বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত বিধানসভা নির্বাচনে দুশো ভোটে জয়লাভের স্বপ্ন দেখিয়েও শেষ পর্যন্ত 77-এ থামতে বাধ্য হয়ে বিজেপি। বিধানসভা ভোটের পূর্বে তৃণমূল ভেঙে একাধিক বিধায়কদের নিজেদের দলে নিয়ে আসলেও শেষ পর্যন্ত স্বপ্নভঙ্গ হয় তাদের আর এরপর থেকেই ধীরে ধীরে একাধিক নেতা শাসকদলে প্রত্যাবর্তন করায় সাংগঠনিক দিক দিয়ে ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। ফলে বিজেপি দলের পরিস্থিতি যখন বর্তমানে ক্রমশ তলানীতে গিয়ে ঠেকেছে, সেই মুহূর্তে বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার বঙ্গ সফরের দিকে তাকিয়ে ছিলেন সকলে।
অবশেষে কলকাতায় পৌঁছে বিধায়কদের চাঙ্গা করার উদ্দেশ্যে এদিন এক বিশেষ পরামর্শ দিয়ে গেলেন বিজেপি নেতা, যা 2024 সালে লোকসভা নির্বাচনের পূর্বে ভোকাল টনিক হতে চলেছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। এদিন কলকাতা পৌঁছে সকল বিধায়কদের উদ্দেশ্যে একপ্রকার ভোকাল টনিক দিতে দেখা যায় জেপি নাড্ডাকে।
উল্লেখ্য, তৃণমূল কংগ্রেস দ্বারা সৃষ্ট প্রকল্প ‘দুয়ারে সরকার’ বর্তমানে গোটা বাংলায় জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। বিভিন্ন মানুষের কাছে পৌঁছে গিয়ে তাদের সমস্যা শোনা এবং তার সমাধান করার মাধ্যমে মানুষের মনে এক বিশেষ জায়গা দখল করে নিয়েছে শাসকদল। আর এবার একপ্রকার তাদের সেই পরিকল্পনাকেই আয়ত্তে আনার চেষ্টায় নামলো বিজেপি।
সূত্রের খবর, এদিন দলের বিধায়কদের উদ্দেশ্যে সকাল 9 টা থেকে 11 টা পর্যন্ত দু’ঘণ্টাব্যাপী মানুষের বাড়ি গিয়ে সকলের সঙ্গে কথা বলার বিষয়ে মন্তব্য প্রকাশ করেন নাড্ডা। এক্ষেত্রে মানুষের সমস্যা শোনার পাশাপাশি তার সমাধান করারও নির্দেশ দেন বিজেপি নেতা। তবে এসকল নির্দেশ যে 2024 লোকসভা নির্বাচনের পূর্বে বাংলায় নিজেদের স্থান মজবুত করার জন্য কেন্দ্র সরকারের এক পরিকল্পনা, সে বিষয়ে মত প্রকাশ করেন বিশেষজ্ঞরা।
কেন্দ্র বিজেপি নেতৃত্বের নির্দেশ অনুযায়ী, এবার থেকে বাংলায় প্রতিটি বিজেপি বিধায়ককে মাসে পাঁচ দিন সময় বের করে বিভিন্ন এলাকায় পৌঁছে যেতে হবে। শুধু তাই নয়, মানুষের সমস্যার সমাধান করার পাশাপাশি কারোর সার্টিফিকেট কিংবা অন্য কোন সমস্যা থাকলে সম্পূর্ণ সহায়তা করতে হবে তাদের।
প্রসঙ্গত, বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে একে একে যেমন বিভিন্ন নেতারা বিজেপি দল ছেড়ে শাসকদলে যোগদান করেছেন, ঠিক তেমনিভাবে দলের ভেতর গোষ্ঠী সংঘর্ষে নাজেহাল দল। উপনির্বাচন এবং পুরসভার হারের ফলে আত্মবিশ্বাস তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে রাজ্য বিজেপির। তাই লোকসভা নির্বাচনের পূর্বে তাদেরকে মানসিকভাবে চাঙ্গা করার উদ্দেশ্যেই বর্তমানে একে একে বাংলায় এসে চলেছে অমিত শাহ থেকে জেপি নাড্ডার মতো ব্যক্তিত্বরা। তবে বর্তমানে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতির এই ভোকাল টনিক কতটা কাজে লাগাতে পারে দল, সেদিকে তাকিয়ে সকলে।