বাংলাহান্ট ডেস্ক : আমাদের শরীর যে সব অণু এবং পরমাণু দিয়ে তৈরি তা এই মহাবিশ্ব থেকে এসেছে। এই কারণেই আমাদের মহাবিশ্ব আমাদের শরীরের উপর প্রভাব ফেলে। আমাদের বায়ুমণ্ডল, মহাকাশ, সৌরজগৎ, গ্যালাক্সি, এর বাইরের নীহারিকা এবং অসংখ্য গ্যালাক্সির মধ্যে এমন অনেক কিছু রয়েছে যা আমাদের শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। আজ আমরা আপনাকে এমন পাঁচটি উদাহরণ দেব যেটি দেখলে আপনারও মনে হবে আমাদের দেহের মিল রয়েছে মহাবিশ্বের বিভিন্ন অংশের সাথে ।
হিসাব অনুযায়ী বছরে প্রায় আড়াই লাখ বার বজ্রপাত হয়। এর কারণে প্রতি বছর প্রায় ২০০০ জন মানুষ মারাও যায়। কিন্তু আপনি যদি পতনশীল বজ্রপাতের দিকে তাকান তবে আপনার চোখের সূক্ষ্ম শিরাগুলির সাথে মিল খুঁজে পাবেন। এগুলোকে অপটিক স্নায়ু বলা হয়। সাধারণত, মানুষের চোখে ৭.৭ লক্ষ থেকে ১৭ লক্ষ অপটিক স্নায়ু থাকে যা দেখলে আপনার বজ্রপাতের কথা মনে পড়বে।
এছাড়াও, একটি তারার মৃত্যুর সঙ্গে কোষের জন্মের সময়ের মিল আছে। আকৃতি একই। ডাম্বেলের মতো দেখতে জিনিস দুটির দিকে ভালো করে খেয়াল করলে বুঝতে পারবেন নক্ষত্রের ভাঙন ও কোষের সৃষ্টি একই রকম দেখতে লাগে। আপনার দেহ প্রতিটি কোষের মিলনের মাধ্যমে গঠিত হয়। মানবদেহে ৩৭.৩ ট্ৰিলিয়ন কোষ রয়েছে।
DNA এর ডাবল হেলিকাল মডেল দেখতে ডাবল হেলিক্স নেবুলার মত। মহাবিশ্বের ডাবল হেলিক্স নীহারিকা ঠিক DNA এর মতই দেখতে। সম্পূর্ণ জেনেটিক্স ডিএনএ থেকে সঞ্চালিত হয়। জেনেটিক্সের কারণে আমাদের শরীর ও আচরণ ঠিক থাকে। মানবদেহে ২৩ জোড়া ক্রোমোজোম রয়েছে। যেগুলো একে অপরের সাথে সংযুক্ত।
এবার আপনি চোখের রেটিনার দিকে তাকান। চোখের কেন্দ্র এবং এর চারপাশের গঠন দেখুন… আপনি পৃথিবী থেকে ৭০০ আলোকবর্ষ দূরে হেলিক্স নেবুলার মতো একটি আকৃতি দেখতে পাবেন। ইউরোপিয়ান স্পেস অবজারভেটরির ভিস্তা টেলিস্কোপ প্রথমবারের মতো এই নীহারিকাটির ছবি তুলেছিল। এ ছাড়া এমন কতগুলো নীহারিকা আছে জানা নেই যেগুলো আপনার চোখের রেটিনার মতো দেখাবে।
এবার আপনি মস্তিষ্কের নিউরন কোষেকে লক্ষ্য করুন । অণুবীক্ষণ যন্ত্রে এগুলি মহাবিশ্বের কাঠামোর মতো দেখায়। ঠিক যেমন মহাবিশ্বে ছায়াপথের নেটওয়ার্ক ছড়িয়ে আছে। তারা বেতার তরঙ্গ, মাধ্যাকর্ষণ এবং অন্ধকার শক্তির মাধ্যমে সংযুক্ত। একইভাবে, আপনার মস্তিষ্কও নিউরনের সাথে সংযুক্ত। মানুষের মস্তিষ্কে ৮৬০ কোটি নিউরন রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। কিন্তু যে থ্রেডগুলি মহাবিশ্ব তৈরি করে তা গণনা করা সম্ভব হয়নি এখনও।