বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বেআইনি নির্মাণ মামালায় সর্বদাই কড়া অবস্থান নিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। শনিবার কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি অমৃতা সিনহার (Justice Amrita Sinha) এজলাসে পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি পুরসভার অবৈধ নির্মাণ সংক্রান্ত এক মামালা চলছিল। সেই মামলার শুনানিতে ভরা এজলাসেই রীতিমতো তোলপাড়। যা দেখে বিস্মিত খোদ বিচারপতি।
বেআইনি নির্মাণের ওই মামলার শুনানি চলাকালীনই বচসায় জড়ালেন পুরসভা বনাম পুর্ত দফতরের আইনজীবীরা। রীতিমতো গন্ডগোল বেঁধে যায় এজলাসে। পরিস্থিতি ঠান্ডা করতে আঙুল উঁচিয়ে দু’পক্ষের আইনজীবীদের ধমক দিয়ে চুপ করান জাস্টিস সিনহা।
ঠিক কী অভিযোগ? কাঁথি পুরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের রসুলপুরের বাসিন্দা অমিতাভ পারিয়ারীর অভিযোগ, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে স্থানীয় কিছু তৃণমূল কর্মী তার প্রায় ৯ কাঠা জমির অধিকাংশই দখল করে নেয় এরপর সেই দখল করা জমিতে শাসকদলের লোকেরা বেআইনি নির্মাণ বানিয়ে ব্যবসা শুরু করছে। গোটা বিষয়ে একাধিকবার অভিযোগ জানিয়েও কোনো সুরাহা হয় নি।
অমিতাভবাবুর অভিযোগ, এই বিষয়ে স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেসের কাউন্সিলর সঞ্চিতা জানাকে একাধিকবার জানিয়েও লাভের লাভ কিছুই হয়নি। পাশাপাশি পুলিশ বা পুরসভা সবার কাছে অভিযোগ জানিয়েও কোনো সুরাহা হয়নি। এরপরই সোজাসুজি কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ওই ব্যক্তি।
আদালতে অমিতাভবাবুর আইনজীবী জানান, কোনো নকশা ও অনুমতি ছাড়াই দিনের পর দিন জমি দখল করে বেআইনি নির্মাণ হচ্ছে। শুধুমাত্র গায়ের জোড়ে এসব চলছে। আর ওদিকে পুলিশ বা প্রশাসনের কোনো হেলদোল নেই। আইনজীবীর সওয়াল কাঁথি পুরসভা রিপোর্টে বেআইনি নির্মাণের কথা উল্লেখ করলেও পদক্ষেপের বেলায় কিছুই করেনি।
এরপরই পুরসভার আইনজীবী পূর্ত দফতরের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে বলেন, “পুরসভার জায়গা ঠিকই তবে রাস্তা দখল করে বেআইনি নির্মাণ হলে সেটা ভাঙার দায়িত্ব পূর্ত দফতরের।” পাল্টা পূর্ত দফতরের আইনজীবীর দাবি, “জায়গা পুরসভার তাই বেআইনি নির্মাণ ভাঙার দায়িত্বও পুরসভারই।”
এক দুই কথায় বচসায় জড়িয়ে পড়েন দু’পক্ষের আইনজীবী। তুমুল হইহট্টগোল শুরু হয়ে যায় এজলাসে। এরপরই আইনজীবীদের ধমক দিয়ে চুপ করান বিচারপতি। সব পক্ষকে উদ্দেশ্য করে বিচারপতি বলেন, ‘নির্মাণকার্য যে বেআইনি তা একেবারেই পরিষ্কার, তারপরও দায় ঠেলাঠেলি চলছে কেন? এরপরই আগামী ৬ সপ্তাহের মধ্যে বেআইনি নির্মাণ ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। পুরসভা এবং পূর্ত দফতরকে যৌথভাবে অবৈধ নির্মাণ ভাঙার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।