বছরের শেষেও বাজিমাত ISRO-র! সফল উৎক্ষেপণ হল SPADEX মিশনের, ইতিহাস তৈরি করল ভারত

বাংলা হান্ট ডেস্ক: ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা তথা ISRO সোমবার রাতে সফলভাবে বহু প্রতীক্ষিত স্পেস ডকিং এক্সপেরিমেন্ট (SPADEX) মিশন লঞ্চ করেছে। এই লঞ্চ ভেহিক্যালে ২৪ টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। ২২০ কেজি ওজনের ২ টি উপগ্রহ সহ পোলার স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকেল (PSLV) শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান মহাকাশ কেন্দ্র থেকে সফলভাবে উৎক্ষেপণ করেছে। এদিকে, পৃথিবীর ওপরে একই কক্ষপথে থাকা অন্যান্য স্যাটেলাইটের সাথে সংঘর্ষ এড়াতে এই উৎক্ষেপণ মাত্র ২ মিনিট বিলম্বিত হয়ে। মূলত, মহাকাশের কক্ষপথে মহাকাশযানের “ডকিং” এবং “আনডকিং” প্রদর্শনের জন্য ISRO শ্রীহরিকোটা মহাকাশ কেন্দ্র থেকে সফলভাবে ২ টি উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করে।

নজির গড়ল ISRO:

এই বিষয়ে ISRO-র চেয়ারম্যান ডক্টর এস সোমনাথ টুইটারে জানিয়েছেন, “আমি SPADEX মিশনের জন্য PSLV-C60 এর সফল উৎক্ষেপণের ঘোষণা করছি… রকেটটি উপগ্রহগুলিকে সঠিক কক্ষপথে স্থাপন করেছে… PSLV প্রকল্পের পুরো দলকে অভিনন্দন, যাঁরা সঠিক কক্ষপথে স্যাটেলাইট স্থাপন করেছেন। এছাড়াও, ২ টি ছোট স্যাটেলাইট বাস আর্কিটেকচার ব্যবহার করে একটি অভিনব এবং কম খরচে ডকিং মিশন সফলভাবে প্রদর্শন করার জন্য SPADEX টিমকে অভিনন্দন।”

এদিকে, এই সাফল্যের ওপর ভর করেই ফের নয়া ইতিহাস তৈরি করে ফেলেছে ভারত। কারণ, সমগ্র বিশ্বের মধ্যে ভারত এই কৃতিত্ব অর্জনকারী চতুর্থ দেশ হয়ে উঠেছে। এমতাবস্থায়, উভয় মহাকাশযানই এখন আগামী ১০ দিনের মধ্যে মহাকাশে ডকিংয়ের দিকে অগ্রসর হবে। সম্ভবত ৭ জানুয়ারি এটি হতে পারে। SPADEX-এর লক্ষ্য হল উন্নত ইন-স্পেস ডকিং প্রযুক্তি প্রদর্শন করা। যা ভবিষ্যতের মিশনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সক্ষমতা হয়ে উঠবে। যার মধ্যে রয়েছে চন্দ্র অভিযান এবং ভারতীয় অন্তরীক্ষ স্টেশনের (BAS) মতো মিশনগুলি। ২ টি উপগ্রহ- SDX01 (চেজার) এবং SDX02 (টার্গেট) তাদের মধ্যে একটি ছোট আপেক্ষিক বেগ সহ পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে স্থাপন করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: ২০২৫-এ কবে, কার বিরুদ্ধে খেলবে টিম ইন্ডিয়া? দেখে নিন পুরো Schedule

এগুলি ISRO-র টেলিমেট্রি, ট্র্যাকিং এবং কমান্ড নেটওয়ার্ক (ISTRAC) দ্বারা পরিচালিত। প্রাথমিকভাবে, সেগুলি প্রায় ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরত্বে পৃথক হয়ে যাবে। একবার এই দূরত্বে পৌঁছে গেলে, প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাবে এবং অনবোর্ড সিস্টেমগুলি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা করা হবে। কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং বলেছেন যে “এই মিশনটি মহাকাশ ডকিং আয়ত্ত করতে সক্ষম দেশগুলির বিশেষ বিভাগে ভারতের প্রবেশকে চিহ্নিত করবে।”

আরও পড়ুন: বছরের শেষে ICC-র কাছ থেকে বড় ধাক্কা পেলেন স্মৃতি মান্ধানা! জানলে হবেন অবাক

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, SPADEX মিশন মহাকাশ গবেষণায় ভারতের ভবিষ্যত প্রচেষ্টার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে প্রমাণিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। যার মধ্যে রয়েছে চাঁদ থেকে পৃথিবীতে পাথর এবং মাটি আনা এবং প্রস্তাবিত ভারতীয় মহাকাশ স্টেশন থেকে শুরু করে চাঁদের পৃষ্ঠে একজন মহাকাশচারীকে অবতরণ করা। এখনও পর্যন্ত শুধুমাত্র আমেরিকা, রাশিয়া এবং চিন মহাকাশ ডকিং প্রযুক্তি আয়ত্ত করেছে। এই প্রসঙ্গে, ISRO-র একজন আধিকারিক জানিয়েছেন যে, “SPADEX মিশনের প্রাথমিক উদ্দেশ্য হল পৃথিবীর নিম্ন বৃত্তাকার কক্ষপথে ২ টি ছোট উপগ্রহ (SDX-I এবং SDX-II) একত্র ‘ডক’ এবং ‘আনডকিং’-এর জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তির বিকাশ এবং প্রদর্শন করা।”

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর