বাংলা হান্ট ডেস্ক : কলকাতার (Kolkata) পর এবার লক্ষ্য কালিম্পং (Kalimpong)। সম্প্রতি এই হিল স্টেশনের একটি বেআইনি নির্মাণ ভাঙার নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Ganguly)। আগামী ৫ দিনের মধ্যে নির্মাণ ভাঙার পরামর্শ তার। বিচারপতির কথায়, আগামী ২২ অগাস্টের মধ্যে ঐ বেআইনি বাড়ি না ভাঙা হলে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে আদালত অবমাননার মামলা করা হবে পুরসভার বিরুদ্ধে। এমনকি এই কাজে পুরসভাকে বুলডজার ব্যবহার করারও পরামর্শ দিলেন তিনি। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এর আগেও কলকাতার একটি বেআইনি নির্মাণ ভাঙার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
ঘটনা প্রসঙ্গে জানা যাচ্ছে যে, কিছুদিন আগেই বীরবাহাদুর বলন নামের এক ব্যক্তি কলকাতা হাই কোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে এক মামলা দায়ের করেন। অভিযোগ, কালিম্পং পুরসভার অনুমতি না নিয়ে বেআইনি ভাবে একটি নির্মাণ করা হয়েছে। ঐ স্থানীয় ব্যক্তির দাবি, এরকম একটা পাড়াড়ি এলাকায় এই ধরনের নির্মাণ বিপজ্জনক। এতে স্থানীয় বাসিন্দারা বিপদে পড়তে পারে। এমনকি ঐ নির্মাণের উপর একটি স্কুলও রয়েছে বলে খবর।
সমস্ত পরিস্থিতি বুঝেই নাকি ভবন তৈরির কাজে বাধা দিয়েছিল কালিম্পং পুরসভা। তবে কোনও রকম কোনও অনুমতির নাকি তোয়াক্কা করেনি ঐ নির্মাণটির মালিক পক্ষ। এমতাবস্থায় আদালতের দ্বারস্থ হওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় ছিলনা বীরবাহাদুরের কাছে। অদালতের কাছে বীরবাহাদুর আর্জি জানিয়েছেন যাতে কালিম্পংয়ের ১১ মাইল, ঋষি রোডের সিএসটি স্কুলের নীচের ওই ভবনটি ভেঙে দেওয়া হয়। তিনি নাকি এর আগে একাধিকবার পুরসভাতেও অভিযোগ জানিয়েছেন। তবে লাভের লাভ কিছুই হয়নি।
আরও পড়ুন : আইনি না হলেও মন থেকে স্বামী-স্ত্রী! আর এবার যা করলেন শোভন-বৈশাখী, দেখ ‘থ” সবাই
নির্মাণে যে অনুমতি ছিল না, তা স্বীকার করে নেয় পুরসভাও। এইদিন জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে মামলাটি উঠলে তা সম্পূর্ণভাবে ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেন। তবে শোনা যাচ্ছে, আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও বেআইনি নির্মাণটি সম্পূর্ণ ভাঙা হয়নি। যার কারণে ফের একবার আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন মামলাকারী। বিষয়টি সরেজমিনে জানার জন্য আদালতে তলব করা হয় পুরসভার এগজ়িকিউটিভ অফিসারকে।
আরও পড়ুন : ছোটপর্দা থেকে সোজা বড় পর্দায়, মিঠুনের ‘কাবুলিওয়ালা’য় মিনি হবেন এই খুদে শিল্পী
গত বৃহস্পতিবার কালিম্পং পুরসভার এগজ়িকিউটিভ অফিসার সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় আদালতে হাজিরা দিয়ে জানান, প্রাথমিক ভাবে কিছু অংশ বেআইনি নির্মাণ করা হয়েছিল মনে করা হয়। তবে পরে জানা যায়, ঐ ভবনের পুরোটাই বেআইনীভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। পুরো ভবনটি ভাঙার জন্য আরও কিছু সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন তিনি। এবং অতিরিক্ত ৫ দিনের সময়ও তিনি চেয়ে নিয়েছেন। এই আর্জি মঞ্জুর করে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, আগামী অগস্ট বিকেল ৪টের মধ্যে ওই ভবনটি সম্পূর্ণ ভেঙে ফেলতে হবে। এবং এই কাজ সম্পূর্ণ না হলে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে পদক্ষেপ করবে আদালত।
আরও পড়ুন : বন্ধ হচ্ছে জি বাংলার একসময়ের টিআরপি টপার সিরিয়াল, তালিকায় রয়েছে আরও ৩
উল্লেখ্য, এর আগেও কলকাতার মানিকতলার এক বেআইনী ভবন ভাঙার জন্য বুলডোজ়ার ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। রানু পাল নামক এক বাসিন্দার অভিযোগ ছিল, তার পৈতৃক বাড়ি দখল করে বেআইনি নির্মাণ করেছেন এক প্রতিবেশী। অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে সেই মামলা উঠলে তিনি বলেন, ‘‘ওই নির্মাণ ভাঙতে প্রয়োজনে যোগী আদিত্যনাথের কাছ থেকে বুলডোজ়ার ভাড়া করুন।’’ বুলডজার ঢোকানো সম্ভব না হলেও ঐ নির্মাণ ভেঙে ফেলেছিল কলকাতা পুরসভা।