বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ফুল বদলের আশঙ্কায় ফের একবার সরগরম রাজ্য রাজনীতি। একুশের নির্বাচনের আগে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাবার ঢল পড়ে গিয়েছিল বেশ কিছু রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে। অনেকেই প্রকাশ্যে সমালোচনা করে জানিয়েছিলেন, দলে থেকে কাজ করতে পারছেন না তারা। নির্বাচন শেষ। বাংলায় ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন পূরণ হয়নি বিজেপির। বদলে ফের একবার, দুশোরও বেশি আসন নিয়ে ক্ষমতায় ফিরেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তারপর থেকেই ফের একবার মাথাচাড়া দিয়েছে দলবদলের আশঙ্কা।
এমনকি আজ বিকেলে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে বিজেপির অন্যতম বরিষ্ঠ নেতা মুকুল রায়ের। রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে পদ্ম ছেড়ে ফের ঘাসফুল শিবিরে যোগ দিতে পারেন মুকুল। গত কয়েকদিন ধরেই মুকুলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছিল বিজেপি শিবিরের। বিশেষত স্ত্রী অসুস্থ হওয়ার পর থেকেই আরো বেশি করে সামনে আসতে শুরু করে এই জল্পনা। কারণ একদিকে যেমন তার স্ত্রীকে দেখতে গিয়ে শুভ্রাংশুর সঙ্গে কথা বলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তেমনি অন্যদিকে দিলীপ ঘোষের ডাকা বৈঠকেও অনুপস্থিত থাকেন মুকুলও। তিনি জানান, এমন কোন বৈঠকের খবরই নাকি ছিল না তার কাছে। তারপর থেকেই এই ভাঙন আরো স্পষ্ট হয়েছে বলেই মত রাজনৈতিক কারবারিদের।
এখন ফের সামনে এলো এক নতুন জল্পনা। শুধু মুকুল রায় নন, মুকুল পদ্ম শিবির ছেড়ে তৃণমূলে ফিরলে তৃণমূলে ফিরতে পারেন প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সব্যসাচী দত্তও। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, নির্বাচনের পর থেকেই দলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন এই দুই নেতাই। সব্যসাচী যেমন বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে খাড়া করার মতো মুখ ছিলনা বিজেপির কাছে। সব সময় নেতিবাচক রাজনীতি করলে জেতা যায় না। তেমনি অন্যদিকে প্রকাশ্যে দলের সমালোচনা করেছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ও। কিছুদিন আগেই নিজের ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, সব সময় ৩৫৬ ধারার জুজু দেখালে মানুষ ভালোভাবে নেবে না।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বিজেপির তরফের সরাসরি এখনো শোকজ করা না হলেও ইতিমধ্যেই তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন বিজেপির শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান ডঃ সুভাষ সরকার। তবে অনুমান অনুযায়ী এই কয়েকদিনে রাজীব এবং সব্যসাচীর সঙ্গে দূরত্ব অনেকটাই বেড়েছে দলের। একের পর এক বৈঠকে একদিকে যেমন অনুপস্থিত থেকেছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় তেমনি অন্যদিকে সব্যসাচীকেও তেমন মুখ্য ভূমিকা গ্রহণ করতে দেখা যায়নি।
অনেকেই মনে করছেন, মুকুলের কারণেই তৃণমূল ছেড়েছিলেন সব্যসাচী। মুকুলকে শুরু থেকেই দাদা বলে মানেন তিনি। সেই কারণেই মুকুল দল বদল করলে ফুলবদল করতে পারেন সব্যসাচী-রাজীবও। এখন তৃণমূল কি তাদের দলে ফেরাবে, সেটাই হলো সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। ইতিমধ্যেই, ছেড়ে যাওয়া অনেকে তৃণমূলে ফিরতে চেয়ে চিঠি লিখেছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন, দীপেন্দু বিশ্বাস, সোনালী গুহ, সরলা মুর্মুর মত একাধিক পরিচিত নাম। তাদের নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নিতে দেখা যায়নি দলকে। এখন আগামীদিনের রাজীব সব্যসাচী ফিরতে চাইলে কি সিদ্ধান্ত নেয় দল সেদিকেই তাকিয়ে থাকবে সকলে।