“আমি ভারত এবং মোদীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ”, এবার লঘু হতে চলেছে শুল্কের বোঝা? ট্রাম্পের বয়ানে শুরু জল্পনা

Published on:

Published on:

বাংলাহান্ট ডেস্ক: ফের ভারত (India) নিয়ে বার্তা ট্রাম্পের। আমেরিকার (America) প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বর্তমানে ব্রিটেন সফরে রয়েছেন। এর মধ্যেই ভারত এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে (Narendra Modi) নিয়ে বড় মন্তব্য করলেন তিনি। ট্রাম্প জানিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক খুবই ঘনিষ্ঠ এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু। যদিও সম্প্রতি রাশিয়ার (Russia) সঙ্গে ভারতের তেলের ব্যবসা বন্ধ না হওয়ার কারণে আমেরিকা ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ ট্যারিফ বসিয়েছিল। এই সিদ্ধান্তের ফলে দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে নানা জল্পনা তৈরি হয়েছিল। অনেকেরই মনে হয়েছিল, হয়তো ওয়াশিংটন এবং নয়াদিল্লির কূটনৈতিক সম্পর্ক এবার কঠিন মোড় নেবে। কিন্তু ট্রাম্পের সর্বশেষ মন্তব্যে পরিস্থিতি খানিকটা স্পষ্ট হয়েছে।

ফের ভারত নিয়ে সুর নরম ট্রাম্পের (India)

ব্রিটেনে (Britain) সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে ট্রাম্প বলেন, ‘‘রাশিয়া থেকে শুধু ভারতই নয়, ইউরোপের (Europe) একাধিক দেশও তেল কিনছে। এর মানে এই নয় যে আমরা সবার বিরুদ্ধে। আমি ভারতের (India) কাছে খুবই ঘনিষ্ঠ এবং প্রধানমন্ত্রী মোদী আমার ভালো বন্ধু।’’ তিনি আরও জানান, মোদীর জন্মদিনে তিনি শুভেচ্ছা জানিয়েছেন এবং সম্প্রতি তাঁদের মধ্যে টেলিফোনে কথা হয়েছে। এর মাধ্যমে তিনি বার্তা দেন যে ভারত-আমেরিকার সম্পর্ক আগের মতোই সুদৃঢ় রয়েছে।

আরও পড়ুন: তুমুল বৃষ্টিতে ভেঙে পড়ে বাড়ি! উত্তরাখণ্ডে ধ্বংসস্তুপে ১৬ ঘন্টা আটকে থাকার পর জীবিত উদ্ধার যুবক

লন্ডনে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টার্মারের সঙ্গে যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে দাঁড়িয়ে ট্রাম্প বলেন, ভারতের (India) মতো চিনও আমেরিকাকে বড় অঙ্কের ট্যারিফ দিচ্ছে। তবে তিনি এখন অন্য কাজ নিয়ে ব্যস্ত। ট্রাম্প দাবি করেন, আমেরিকার লক্ষ্য দেশগুলোকে একত্রে রাখা, শত্রুতা নয়। তাঁর মতে, যদি আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম নেমে আসে, তবে রাশিয়া সহজেই সমঝোতায় রাজি হবে। সেই লক্ষ্যে আমেরিকার নীতি হচ্ছে চাপ সৃষ্টি করে দেশগুলোকে নিজেদের স্বার্থ অনুযায়ী পথে আনা।

ভারত (India) ও আমেরিকার মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে বাণিজ্যিক টানাপোড়েন বেড়ে গেলেও এখন আশার আলো দেখা যাচ্ছে। ট্রাম্পের মন্তব্যে যেমন উষ্ণতা ফিরেছে, তেমনি ভারতের তরফ থেকেও ইতিবাচক বার্তা পাওয়া গিয়েছে। বৃহস্পতিবার ভারতের প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ভি. অনন্ত নাগেশ্বরন জানান, ৩০ নভেম্বরের পর আমদানিকৃত কয়েকটি পণ্যের ওপর থেকে আরোপিত শুল্ক প্রত্যাহার করা হতে পারে। যদি সত্যিই আমেরিকা এই সিদ্ধান্ত নেয়, তবে দুই দেশের বাণিজ্য সম্পর্ক ফের স্বাভাবিক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

Is the tariff burden on India going to reduce?

আরও পড়ুন: ২ ঘন্টায় মুম্বাই থেকে আহমেদাবাদ! ২০২৭-এর কোন মাসের মধ্যে শুরু বুলেট ট্রেন চলাচল? জানালেন রেলমন্ত্রী

রাশিয়ার সঙ্গে তেল ব্যবসা নিয়ে মার্কিন প্রশাসনের আপত্তি নতুন নয়। ট্রাম্প আগেও একাধিকবার ভারতের (India) ওপর চাপ সৃষ্টি করেছেন যাতে নয়াদিল্লি মস্কোর সঙ্গে এ ধরনের লেনদেন বন্ধ করে। তবে ভারত বরাবরই নিজের কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের সদয় বার্তা ইঙ্গিত করছে যে আমেরিকা হয়তো চাপের পাশাপাশি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কও বজায় রাখতে চাইছে।

সব মিলিয়ে, কঠিন সময় পেরিয়ে ভারত (India)-আমেরিকার সম্পর্ক ফের নতুন মোড় নিতে চলেছে। একদিকে ট্যারিফের বোঝা, অন্যদিকে ব্যক্তিগত ও কূটনৈতিক উষ্ণতা—এই দুইয়ের সমন্বয়ে দুই দেশের ভবিষ্যৎ সম্পর্ক কোন পথে এগোবে, তা সময়ই বলবে।