অপারেশন সিঁদুরের রেশ কাটেনি, ২০২৬-এ ফের ভারত-পাক সংঘর্ষের আশঙ্কা, সতর্ক করলেন মার্কিন বিশেষজ্ঞরা

Published on:

Published on:

Follow

বাংলাহান্ট ডেস্ক: বছরের মাঝামাঝি সময়ে ‘অপারেশন সিঁদুর’ চালিয়ে পাকিস্তানকে বড়সড় ধাক্কা দিয়েছিল ভারত (India-Pakistan)। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের ভারত–পাক সংঘর্ষের আশঙ্কার কথা উঠে এল আন্তর্জাতিক মহলে। মার্কিন থিঙ্ক ট্যাঙ্ক কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনস (সিএফআর) দাবি করেছে, ২০২৬ সালেও দুই দেশের মধ্যে সশস্ত্র সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মার্কিন বিদেশনীতি বিশেষজ্ঞদের মধ্যে সমীক্ষা চালিয়ে এই সম্ভাবনাকে তারা ‘মাঝারি পর্যায়ের ঝুঁকি’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। একই সঙ্গে জানানো হয়েছে, এমন সংঘর্ষ হলে তা মার্কিন স্বার্থের উপরও ‘মাঝারি ধরনের প্রভাব’ ফেলতে পারে।

২০২৬-এ ফের সংঘর্ষ বাঁধবে ভারত-পাকিস্তানের (India-Pakistan)?

সিএফআর তাদের রিপোর্টে চলতি বছরের এপ্রিল–মে মাসের ঘটনাপ্রবাহের দিকেই বিশেষভাবে নজর দিয়েছে। গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে লস্কর-ই-তৈবার ছায়া সংগঠন টিআরএফের চার জঙ্গি ২৬ জন নিরস্ত্র নাগরিককে হত্যা করে। সেই নৃশংস হামলার জবাবে ৭ মে ভোররাতে ‘অপারেশন সিঁদুর’ শুরু করে ভারত। পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের অন্তত ন’টি জঙ্গিঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এই অভিযানে বড়সড় ক্ষতি হয় জঙ্গি পরিকাঠামোর।

আরও পড়ুন:‘১৯৭১ ভুলে গেলে চলবে না’—উত্তরপূর্ব ভারত নিয়ে বাংলাদেশকে তীব্র বার্তা তেমজেন ইমনা আলংয়ের

ভারতের প্রত্যাঘাতের পর পালটা হামলা চালায় পাকিস্তান। সীমান্তবর্তী ভারতীয় রাজ্যগুলির জনবহুল এলাকা এবং সেনাঘাঁটিকে লক্ষ্য করে আক্রমণ শুরু করে তারা। তবে সেই হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি কার্যকর জবাব দেয় ভারতীয় সেনা। ভারতীয় অভিযানে পাকিস্তানের অন্তত ১১টি গুরুত্বপূর্ণ বায়ুসেনা ঘাঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সরকারি সূত্রের দাবি, এই সংঘর্ষে ১০০ জনের বেশি জঙ্গি এবং ৩৫ থেকে ৪০ জন পাক সেনা নিহত হয়। পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার নেওয়ার আগেই ইসলামাবাদের অনুরোধে সংঘর্ষবিরতিতে সম্মত হয় নয়াদিল্লি।

তবে সাম্প্রতিক মন্তব্যে ফের উত্তেজনা ছড়িয়েছে। পশ্চিমাঞ্চলীয় সেনার লেফটেন্যান্ট জেনারেল মনোজ কুমার কাটিয়ার ‘অপারেশন সিঁদুর ২.০’-র ইঙ্গিত দিতেই নড়েচড়ে বসেছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। পাক অধিকৃত কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা জুড়ে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, রাওয়ালকোট, কোটলি ও ভিম্বর সেক্টরে নতুন করে কাউন্টার আনম্যানড এরিয়াল সিস্টেম বা সি-ইউএএস বসানো হচ্ছে। এলওসি বরাবর ৩০টিরও বেশি অ্যান্টি-ড্রোন ইউনিট মোতায়েন করেছে পাকিস্তান।

Is there a risk of another India-Pakistan conflict in 2026?

আরও পড়ুন: নাম নেই ২০০২-এর লিস্টে, কবি জয় গোস্বামীকে শুনানিতে তলব কমিশনের

একই সঙ্গে নতুন ড্রোন ও বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার জন্য তুরস্ক ও চিনের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে ইসলামাবাদ। ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর সময় ভারতের আক্রমণে পাক ড্রোন ব্যবস্থার দুর্বলতা প্রকাশ্যে আসে। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি জোরদার করতে চাইছে তারা। এই পরিস্থিতিতে সিএফআর-এর মূল্যায়ন, ভারত–পাক সম্পর্ক ফের সংঘাতের পথে এগোলে তা শুধু দক্ষিণ এশিয়াই নয়, আন্তর্জাতিক কূটনীতিতেও নতুন করে অস্থিরতা তৈরি করতে পারে।