মেলেনি আবাসের ঘরটুকু! ফুটো হওয়া টিনের চালের নিচেই দিন গুজরান উচ্চমাধ্যমিকে সপ্তম হওয়া কোয়েলের

Published on:

Published on:

Jalpaiguri HS student not get any house of awas yojana

বাংলা হান্ট ডেস্ক: প্রবল কষ্টের মধ্যে দিয়ে পড়াশোনা করে এই বছর উচ্চমাধ্যমিকে সপ্তম হয়েছিলেন জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) কোয়েল গোস্বামী। এই বছর এমনি বৃষ্টির বেশি হয়েছে দুই বঙ্গে জুড়ে। আর এই বৃষ্টি অথবা ঝড় হলেই ঘর কেঁপে ওঠে। আর যদি একটানা বৃষ্টি হয় তাহলে তো আর কোন কথাই নেই। হাজারটা ছিদ্র দিয়ে অঝোর ধারায় জল পড়ে বিছানা, ঘরের মেঝে ভিজে একাকার হয়। ফলপ্রকাশের পর তার বাড়িতে গিয়েছিলেন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব থেকে শুরু করে সরকারি আমলার অনেকেই তাকে সংবর্ধনা দিতে।

ফুটো হওয়া টিনের চালে আশ্বাস নিয়ে দিন কাটাচ্ছে উচ্চমাধ্যমিক সপ্তম হওয়া কোয়েল (Jalpaiguri)

এবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় রাজ্যে সপ্তম স্থান অধিকার করেন জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) সদর ব্লকের খারিজা বেরুবারি ১নং গ্রাম পঞ্চায়েতের বালুর ডিপ গ্ৰামের বাসিন্দা কোয়েল গোস্বামী। ভালো ফল প্রকাশ করায় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব থাকে শুরু করে সরকারি আমলারা অনেকেই এসেছিলেন তাকে সম্বর্ধনা দিতে। তবে পারিবারিক আত্মিক অবস্থা ভালো না থাকায় কষ্ট করেই পড়াশোনা করেন মেয়েটি। এমনকি দুবার আবেদন করে আজো তারা আবাসনের জন্য ঘর পাইনি বলে দাবি করেন কোয়েল গোস্বামীর পরিবার।

তার পরিবারের দাবি, রাজ্যে সপ্তম স্থান অধিকার করেন তাদের মেয়ে। এই খবর জানাজানি হতেই অনেকেই সংবর্ধনা দিতে আসেন তার মেয়েকে। সেই সময় সকলেই দেখেছিলেন তাদের বাড়ির করুণ দশা। সকলের এক বাক্যে বলেছিলেন অবিলম্বে তাদেরকে আবাসনের ঘর দেওয়া উচিত। কিন্তু বাস্তবে সেই চিত্র ধরা পড়েনি। দুবার আবেদন করার পরও আজ পর্যন্ত ঘর পাইনি গোস্বামী পরিবার।

জানা যায়, কোয়েল গোস্বামীর বাবা হাটে সুপারি বিক্রি করেন। তারপরে সামান্য আয়ে কোন রকমে দিন চলে তাদের। তার বাবা জানান, একদিকে তারা যেমন ঘর পাইনি পাশাপাশি পাইনি ‘অন্ত্যোদয় অন্ন যোজনার’ রেশন কার্ডও’। তাদের মতে, যদি এই কার্ড পেতেন তাহলে চালের সঙ্গে মাসে ২০ কেজি আটা পেতেন। এই বিষয়ে কোয়েল গোস্বামী জানান, বেঁচে থাকার জন্য যা প্রয়োজন তার ন্যূনতম কোন কিছুই পাননি তারা।

Jalpaiguri HS student not get any house of awas yojana

আরও পড়ুন: ক্রমাগত ঊর্ধ্বমুখীর পর এক ধাক্কায় নামল সোনার দাম, দেখে নিন আজকের রেট চার্ট

কোয়েলের বাবা অশোক গোস্বামী বলেন, আবাসনের জন্য আবেদন করেছিলাম। কিন্তু কোন লাভ মেলেনি‌। তার ওপর রেশন কার্ড না থাকায় বিনামূল্যে আটাও পান না তারা। খুব কষ্ট করে দিন কাটাচ্ছেন তারা। তাদের এই আর্থিক অনটনের মধ্যে কোয়েলের মা বাসন্তী গোস্বামী বলেন, ‘মেয়ের সাফল্যের পর অনেকেই এসেছিল। আমাদের পরিস্থিতি দেখে তক্ষুনি বাড়ি করে দেয়। কিন্তু পরে তা বাস্তবে আর রূপান্তরিত হয়নি।’

এই ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর, এলাকার বিজেপি পঞ্চায়েত সদস্য সবিতা বলাই জানান, এই পরিবার আবাস ও অন্ত্যোদয় অন্ন যোজনার রেশন কার্ড দুটোই পাওয়ার যোগ্য। কিন্তু কেন পাচ্ছেন না তারা সেই বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। তিনি আরও জানান, আমরা বিজেপি করি বলে কোন কাজ করতে বললে তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফ থেকে সেই কাজ করা হয় না। এলাকার বিজেপি পঞ্চায়েত সদস্যের এহেন মন্তব্য শোনার পর তৃণমূলের জেলা সম্পাদক বিকাশ মালাকার জানান, এ অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যে। তৃণমূল চাই এক্ষুনি ওই পরিবার আবাসনের ঘর পাক। তিনি আরও জানান উচ্চমাধ্যমিকে ফল প্রকাশের পর তৃণমূল ওই পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এমনকি বিধায়ক নিজে গিয়েও দেখা করেছিলেন ওই পরিবারের সঙ্গে।