বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রবিবার খাস কলকাতা থেকে বাংলাদেশি জঙ্গী সংগঠন জেএমবির (JMB ) তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছিল কলকাতা পুলিশ। তখনই পুলিশের অনুমান ছিল হুজি বা আল-কায়েদা জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে তারা। পদ্মা পাড়ে এখন সেভাবে সুবিধা করতে পারছে না জেএমবি, আর সেই কারণেই মুর্শিদাবাদের বর্ডার হয়ে তাদের আগমন কলকাতায়। কলকাতায় অত্যন্ত সাধারণ পেশার সঙ্গে যুক্ত ছিল এই তিন সন্ত্রাসবাদী। কখনও ছাতা বিক্রি কখনও মসলা বা মশারী বিক্রির মাধ্যমে দিন গুজরান করছিল তারা। যাতে মানুষের মধ্যে আস্থা তৈরি হয়।
কিন্তু জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশ জানতে পেরেছে রীতিমত ভয়ঙ্কর নাশকতার ছক কষেছিল নাজিউর রহমান পাভেল ওরফে জয়রাম ব্যাপারী ওরফে জোসেফ, মেকাইল খান ওরফে শেখ সাব্বির ও রবিউল ইসলাম নামের ওই তিন জঙ্গী। ঘাগড়াগড়ে যে বোমা কারখানার কাজ অসমাপ্ত থেকে গিয়েছিল কার্যত সেইরকমই নাশকতার ছক কষেছিল তারা। জানা গিয়েছে শুধু এই তিনজনই নয় আরও প্রায় ১২ থেকে ১৫ জন ইতিমধ্যেই বর্ডার পার করেছে। তারা এ রাজ্যেই আছে কিনা, তা অবশ্য এখনও জানা যায়নি। তবে পুলিশের সন্দেহ, রাজ্য থেকে মূলত দক্ষিণ ভারতে পাড়ি দেবারই পরিকল্পনা ছিল এই চক্রটির।
তাদের কাছে উদ্ধার হওয়া ডাইরি থেকে অন্তত কুড়ি জনের নাম ও ফোন নম্বর মিলেছে। পুলিশ জানিয়েছে, এদের অনেকেই সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হুজি (HUJI), আল কায়দা (Al Qaeda) এবং এবিটির (ABT) নেতা। নম্বর মিলেছে জেএমবি তথা হুজি প্রধান আল আমিন এবং জেএমবি নেতা নাহিদ তসনিমের। যারা দুজনেই এখন বাংলাদেশে জেলবন্দি। সূত্রের খবর এই ৩ জঙ্গীর মধ্যেও দুজন আগে ছিল বাংলাদেশের জেলে বন্দী। জামিনে ছাড়া পাওয়ার পরেই ভারতে চলে আসে তারা।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, শুধু বোমা তৈরীর কারখানা নয়, এরাজ্যে একটি রাবারি উইং বা ডাকাতি চক্র তৈরি করারও চেষ্টা চালাচ্ছিল তারা। যাদের মূল কাজ বিভিন্ন বড় গয়নার শোরুম এবং ব্যাংক ডাকাতি করে সংগঠনের জন্য অর্থ সংগ্রহ করা। এও জানা গিয়েছে তাদের লক্ষ্য ছিল, বাংলার প্রতিটি মায়ের রান্না ঘরে বোমা রেখে আসা। এই সংগঠনের জম্মু-কাশ্মীরের সঙ্গে কোন যোগ ছিল কিনা, তাও এখন খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই কলকাতা পুলিশের সঙ্গে কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনআইএর (NIA) আধিকারিকরাও। জানা গিয়েছে এই তদন্তে এবার যোগ দেবেন তারাও।