বাংলা হান্ট ডেস্ক : অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal) অনুপস্থিতিতে পরিবর্তন হয়েছে বীরভূমের রাজনীতি। কেষ্ট বিরোধী হিসেবে জেলা রাজনীতিতে পরিচিত ফইজুল হক ওরফে কাজল শেখকেই বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি হিসেবে বেছে নিল তৃণমূল (Trinamool Congress)। এদিন বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি পদে শপথ নেন কাজল। সহ-সভাধিপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে স্বর্ণলতা সোরেনকে। অনুব্রত তিহাড়ের জেলে বন্দি। সেখানে তাঁর বিরোধী বলে পরিচিত কাজলকে সভাধিপতির দায়িত্ব দেওয়া বড় সিদ্ধান্ত বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
এদিন জেলা পরিষদের সভাধিপতির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান ঘিরে সাজো সাজো রব গোটা বীরভূম জেলায়। জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্যরা সকলে এদিনের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায়, বোলপুরের সাংসদ অসিত মাল, সিউড়ির তৃণমূল বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী, লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
সভাধিপতি পদে শপথ নেওয়ার পর কাজল বলেন, ‘২০১১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে উন্নয়নের নিরিখে বীরভূমের ছবি বদলে দিয়েছেন। বীরভূমকে আমাদের প্রিয় মুখ্যমন্ত্রী সব দিয়েছে। বিক্ষিপ্তভাবে কোনও গ্রাম বা এলাকায় উন্নয়ন হয়নি। জেলা পরিষদের দায়িত্ব নিয়ে সেখানে কাজ করারই আমাদের লক্ষ্য। জেলা পরিষদ সদস্য ও ব্লক সভাপতিদের থেকে খোঁজ খবর নিয়ে সেই কাজ করা।’
তিনি আরও বলেন, ‘জেলা পরিষদের দায়িত্ব নেওয়ার পর এলাকায় এলাকায় গিয়ে মানুষের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের সমস্যার কথা বুঝতে হবে। যেখানে উন্নয়নের খামতি রয়েছে, সেগুলো পূরণ করতে হবে। নতুন প্রজন্মকে এখন এগিয়ে দেওয়ায়ই আমার। বাংলায় গণতন্ত্র রয়েছে, সেই প্রমাণ সবার কাছে রয়েছে। সেই কারণেই এই জেলায় বিরোধীরাও বেশ কিছু পঞ্চায়েতে জয়ী হয়েছেন। সরকারি সব প্রকল্পের সুবিধা সবদলের মানুষ পেয়েছেন। উন্নয়নের ক্ষেত্রে কোনও বঞ্চনা করা হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাজনীতি আমার পেশা নয় নেশা। কাউকে আমি পেশা বানাতেও দেবো না। কোনোও কিছু পাওয়ার জন্য আমি রাজনীতিতে আসিনি।’ এই মন্তব্য করার সঙ্গে সঙ্গেই হাততালিতে ফেটে পড়ে জনতা। এই করতালিই বুঝিয়ে দেয় অনুব্রতর জায়গা এবার ভরাট হতে চলেছে। এমনই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলের।
আরও পড়ুন : রাজনীতি থেকে কি এবার মুছে যাবেন অনুব্রত? কাজল শেখ সভাধিপতির পদে শপথ নিয়েই দিলেন বিশেষ ইঙ্গিত
অন্যদিকে সভাধিপতি কাজলের শপথ গ্রহণের পর কড়া বার্তা দিয়েছেন জেলা কোর কমিটির সদস্য ও বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায়। কাজল অনুগামীদের তিনি কার্যত সতর্ক করেছেন। তৃণমূল সাংসদ বলেন, ‘কাজল সভাধিপতি হয়েছেন, তাঁকে যাঁরা ভালোবাসেন তাঁদের সংযত হতে হবে। এখনও কোনও অন্যায় বা গুন্ডামি করলে কাজলের নাম খারাপ হবে। সেই কারণে এখন ভাইজানের (কাজলের) লোক বলে যা খুশি তাই করলে চলবে না। তোমরা যা খারাপ করবে তার খারাপ প্রভাব তোমাদের প্রিয় মানুষ (কাজল শেখ) এর পরিচয় হবে। দল এই ধরনের কোনও কাজ বরদাস্ত করবে না।’