতাশ।” মার্কিন প্রেসিডেন্টের এইরকম মন্তব্যে স্বাভাবিকভাবেই আলোড়ন পড়ে যায়।

আরও পড়ুন:- প্রায় ২০০০ টি গ্রাম জলের তলায়, বন্যায় প্রাণ হারিয়েছে অসংখ্য মানুষ, মঙ্গলবার পাঞ্জাবে পরিদর্শনে প্রধানমন্ত্রী

এই পরিস্থিতিতেই মুখ খোলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (India-America) । এক্স হ্যান্ডলে তিনি লেখেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অনুভূতি এবং আমাদের (India-America) সম্পর্কের ইতিবাচক মূল্যায়নকে গভীরভাবে উপলব্ধি করছি এবং সম্পূর্ণরূপে সহমত। ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে অত্যন্ত ইতিবাচক ও ভবিষ্যৎমুখী বিস্তৃত এবং বৈশ্বিক কৌশলগত অংশীদারিত্ব রয়েছে।” মোদির এই বার্তা সম্পর্কের বরফ গলানোরই ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।

পরের দিনই বিষয়টি আরও জোরদার করেন বিদেশমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর। তিনি বলেন, “মোদি আমেরিকার (India- America) সঙ্গে সম্পর্ককে অত্যন্ত গুরুত্ব দেন। তাঁর সঙ্গে ট্রাম্পের ব্যক্তিগত সমীকরণ সবসময়েই খুব ভালো।” যদিও এর বাইরে বিস্তারিত কিছু বলতে চাননি জয়শঙ্কর, কিন্তু তাঁর বক্তব্যকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

Is India America relation turning a new chapter

আরও পড়ুন:- পাঁচ দশকে জন্ম-মৃত্যুহারে অস্বাভাবিক পরিবর্তন! দেশের জনসংখ্যা নিয়ে প্রকাশ্যে চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট

এদিকে সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প আবারও তাঁর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমার মনে হয় না আমরা ভারতকে (India-America) হারিয়ে ফেলেছি। তবে আমি খুব হতাশ, কারণ রাশিয়ার থেকে তেল কিনছে ভারত। আমি তাদের জানিয়েছি। এর জবাবে আমরা ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছি। এটা খুব বড় শুল্ক।” তাঁর এই বক্তব্যই মূলত সাম্প্রতিক টানাপোড়েনের কেন্দ্রবিন্দু। তবে মোদির ইতিবাচক সুর আর জয়শঙ্করের কূটনৈতিক বার্তা যে দুই দেশের সম্পর্কে নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে, তা নিয়েই জোর আলোচনা শুরু হয়েছে কূটনৈতিক অন্দরে। অনেকের মতে, বাণিজ্যিক দ্বন্দ্ব থাকলেও ব্যক্তিগত পর্যায়ে মোদি ও ট্রাম্পের সম্পর্ক ভালো থাকায় সেই সম্পর্কই দুই দেশের বন্ধুত্বকে আবারও গাঢ় করে তুলতে পারে।

তবে এখন প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি শুল্কযুদ্ধকে অতীত করে ফের বরফ গলতে চলেছে ভারত-মার্কিন সম্পর্কের জমাট বাঁধা বরফ? আপাতত রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক মহল সেই দিকেই তাকিয়ে রয়েছে।