বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গতকাল দুপুরের আগেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Justice Abhijit Gangopadhyay) এজলাস থেকে নিয়োগ মামলা সরানোর নির্দেশ দিয়েছে (Recruitment Scam Cases) দেশের শীর্ষ আদালত। টেট দুর্নীতি থেকে শুরু করে স্কুল সার্ভিসের মাধ্যমে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত কোনও মামলার শুনানি হবে না জাস্টিস গাঙ্গুলির এজলাসে। এই নিয়ে এবার মুখ খুললেন খোদ বিচারপতি।
প্রসঙ্গত, গতকাল সুপ্রিম নির্দেশের পর মামলার নথি দেখতে চেয়ে শীর্ষ আদালতের সেক্রেটারি জেনারেলকে নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তবে সন্ধ্যায় বিশেষ বেঞ্চ তাতেও স্থগিতাদেশ দেয়।সেই খবর যখন প্রকাশ্যে আসে বিচারপতি তখন কোর্টেই। রাত বাড়ে, কোর্ট চত্বর একেবারে শুনশান। তবে দেখা যায় একটি ঘরে আলো জ্বলছে। ঘড়ির কাটায় তখন রাত ৯টা। জানা যায়, কোর্টের নতুন ভবনে তখনও নিজের চেম্বারেই রয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
কিছুক্ষন বাদেই ঘর থেকে বেরোন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সাংবাদিকরা ঘিরে ধরে তাকে। একের পর এক প্রশ্নে মুখে বিচারপতি বলেন, ‘‘আমি তো নিজে মামলা সরাচ্ছি না। এটা সুপ্রিম কোর্টের অর্ডারে হচ্ছে। তাই সবাইকে মেনে নিতে হবে। একটা ডিসিপ্লিন তো আছে। সুপ্রিম কোর্ট এই দেশের সর্বোচ্চ আদালত। সুপ্রিম কোর্ট অর্ডার দিয়েছে, তা মেনে নিতে হবে। এতে যার যত মন খারাপই হোক, ব্যক্তিগত ভাবে যদি কারও হয়ে থাকে, সেখানে বিশেষ কিছু করার নেই।’’
নিয়োগ দুর্নীতির অন্যান্য মামলা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে বিচারপতি বলেন, ‘‘এ দিন যে যুক্তিতে মামলা সরেছে, নিয়োগ দুর্নীতির অন্য মামলাও সেই যুক্তিতে সরে যেতে পারে।’’ আর সব শেষে তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট যুগ যুগ জিয়ো। এ ছাড়া আমি কী বলব!’’ ইস্তফার কথা উঠলে তিনি বলেন, ‘‘আমি ইস্তফা দেব না। আমি পালিয়ে যাওয়ার লোক নই। মামলা আমি ব্যক্তিগত ভাবে করিনি। তাই আমি বিচার করব না অন্য কেউ, তা নিয়ে আমার কোনও চিন্তা নেই। আমি বিচারপতির পদে থাকি বা পরে অন্য যে কোনও পদেই থাকি না কেন, দুর্নীতির বিরোধিতা করব।’’
এরপর নিয়োগ মামলা প্রসঙ্গে বিচারপতি বক্তব্য, ‘‘অপেক্ষা করুন। মামলা শেষ হয়নি। এর পরে যিনি শুনবেন তিনিও এক জন হাই কোর্টের বিচারপতি।’’ তার সংযোজন, “এর পরে যিনি বিচারপতি আসবেন, তিনি তার স্টাইলে কাজ করবেন। আমি যে কাজ ছ’মাসে করছিলাম সে কাজ করতে গিয়ে ৬০ বছর লেগে গেলেও আমার কিছু বলার নেই। সুপ্রিম কোর্টেরও কিছু বলার নেই।’’ এরপরই আদালত চত্বর থেকে বেরিয়ে যান তিনি। পরে বাড়ি ঢোকার মুখে সারা দিন যা যা ঘটে গিয়েছে সেই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বিচারপতি বলেন, ‘‘আজ তো আমার মৃত্যুদিন।’’