বাংলাহান্ট ডেস্ক: প্রকৃতির রোষ যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না জম্মু-কাশ্মীরের (Jammu and Kashmir)। লাগাতার ভারী বৃষ্টির জেরে বৈষ্ণোদেবীর (Vaishno Devi) যাত্রাপথে ধস নামায় ফের পাঁচ পুণ্যার্থীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। জানা যাচ্ছে মঙ্গলবার দুপুরে ইন্দ্রপ্রস্থ ভোজনালয়ের কাছে ধস (Landslide) নামে। ধসের জেরে আচমকাই পাহাড়ের ঢাল বেয়ে বড় বড় রাস্তার গড়িয়ে নেমে আসায় পুণ্যার্থীদের মধ্যে ঠেলাঠেলি লেগে যায়। সেই সময় ধসের নিচে চাপা পড়ে যান বহু মানুষ। জানা যাচ্ছে ঘটনায় প্রায় ১৪ জন সেখানে আহতও হন।
প্রকৃতির রোষে জম্মু-কাশ্মীর (Jammu and Kashmir)
জম্মু-কাশ্মীরে ভারী বৃষ্টির জেরে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে কটরার অর্ধকুঁয়ারীতে বৈষ্ণোদেবীর যাত্রাপথে ধস নেমে প্রাণ হারিয়েছেন পাঁচ পুণ্যার্থী। আহত হয়েছেন আরও অন্তত চৌদ্দ জন। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, ইন্দ্রপ্রস্থ ভোজনালয়ের কাছে হঠাৎ করেই পাহাড়ি ঢাল ভেঙে পড়তে শুরু করে। মুহূর্তের মধ্যেই বড় বড় পাথর ও বোল্ডার নামতে থাকে নিচের দিকে। আচমকা ধস নামায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুণ্যার্থীদের মধ্যে। হুড়োহুড়ির জেরে কেউ চাপা পড়েন, কেউ আবার গুরুতর আহত হন। ধসের পরই নিরাপত্তাবাহিনী, মন্দির কমিটির সদস্য এবং স্থানীয় প্রশাসন উদ্ধারকাজ শুরু করে।
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের “দাদাগিরি”-র মিলবে জবাব? এবার একমঞ্চে মোদী-পুতিন-জিনপিং, তাকিয়ে গোটা বিশ্ব
বৈষ্ণোদেবী মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আহতদের মধ্যে কয়েকজনকে তড়িঘড়ি উদ্ধার করে কাটরার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অনেককে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হলেও কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ঘটনাস্থলে এখনও বিপদের আশঙ্কা থাকায় যাত্রাপথ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যাত্রাপথে থাকা অন্য সমস্ত পুণ্যার্থীকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, জম্মু-কাশ্মীরের বিভিন্ন জেলায় গত তিন দিন ধরে প্রবল বর্ষণ চলছে। এর ফলে কোথাও কোথাও হড়পা বান, কোথাও আবার ধস নামছে। বিশেষত জম্মু, কাটরা, সাম্বা, রিয়াসি, উধমপুর, ডোডা এবং কিশ্তওয়াড় জেলায় ভূমিধস এবং বন্যার সতর্কতা জারি করা হয়েছে। কয়েকটি এলাকায় লাল সতর্কতা বলবৎ রয়েছে। প্রশাসন জানিয়েছে, পর্যটক ও তীর্থযাত্রীদের জন্য বিশেষ নজরদারি চালানো হচ্ছে।
এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে ডোডা জেলায় মেঘভাঙা বৃষ্টি ও হড়পা বানের জেরে একাধিক বাড়ি ভেসে যায়। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, ওই ঘটনায় চার জনের মৃত্যু হয়েছে এবং বহু মানুষ এখনও নিখোঁজ। দ্রুত উদ্ধারকাজ শুরু করা হলেও প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন উদ্ধারকারীরা। সেনা ও এনডিআরএফের দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে তল্লাশি চালাচ্ছে।
লাগাতার ভারী বৃষ্টি ও ধসের কারণে জম্মু-কাশ্মীরে পরিস্থিতি ক্রমশই উদ্বেগজনক হয়ে উঠছে। তীর্থযাত্রা সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হাজার হাজার ভক্তের যাত্রা ব্যাহত হয়েছে। আবহাওয়ার উন্নতি না হলে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফেরাতে সময় লাগবে বলেই আশঙ্কা করছে প্রশাসন।