মোদীর হাত ধরে BJP-তে যোগ, লোকসভায় অভিষেকের বিরুদ্ধে প্রার্থী হচ্ছেন জাস্টিস গঙ্গোপাধ্যায়?

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ জল্পনার অবসান। আসন্ন লোকসভা ভোটে (Loksabha Vote) প্রার্থী হচ্ছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Ganguly)। সূত্রের খবর, আগামী ৬ মার্চ বারাসতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (PM Narendra Modi) সভামঞ্চ থেকেই বিজেপির (BJP) পতাকা হাতে তুলে নেবেন বিচারপতি। দেশ জুড়ে বেজে গিয়েছে ভোটের দামামা। আর এই আবহে বাংলার মাটিতে দাঁড়িয়ে এই মুহূর্তের সবথেকে বড় খবর, লোকসভা ভোটে দাঁড়াচ্ছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।

সূত্রের খবর, তমলুক থেকেই তিনি প্রার্থী হচ্ছেন। এখানে বলে রাখি, তমলুকের বর্তমানের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী। তৃণমূলের টিকিটেই জিতেছিলেন তিনি। তবে এখন শাসকদলের সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগ নেই। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের সময় থেকেই কেটেছে তাল। এবারে তমলুক থেকে তিনি বিজেপির টিকিট পেতে পারেন বলে জল্পনা চলছিল। যদিও গতকালই বিজেপির প্রথম দফার যে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে তাতে নাম নেই শুভেন্দুর ভাই দিব্যেন্দুর। এরই মধ্যে এবার তমলুক থেকে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ভোটে লড়বেন।

লোকসভা ভোটের আবহে রবিবার হঠাৎই জানা যায় অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Ganguly)। শীঘ্রই তিনি ইস্তফা দেবেন বলেও জানান। এরপরই জোড়ালো হতে থাকে জল্পনা। তাহলে কী তিনি লোকসভা ভোটে প্রার্থী হচ্ছেন? এই প্রশ্নেই তোলপাড় ছিল রাজ্য-রাজনীতি।

আরও পড়ুন: বড় বড় ব্যবসায়ীদের টেক্কা, স্ত্রী নয়নাও কোটিপতি! সাংসদ সুদীপের মোট সম্পত্তি কত জানেন?

যদিও এই বিষয়ে বিচারপতি এদিন দুপুরেই বলেন, ‘যদি কোনো রাজনৈতিক দলে আমি যোগ দি তাহলে তারা বলবেন আমি প্রার্থী হব কী না। গণতান্ত্রিক নির্বাচনে আমি যেতেও পারি। অনেক রাজনৈতিক দল আছে। বাম, কংগ্রেস, বিজেপি আছে। ছোট ছোট দলও আছে। তবে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার কোনো প্রশ্নই নেই।’ এরই মধ্যেই খবর আসছে, বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন বিচারপতি।

justice ganguly f

আগামী মঙ্গলবার ইস্তফা দিচ্ছেন বলে এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এর পর ‘বৃহত্তর ক্ষেত্রে’ নির্দিষ্টভাবে রাজনৈতিক ক্ষেত্রেই তিনি যেতে চলেছেন বলেও মন্তব্য করেছেন জাস্টিস গাঙ্গুলি। বিচারপতি জানিয়েছেন, ‘তার হাতে যে ক’টি মামলা আছে, সোমবার সেগুলি তিনি ছেড়ে দেবেন। আর তার পরই রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র পাঠাবেন।

হঠাৎ কেন রাজনীতিতে আসার সিদ্ধান্ত? বিচারপতির জবাব, ‘‘বর্তমান শাসকদলের অনেকে আমাকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছিলেন। চ্যালেঞ্জের মাধ্যমে আমাকে যে আহ্বান জানিয়েছেন তারা, সেই আহ্বানেই আমি এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি।’রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলকে তুলোধোনা করে বিচারপতি আরও বলেন, ‘বাংলায় দুরবস্থা চলছে। এক অপমানজনক অধ্যায় চলছে। বাঙালি হিসাবে এটা আমার পক্ষে মানা সম্ভব নয়। যারা শাসকের দায়িত্বে আছে তারা রাজ্যের উপকার করতে পারবে বলে মনে হয় না। যদি না কড়া প্রহরা না থাকে।’

বিচারপতির আর্জি,’ আমি শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে বলব।’’ উল্লেখ্য, আগামী অগস্ট মাসে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের অবসর গ্রহণের সময় ছিল। তবে তার আগে নিজেই ইস্তফা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের মাননীয় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।

প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতির একাধিক মামলায় নজিরবিহীন রায় দিয়ে চাকরিপ্রার্থী সহ গোটা বাংলার মানুষের মনে বড় জায়গা করে নিয়েছেন বিচারপতি। দুর্নীতির মামলায় রায় দিতে গিয়ে একাধিকবার বিচারপতির মুখে উঠে এসেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম। আর সেসব নিয়ে তৃণমূলের কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) বিচারপতিকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ করে বলেছিলেন, ”অবসরের বেশিদিন বাকি নেই। তার আগেই আপনি স্বেচ্ছাবসর নিয়ে আসুন না রাজনৈতিক ময়দানে। জিতে দেখান।” আর সেই চ্যালেঞ্জ একসেপ্ট করেই রাজনীতির ময়দানে বিচারপতি। এমনটাই মনে করা হচ্ছে।

Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর