বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বেহালা বললেই মনে পড়ে দুর্গাপুজোর কথা। মনে পড়ে প্রাক্তন প্রাক্তন চট্টোপাধ্যায়ের কথা। আর সেই বেহালাতেই (Behala) এবার আরেক কীর্তি ফাঁস। তাও আবার শিক্ষাক্ষেত্রেই। কাঠগড়ায় বেহালার নামকরা বিবেকানন্দ পল্লী কিশোর ভারতী উচ্চবিদ্যালয়। কী অভিযোগ? অভিযোগ বিগত ৩২ বছর ধরে সরকারি অনুমোদন ছাড়াই চলছে এই স্কুল।
তবে সরাসরি নয়, চাঞ্চল্যকর এই বিষয়টি উঠে এল অন্য এক মামলার প্রেক্ষিতে। শুক্রবার এই অভিযোগেই তোলপাড় আদালত। জানা যায় ২০১৭ সালে উল্লেখিত ওই স্কুল থেকে অবসর নেন এক শিক্ষিকা। কিন্তু অবসরকালীন পেনশন পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন ধারা বন্দোপাধ্যায় নামে ওই শিক্ষিকা।
বিষয়টি একাধিকবার স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছিল। মধ্যশিক্ষা পর্ষদেও এই বিষয়টি জানান ধারাদেবী। তবে লাভের লাভ কিছু না হওয়ায় হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ওই শিক্ষিকা। শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর (Justice Biswajit Basu) এজলাসে সেই মামলার শুনানি হয়।
আরও পড়ুন: রবীন্দ্রনাথ আমলের পর এই প্রথম! অমর্ত্য সেনের উল্টো কাজ করে নজির গড়লেন দম্পতি
এদিন মামলার শুনানিতেই শোরগোল পড়ে যায় এজলাসে। মামলাকারীর পক্ষের আইনজীবী আদালতে জানান, পেনশনের বিষয়ে পর্ষদে গিয়ে তার মক্কেল ওই শিক্ষিকা জানতে পারেন ওই স্কুলের অনুমোদনের পুনর্নবীকরণ সংক্রান্ত ১৬০০০ টাকা বকেয়া রয়েছে। সেই টাকা মেটালেই পর্ষদ পরবর্তী পদক্ষেপ করবেন বলে আদালতে জানান আইনজীবী।
আরও পড়ুন: সেপ্টেম্বরেই সুখবর! বহু প্রতীক্ষার পর অবশেষে বাড়তে চলেছে DA, জানুন কারা রয়েছে তালিকায়
ঘটনা শুনে থ বিচারপতি। বিচারপতি বসুর প্রশ্ন, একটা স্কুল কোনও রকম স্থায়ী সরকারি অনুমোদন ছাড়া ৩২ বছর ধরে কীভাবে চলছে? এরপর জেলা স্কুল পরিদর্শক ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বিচারপতি বলেন, পর্ষদ কী করছিল? পরিদর্শকরা কী করছিলেন? শুধু বদলি সংক্রান্ত বিষয়ে নজরদারি রাখাই কী তাদের কাজ! ক্ষোভে ফেটে পড়েন বিচারপতি।
এরপর ওই স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করে বিচারপতি বলেন, এত বছর ধরে কয়েক হাজার পড়ুয়া ওই স্কুল থেকে মাধ্যমিক পাশ করেছে, তারা যদি বাইরে পড়তে যায় এবং সেই বিশ্ববিদ্যালয় যদি স্কুলের অনুমোদন সংক্রান্ত তথ্যের খোঁজ করেন তাহলে তো এর জন্য ছাত্র-ছাত্রীরা বিপদে পড়তে পারেন। অন্যদিকে বিচারপতির কড়া প্রশ্নের মুখে পর্ষদের আইনজীবী বলেন রাজ্যে এরম বহু স্কুল রয়েছে যেখানে প্রথমে অস্থায়ী অনুমোদন দেওয়া হয়। পরে স্কুল আবেদন করলে স্থায়ী অনুমোদন করে দেওয়া হয়। তবে এই স্কুল সেই আবেদনই করে নি। তাই এই ঘটনা।
এই শুনে বিচারপতি বলেন, ‘এটা তো অত্যন্ত চিন্তার বিষয়!’ অন্যদিকে অনুমোদনের জন্য কোনও শিক্ষকের পেনশন আটকে থাকতে পারে না সেই বলে বিচারপতি পর্ষদকে এই সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য আদালতে জমা করার নির্দেশ দেন।