ঘুমের ঘোরেই সব শেষ! না ফেরার দেশে সাংবাদিক দেবাশিস ভট্টাচার্য, শোকবার্তা মুখ্যমন্ত্রীর

বাংলাহান্ট ডেস্ক : না ফেরার দেশে চলে গেলেন বিশিষ্ট সাংবাদিক (journalist) দেবাশিস ভট্টাচার্য (Debashish Bhattacharya) । রবিবার ভোরে দক্ষিণ কলকাতার চেতলার বাড়িতে ঘুমের মধ্যেই তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে দেবাশিসবাবুর বয়স হয়েছিল ৭১। ক্যান্সারে (Cancer) আক্রান্ত হয়ে কলকাতার নীলরতন সরকার হাসপাতালে (NRS Hospital) ভর্তিও ছিলেন। দিন কয়েক আগে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন। কিন্তু, শেষরক্ষা হলো না। বাড়িতে তাঁর স্ত্রী, পুত্র ও পুত্রবধূ আছেন।

সাংবাদিকতায় যেন এক চলন্ত এনসাইক্লোপিডিয়া ছিলেন দেবাশিস ভট্টাচার্য। যে সময়ে গুগল ছিল না সেইসময়েও যে কোন ঘটনা, সাল, তারিখ নিমেষে বলে দিতে পারতেন। প্রখর স্মৃতিশক্তি ও বিশ্লেষণী ক্ষমতার অধিকারী এই সাংবাদিকের কেরিয়ার গ্রাফও রীতিমতো ঈর্ষণীয়। প্রথম জীবনে বামপন্থী রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন। নকশালপন্থী আন্দোলনে যোগ দিয়ে কয়েকবছর কারাবাসেও ছিলেন। পরে গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা ও বন্দিমুক্তি আন্দোলনে যুক্ত হন। যুক্ত ছিলেন বাংলা ভাষা প্রসারের আন্দোলনের সঙ্গেও।

‘দর্পণ পত্রিকা’র হাত ধরেই তার সাংবাদিকতার শুরু হয়। তাঁর লেখা বই ‘ইন্দিরার কারাগারে’, ‘ সত্তরের দিনগুলি’, ‘ সেই ত্রিশ বছর’ জনপ্রিয়তা পায়। সংবাদপত্রের জগতে তাঁর ক্ষুরধার লেখনীর মাধ্যমে শীর্ষে পৌঁছেছিলেন তিনি। ‘আজকাল’, ‘আকাশ বাংলা’, ‘২৪ ঘণ্টা’ সহ একাধিক মুদ্রণ ও টেলিভিশন মিডিয়ার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। বর্তমানে একটি ম্যাগাজিন সম্পাদনার কাজে তিনি যুক্ত ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। বামফ্রন্ট সরকার সম্বন্ধীয় তাঁর লেখা একাধিক কলাম পাঠকদের মনে বিশেষ জায়গা করে নেয়। তারমধ্যে অন্যতম হল, বিগত বামফ্রন্ট সরকার সম্পর্কে ধারাবাহিক লেখা ‘বামপন্থীরা মহাকরণে গিয়ে কী করছেন।’

Mamata Debashish

দেবাশিস বাবুর মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসতেই সাংবাদিক মহলে গভীর শোকের ছায়া নেমে আসে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রখ্যাত প্রবীণ সাংবাদিকের স্মৃতিচারণা করেন। শোকপ্রকাশ করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। শোক বার্তায় মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, “দেবাশিস দার সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের হৃদ্য সম্পর্ক ছিল। ২০১১ সাল থেকে তিনি আমার কার্যালয়ের সঙ্গে বেশ কয়েক বছর যুক্ত ছিলেন। মানুষের আপদে বিপদে তিনি চিরকাল নিঃশব্দে সাহায্য করে গেছেন। দীর্ঘ অসুস্থতার পর তার প্রয়াণ সাংবাদিকতা জগতের এক অপূরণীয় ক্ষতি। আমি দেবাশিস ভট্টাচার্যের আত্মীয়-পরিজন ও অনুরাগীদের আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি”।


Soumita

আমি সৌমিতা। বিগত ৩ বছর ধরে কর্মরত ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমে। রাজনীতি থেকে শুরু করে ভ্রমণ, ভাইরাল তথ্য থেকে শুরু করে বিনোদন, পাঠকের কাছে নির্ভুল খবর পৌঁছে দেওয়াই আমার একমাত্র লক্ষ্য।

সম্পর্কিত খবর