বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দুর্নীতির জোয়ারে ভাসছে রাজ্য। একের পর এক নয়া পাতা জুড়ছে নিয়োগ দুর্নীতির (Recruitment Scam) কাহিনীতে। এতদিন ধরে উঠে এসেছে অনিয়ম করে চাকরি পাওয়া শিক্ষকদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন। আর এবার পরীক্ষকদের যোগ্যতাও আদালতের প্রশ্নের মুখে। এক ইন্টারভিউয়ারের (Interviewer) ইংরেজি জ্ঞান দেখে স্তম্ভিত হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Gangopadhyay)। ইংরেজি শিক্ষককে (English Teacher) ইংরেজিতে প্রশ্ন করতেই ফ্যালফ্যাল চোখে শিক্ষকের অনুরোধ, স্যর, বাংলায় প্লিজ!
আদালতে চলছে নিয়োগ দুর্নীতির একাধিক মামলা। ২১ ফেব্রুয়ারী এমনই এক মামলায় ইংরেজির শিক্ষক হয়েও ইংরেজিতে বয়ান দিতে পারলেননা এক উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষক। এই নিয়েই বেজায় ক্ষুব্ধ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। কিভাবে এতদিন শিক্ষকতা করছেন তা নিয়েও চিন্তিত বিচারপতি।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের প্রাথমিকের নিয়োগ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট সঠিক ভাবে হয়নি বলে দায়ের হয় মামলা। এরপর এবিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে রাজ্যের ৩ জেলার ৩০ জন ইন্টারভিউয়ারদের তলব করেছিল কলকাতা হাই কোর্ট। গত মঙ্গলবার রুদ্ধদ্বার শুনানিতে তাদের প্রত্যেককে পৃথকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। রেকর্ড করা হয় বয়ান।
এই পক্রিয়াতেই একটা সময় জিজ্ঞাসাবাদের ডাক পড়ে হুগলির একটি উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের ওই ইংরেজির শিক্ষকের। আদালতে প্রধানত ইংরেজিতেই কথোপকথন হয়, আর এমনিতেও ওই পরীক্ষক ইংরেজির শিক্ষক। তাই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ইংরেজিতেই প্রশ্ন করেন। কিন্তু ওই শিক্ষক কিছুই বুঝতে না পেরে কিছুক্ষন শূন্যদৃষ্টিতে তাকিয়ে উল্টে বিচারপতির কাছে আবেদন করে বলেন, ‘‘বাংলায় প্রশ্ন করুন।’’
ইংরেজির শিক্ষকের এমন কথা শুনে মাথায় হাত বিচারপতির। রেগে গিয়ে ওই শিক্ষককে বিচারপতি বলেন ‘‘ইংরেজির শিক্ষক হয়ে ইংরেজি না জানলে ছাত্রদের কী ভাবে পড়াবেন? এটা তো আশা করা যায় না!’’ তবে পরবর্তী প্রশ্ন বাংলাতেই করেন বিচারপতি। পরদিন বিচারপতির কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করতে যান হুগলির ওই শিক্ষক। তবে এদিনও বিচারপতির ভর্ৎসনার শিকার হন ইংরেজি শিক্ষক। তখনই বেরিয়ে না গেলে তাকে গ্রেফতার করানোর হুঁশিয়ারিও দেন বিচারপতি।