এটিই বিশ্বের সবথেকে প্রাচীনতম কচ্ছপ, ১৯০ বছর বয়সে বহু বিপর্যয় ও পরিবর্তনের সাক্ষী জোনাথন

বাংলা হান্ট ডেস্ক: ছোটবেলায় আমরা সকলেই কচ্ছপ এবং খরগোশের দৌড় প্রতিযোগিতার কাল্পনিক গল্প শুনেছি। যেখানে খরগোশের তুলনায় অত্যন্ত ধীরগতির প্রাণী হয়েও জিতে যায় কচ্ছপ। যদিও, জীবনকালের দিক থেকেও সকলকে একবাক্যে হারিয়ে দিতে পারে এই প্রাণী। যেখানে মানুষের জীবনকাল ৮০ থেকে ১০০ বছরের মধ্যেই শেষ হয়ে যায়, সেখানে এই প্রাণী বছরের পর বছর নিশ্চিন্তে বেঁচে থাকে পারে।

ঠিক যেমন “জোনাথন”। এই কচ্ছপ ইতিমধ্যেই তার ১৯০ তম জন্মদিন উদযাপন করেছে। শুধু তাই নয়, ইতিমধ্যেই জোনাথন “গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস”-এও তৈরি করেছে রেকর্ড। এক কথায়, সমগ্ৰ বিশ্বের মধ্যে জোনাথন-ই এখন সবচেয়ে বয়স্ক কচ্ছপের তকমা পেয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এর আগে এই রেকর্ডটি ছিল টুই মালিলা নামের একটি কচ্ছপের কাছে। সেটি প্রায় ১৮৮ বছর বেঁচে ছিল। যদিও, তার মৃত্যুর পর এই রেকর্ডের অধিকারী হয়েছে জোনাথন। বর্তমান প্রতিবেদনে জোনাথন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হল।

এই কচ্ছপের জন্ম ১৮৩২ সালে!
রিপোর্ট অনুসারে জানা গিয়েছে যে, জোনাথনের জন্ম হয় ১৮৩২ সালে। পাশাপাশি, চলতি বছরেই ১৯০ বছর বয়সের গন্ডী অতিক্রম করেছে সে। মূলত, ১৮৮২ সালে জোনাথনকে সেশেলস থেকে দক্ষিণ আটলান্টিকের দ্বীপ সেন্ট হেলেনায় নিয়ে আসা হয়েছিল। পাশাপাশি, তার সাথে আরও ৩ টি কচ্ছপকে আনা হয়। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস অনুসারে, জোনাথন তখন সম্পূর্ণ প্রাপ্তবয়স্ক ছিল। মূলত, একটি কচ্ছপকে সম্পূর্ণ প্রাপ্তবয়স্ক হতে হলে তার বয়স হতে হয় ৫০ বছর।

জীবনের বেশিরভাগ সময় অতিবাহিত হয়েছে গভর্নর হাউসে:
১৯৩০ সালে, সেন্ট হেলেনার গভর্নর স্পেনসার ডেভিস এই কচ্ছপের নাম দেন জোনাথন। পাশাপাশি, জোনাথন তার জীবনের বেশিরভাগ সময় গভর্নর হাউসেই কাটিয়েছে। সেখানে সে আরও তিনটি বিশালাকার কচ্ছপের সঙ্গে থাকত। যদিও, জোনাথন মানুষের সঙ্গ খুব পছন্দ করে।

বহু পরিবর্তনের সাক্ষী জোনাথন:
মূলত, জোনাথনের জন্মের পর থেকে, পৃথিবীতে কম্পিউটারের প্রচলন ঘটে। শুধু তাই নয়, বাণিজ্যিক ফ্লাইটের চলাচলের পাশাপাশি প্রথম স্কাই স্ক্র্যাপার (১৮৮৫) নির্মিত হয় এবং আইফেল টাওয়ারও নির্মিত হয় (১৮৮৭)। এছাড়াও এই ১৯০ বছরে বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সাক্ষী ছিল জোনাথন।

বার্ধক্যের প্রভাব পড়ছে:
জোনাথন রোদে থাকতেই ভালোবাসে। কিন্তু গরমের দিনে সে ছায়ায় থাকে। বাঁধাকপি, শসা, গাজর, আপেল, কলা, লেটুস এবং অন্যান্য মরশুমি ফল তার প্রিয় খাদ্য। তবে বার্ধক্যের কারণে জোনাথন এখন কম দেখতে পায়। পাশাপাশি, তার ঘ্রাণশক্তিও চলে গিয়েছে।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর