বাংলাহান্ট ডেস্ক: রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে বড়সড় দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যে মামলা চলছে হাইকোর্টে। এর পাশাপাশি ঘাসফুল শিবিরের একাধিক নেতার নাম প্রকাশ্যে আসতেই বিপাকে পড়েছে রাজ্যের শাসক দল। তবে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে হাইকোর্টে মামলা দায়ের হতেই কড়া হাতে তা সামলাচ্ছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। রাজ্যের পুলিশের ওপর একেবারেই ভরসা না করে তিনি সরাসরি এই মামলার তদন্তভার দিয়ে দিয়েছেন সিবিআইয়ের ওপর। পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ভর্ৎসনা থেকে শুরু করে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর মেয়েকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার বিষয়টি নিয়ে বারংবার উঠে এসেছেন খবরের শিরোনামে। এবার হাইকোর্টেরই এক আইনজীবীকে নাম না করে হুঁশিয়ারি দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। শুধু হুঁশিয়ারি দেওয়াই নয়, রীতিমতো কটাক্ষের সুরে তাকে ‘জ্যাঠামশাই’ বলেও সম্মোধন করেন তিনি।
স্পষ্ট বক্তা হিসেবেই পরিচিত এই বিচারপতি বলেন, ‘কোনও এক জ্যাঠামশাই বলে বেড়াচ্ছেন অভিজিৎবাবু এটা করেননি অভিজিৎবাবু ওটা করেননি। কে এটা করছেন আমি জানি।” এমনকি সেই আইনজীবীর বিরুদ্ধে তিনি তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করেছেন বলেও উল্লেখ করেন। পাশাপাশি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের আরো সংযোজন, ‘এক-দু’মাসের মধ্যে তিনি টের পাবেন।’
অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এমন মন্তব্যের পরে নানান মহলে একটাই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে যে, কে এই বিশিষ্ট আইনজীবী। যদিও সেই সম্পর্কে একেবারে মুখ খুলতে নারাজ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। এদিকে মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে বিশিষ্ট আইনজীবী অরুণাভ ঘোষের বক্তব্য দিকে নজর রাখলে দেখা যাবে, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের কার্যকলাপের যথেষ্ট মনোক্ষুন্ন এই বিশিষ্ট আইনজীবীর। অরুণাভ ঘোষের কথায়, “বিচারপতি একতরফা নির্দেশ জারি করছেন। অনেক ক্ষেত্রে অভিযুক্ত পক্ষের, আইনজীবীর বক্তব্য, শুনছেন না। তিনি বিচারের নামে প্রহসন করছেন।” বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বিচারের পদ্ধতিকে প্রহসন বলার সঙ্গে সঙ্গে তিনি কটাক্ষের সুরে বলেছেন, “কলকাতা হাইকোর্টের এক বিচারপতি দ্রুত ও ন্যায় বিচারের নামে হাততালি কুড়ানোর চেষ্টা করছেন।”
তবে বিশিষ্ট আইনজীবীর বক্তব্যের পরেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, জ্যাঠামশাই বলে বেড়াচ্ছেন আমি আইনের এ বি সি ডি জানি না। কলেজিয়ামের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করছেন তিনি। তিনি নিজে কি এ বি সি ডি জানেন? জ্যাঠামশায়ের পারফরম্যান্স অবশ্য সবাই জানে। কোনও মামলাই নেই তাঁর কাছে।’
যদিও শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতি মামলায় বারংবার বহু আইনজীবীই কোণঠাসা করতে চেয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে। এবার সেই বিশিষ্ট বিচারপতিকে হুংকার জানানোর পাশাপাশি, মামলার সাথে যুক্ত অন্যান্য আইনজীবীদেরকে কড়া ভাষায় একহাত নিলেন বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।