বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দক্ষিণ দিনাজপুরের বাসিন্দা আমনা পারভীন নামের এক চাকরিপ্রার্থী সম্প্রতি হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন। নিজেকে ‘যোগ্য’ দাবি করে চাকরি চেয়ে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। তবে নিজেকে ‘যোগ্য’ দাবি করলেও তার ‘যোগ্যতা’ দেখে ‘থ’ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Ganguly)।
ভরা এজলাসেই ওই চাকরিপ্রার্থীর যোগ্যতার পরীক্ষা নেন খোদ বিচারপতি। প্রসঙ্গত এদিন বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ শুনানির জন্য ওই চাকরিপ্রার্থীর মামলা আদালতে ওঠে। ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষা দিয়েছিলেন তিনি। আদালতে ওই প্রার্থীর ইন্টারভিউয়ের ভিডিয়ো দেখানো হচ্ছিল। যাতে দেখা যায় চাকরিপ্রার্থী ব্ল্যাক বোর্ডে লিখছেন, ‘‘আমরা চাষ করী আনন্দে।’’
‘করি’ এর বদলে ‘করী’ দেখে বিস্ময় প্রকাশ করে বিচারপতি বলেন, ‘ আপনি শিক্ষক হবেন? ‘করি’ বানান ভুল! দুর্গা বানান কী বলুন দেখি? এরপরেই আরও বিপাকে পড়েন ওই মহিলা প্রার্থী। বিচারপতির প্রশ্নে চাকরিপ্রার্থী বলেন ‘দূর্গা’ ।
বিচারপতি- না ওটা ঠিক বানান নয়। বানান হবে ‘দুর্গা’।
চাকরিপ্রার্থী একেবারে চুপচাপ।
বিচারপতি- এই বানান না জানলে কী ভাবে শিক্ষক হবেন! করি বানান ভুল লিখলেন কী করে?
চাকরিপ্রার্থী- নার্ভাস, তাই ভুল হয়ে গেছে।
বিচারপতি- নার্ভাস হয়ে কেউ ‘করি’ বানান ভুল লেখে নাকি?
চাকরিপ্রার্থী -অনেক দিন আগে পড়েছিলাম তাই ভুলে গিয়েছি।
একথা শুনে বিচারপতি তাকে বলেন, আমি তো বহু বছর আগে পড়েছি। আপনারা ত এই সে দিন পড়ে এলেন। ভুলেও গেলেন। এরপরই বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘এই বিদ্যে নিয়ে আপনি স্কুলে শিক্ষকতা করতে যাবেন?’’ অবশেষে প্রার্থীর আবেদন খারিজ করে দেন বিচারপতি।
আরও পড়ুন: ‘কোর্টের সঙ্গে খেলা হচ্ছে?’ CID-কে ভর্ৎসনা! রাজ্যকে ৫০,০০,০০০ টাকা জরিমানা বিচারপতির
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষা দিয়েছিলেন আমনা। তবে পাশ করেননি। যদিও তার দাবি ছিল, পরীক্ষায় ৬টি প্রশ্ন ভুল ছিল। সেই নম্বর পেলে, তিনি পাশ হয়ে যাবেন। চাকরিও পাবেন। তার আরজি শুনে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় চাকরিপ্রার্থীকে তার প্রাপ্য নম্বর দেওয়ার জন্য পর্ষদকে নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: ঠিক কবে মিলবে বকেয়া DA? অবশেষে বড় আপডেট দিয়ে দিলেন অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য
পাশাপাশি চাকরিপ্রার্থীর ইন্টারভিউ এবং অ্যাপ্টিটিউট টেস্ট নতুন করে নেওয়ারও নির্দেশও দিয়েছিল আদালত। তবে পর্ষদ তা না করায় ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি। এরপর এদিন পর্ষদ বিচারপতিকে জানান ওই প্রার্থীর চাকরি পাওয়ার যোগ্যতা নেই। একথা শুনেই আজ শুনানির দ্বিতীয় দফায় ওই প্রার্থীর মৌখিক পরীক্ষা নেন বিচারপতি। তবে তাতে ডাহা ফেল করায় খারিজ হয়ে যায় তার চাকরির আবেদন।