চলতি বছরে সম্পন্ন হবে গগনযানের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ! তার আগেই ISRO পেল বিরাট সাফল্য

Published on:

Published on:

isro-achieves-huge-success-before-the-gaganyaan-test-launch-srp

বাংলাহান্ট ডেস্ক:- মহাকাশে খুব শীঘ্রই মানুষ পাঠাতে চলেছে ভারত। হাতে আর খুব বেশি সময় নেই। চলতি ডিসেম্বরেই ‘গগনযান‘(Gaganyaan)-এর পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ। এই অভিযানের সাফল্যের দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল ইসরো (ISRO) । ২৪ অগস্ট সফলভাবে প্রথম ইন্টিগ্রেটেড এয়ার ড্রপ টেস্ট (IADT-01) সম্পন্ন করল ইসরো

আরও এক ধাপ এগোলগগনযান‘ (Gaganyaan)

রাশিয়া, আমেরিকা ও চিনের পর চতুর্থস্থানে নাম লিখিয়ে ইতিহাস গড়তে চলেছে ভারত (India)। মহাকাশে মানুষ পাঠাবে ভারত। কিন্তু মানুষ তো পাঠাবে সেখানে, তবে সেখান থেকে তাঁদের নিরাপদভাবে ফিরিয়ে আনা ঠিক কতটা সম্ভব তা নিয়ে বেশ সন্দেহ প্রকাশ করেছিল অনেকেই। এবার সেই সন্দেহও দূর করল ইসরো। রবিবার ২৪ শে অগস্ট ‘গগনযান‘ মিশনের প্যারাশুট-ভিত্তিক ডিসেলারেশন সিস্টেমের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়ার প্রদর্শনের জন্য প্রথম ইন্টিগ্রেটেড এয়ার ড্রপ টেস্ট  সফলভাবে সম্পন্ন করেছে। মূলত পরীক্ষাটি প্যারাশুট-ভিত্তিক ডিসেলারেশন সিস্টেমের কার্যকারিতা যাচাইয়ের জন্য পরিচালিত হয়। এই সিস্টেমের মাধ্যমে মহাকাশযানের ক্র মডিউল কক্ষপথ থেকে পৃথিবীতে ফেরার সময় গতি কমিয়ে নিরাপদ অবতরণ সম্ভব হবে। পরীক্ষার জন্য ভারতীয় বিমান বাহিনীর চিনুক হেলিকপ্টার ব্যবহার করে প্রায় ৪,০০০-৪,৫০০ কেজি ওজনের একটি ডামি ক্র মডিউল বঙ্গোপসাগরের উপরে ৪ কিলোমিটার উচ্চতা থেকে ফেলা হয়। ধাপে ধাপে প্যারাশুট খোলার ফলে মডিউলটি সফলভাবে সমুদ্রে নেমে আসে।

এই পরীক্ষাটি শুধুমাত্র ইসরোর নয়,বরং একাধিক সংস্থার যৌথ প্রচেষ্টার ফল। ভারতীয় বিমান বাহিনী, প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা, ভারতীয় নৌবাহিনী এমনকি ভারতীয় কোস্ট গার্ডও সক্রিয়ভাবে এতে অংশগ্রহণ করেছে। ‘গগনযান‘ প্রকল্পের লক্ষ্য তিনজন মহাকাশচারীকে ৪০০ কিলোমিটার উচ্চতায় নিম্ন পৃথিবী কক্ষপথে পাঠানো এবং তিন দিনের মিশন শেষে তাঁদের ভারতীয় জলসীমায় নিরাপদে ফিরিয়ে আনা। তাই প্যারাশুট-ভিত্তিক ডিসেলারেশন সিস্টেমের নির্ভরযোগ্যতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইসরো জানিয়েছে, এই সিস্টেমে মোট দশটি প্যারাশুট রয়েছে, যার মধ্যে তিনটি প্রধান প্যারাশুট ছাড়াও ড্রগ, পাইলট এবং অ্যাপেক্স কভার সেপারেশন প্যারাশুট অন্তর্ভুক্ত। পরীক্ষায় ইচ্ছাকৃতভাবে একটি প্রধান প্যারাশুট ব্যর্থ হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছিল। তবুও বাকি দুটি প্রধান প্যারাশুট মডিউলকে সফলভাবে নিরাপদে নামিয়ে আনে। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হলো, সিস্টেমটি অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য।

isro-achieves-huge-success-before-the-gaganyaan-test-launch-srp

আরও পড়ুন: আমেরিকার ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর বুধে! পরিস্থিতি মোকাবিলায় মঙ্গলবার বৈঠক প্রধানমন্ত্রীর দফতরে

ডিজাইন, প্রস্তুতি ও আবহাওয়াজনিত চ্যালেঞ্জ এই প্যারাশুট সিস্টেমের নকশা ও উন্নয়ন ইসরো এবং ডিআরডিওর যৌথ উদ্যোগে সম্পন্ন হয়েছেতিরুবনন্তপুরমের বিক্রম সারাভাই স্পেস সেন্টার (ভিএসএসসি) এই প্রকল্পের নেতৃত্ব দেয়। তারা প্যারাশুট মোতায়েনের সিমুলেশন, যান্ত্রিক ও বৈদ্যুতিক ইন্টিগ্রেশন এবং সিস্টেম ডিজাইনের কাজ করেছে। পরীক্ষাটি ইসরোর সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টার শ্রীহরিকোটা থেকে সূর্যোদয়ের সময় পরিচালিত হয়। তবে এটি একাধিকবার স্থগিত করতে হয়েছিল আবহাওয়ার কারণে। উত্তর আন্ধ্রপ্রদেশ ও দক্ষিণ ওড়িশা উপকূলে ঝড়বৃষ্টির কারণে পরিস্থিতি অনুকূল না থাকায় পরীক্ষার তারিখ পিছিয়ে গিয়েছিল। অবশেষে শনিবার সকালে অনুকূল পরিবেশ তৈরি হলে বহু প্রতীক্ষিত পরীক্ষা সম্পন্ন হয়

ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো) গগনযান মিশনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক স্পর্শ করল। এদিনের এই পরীক্ষার সাফল্য কেবল প্রযুক্তিগত অগ্রগতি নয়, বরং ভারতের বৈজ্ঞানিক সক্ষমতারও বড় প্রমাণ। ইসরো মনে করছে, এই মাইলফলক অর্জনের মাধ্যমে গগনযান প্রকল্প আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল এবং ভবিষ্যতে মানব মহাকাশযাত্রার জন্য দেশের প্রস্তুতি দৃঢ় হলো।