পশ্চিমবঙ্গের কেশরী নাথ ত্রিপাঠী রাজ্যপাল থেকে অব্যাহতি দেওয়ার পর নতুন রাজ্যপাল আসেন জগদীপ ধনকার, প্রথমের দিকে সম্পর্কটা বেশ ভালই ছিল যেদিন রাজ্য বনাম রাজ্যপালের। প্রথমদিন কলকাতা বিমানবন্দরে আসেন, সেদিন তাকে অভ্যর্থনা জানাতে যায় রাজ্যের মন্ত্রীরা কিন্তু তারপর একাধিক ইস্যুতে রাজ্যপাল ও রাজ্য সরকারের দূরত্ব বেড়েছে কিন্তু তাতে কোন রকম ভাবে কর্ণপাত করতে নারাজ রাজ্যপাল, তিনি কখনো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির কালী পুজো তে চলে যাচ্ছেন, আবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোন ভুল নীতি থাকলে সেই নিয়ে সমালোচনায় সরব হচ্ছেন।
রাজ্যপাল গতকাল পুলিশের প্রধান ও রাজ্যের প্রশাসনের প্রধান কে নিয়ে একটি বৈঠক করেন রাজভবনে। সেখানে পশ্চিমবঙ্গে যে গত তিন চারদিন ধরে অরাজকতা চলেছে তা দূর করে দেওয়ার জন্য তা কতটা ক্ষতি হয়েছে এবং সাধারন মানুষ কেমন আছে সেই নিয়ে একটি বৈঠক করা হয় রাজ্যপাল। তারপর সাংবাদিক সম্মেলন করেন এবং বলেন আমি দূরত্ব সমস্যা সমাধানের জন্য সব রকম সহযোগিতা করছি। সেই পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যপাল সাংবাদিক বৈঠক করেন এবং সেখানে তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে ‘লৌহ মানবী ‘বলে আখ্যা দেন এবং তিনি আরো বলেন মুর্শিদাবাদ ও মালদা এবং রাজ্যের যেখানে যেখানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেই সব জায়গায় তিনি যাবেন। সেই পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা শুরু হয়েছে তাহলে কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়- রাজ্যপালের সম্পর্ক অবশেষে ইতি হতে চলেছে কিন্তু তারপরেই রাজ্যপাল আবার বলেন যেভাবে কেন্দ্রে আইন পাস হয়েছে সেই আইনকে রাজ্যের মানা উচিত এবং রাজ্য সরকার যেভাবে সরকারি টাকায় বিজ্ঞাপন দিয়েছেন এটা আইন বিরোধী। বিজেপি প্রথম থেকেই দাবি করে আসছে রাজ্য সরকার যেভাবে সরকারি কোষাগার থেকে নিজেদের রাজনৈতিক ফায়দা তোলার জন্য বিজ্ঞাপন দিচ্ছেন বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে তা আইনের বিপক্ষে।
সেই পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যপাল কঠোর সমালোচনা করেছেন, এছাড়াও তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাথে এই বিষয়ে মিটিং করার জন্য একাধিকবার চিঠি দিয়েছেন। এখন দেখার বিষয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজভবনে এসে রাজ্যপালের সাথে রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে কোনো বৈঠক করে কিনা
। ইতিমধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তর কলকাতা দক্ষিণ কলকাতা এবং হাওড়া থেকে তিনদিন পথসভা করেছেন। তারা যে এনআরসি এবং সি এ এ বিল মানবেনা তাও হুশিয়ারি দিয়েছে। রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীর আবার কবে একসাথে দেখা যায় সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠছে !
কিন্তু রাজ্যপালও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে ‘লৌহ মানবী’ বলে আখ্যা দিয়েছেন এবং বলেছেন যেখানে যেখানে অশান্তি এখনো অব্যাহত আছে তা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসুক এবং রেলের পরিষেবা কে সুন্দর ভাবে আবার চালু করা হোক। রাজ্যপালের মন্তব্যকে হাতিয়ার করেছে বিজেপি তারাও দাবি করেছে যে বিজ্ঞাপনের নামে যেভাবে কোটি কোটি টাকা রাজ্য সরকার তাদের রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করছে তা আইন বিরোধী।