বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিয়োগ দুর্নীতির জট খুলতে ইডির নজরে এখন সুজয়কৃষ্ণর কণ্ঠস্বর। সেই ২০২২ থেকে নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) নিয়ে তোলপাড় গোটা রাজ্য। শিক্ষক কেলেঙ্কারির অভিযোগে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী, শাসকদলের বহু দুঁদে নেতা, শিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের পাশাপাশি গ্রেফতার হয়েছেন কালীঘাটের কাকু (Kalighater Kaku) সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রও (Sujay Krishna Bhadra)। বর্তমানে SSKM হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন তিনি। এবার হাসপাতালেই সুজয়কৃষ্ণর বিরুদ্ধে অ্যাকশন শুরু ইডির। সূত্রের খবর কাকুর কণ্ঠস্বর নমুনা সংগ্রহ করতে চেয়ে এসএসকেএম চিঠি দিয়েছে ইডি।
গত বৃহস্পতিবার বিশেষ PMLA আদালত নির্দেশ দিয়েছিল, প্রয়োজনে হাসপাতালে গিয়ে সুজয়কৃষ্ণের কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে হবে ইডি কে। তবে অসুস্থ সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের ওপর যাতে কোনও মানসিক চাপ না সৃষ্টি হয় সেদিকে খেয়াল রেখেই ইডি আধিকারিকদের এই কাজ করতে হবে। আদালতের সবুজ সংকেতের পর এবার হাসপাতালে গিয়েই নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে তৎপর ইডি।
প্রসঙ্গত, বাইপাস সার্জারির পর থেকেই SSKM এ ভর্তি সুজয়কৃষ্ণ। কিছুদিন আগে তার খোঁজখবর নিতে হাসপাতালেই সারপ্রাইস ভিসিটে যায় ইডি। এতদিন এসএসকেএম হাসপাতালে কী চিকিৎসা চলছে কাকুর? কী ওষুধ দেওয়া হচ্ছে তাকে? এই সমস্ত বিষয়ে জানতে চেয়ে হাসপাতাল সুপারের কাছে বয়ান রেকর্ড করছে ইডি। দরকারে এরপর সুজয়কৃষ্ণর চিকিৎসা কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন হাসপাতালে ভর্তি রেখেও করানোর ভাবনা চলছে।
আরও পড়ুন: বৃষ্টির ঝোড়ো স্পেল! দশমীতে দক্ষিণবঙ্গের এই ৭ জেলায় চলবে তাণ্ডব, জানাল আবহাওয়া দপ্তর
উল্লেখ্য, সুজয়কৃষ্ণকে গ্রেফতারির পর থেকেই একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য উঠে আসে ইডির হাতে। ইডির দাবি, বিষ্ণুপুর থানার সিভিক ভলান্টিয়ার রাহুল বেরাকে দিয়ে যাবতীয় দুর্নীতি চালাতেন সুজয়কৃষ্ণ। সূত্র ধরে রাহুল বেরার বাড়িতেও পৌঁছে যায় তদন্তকারী সংস্থা। তল্লাশি চালিয়ে রাহুলের ফোন বাজেয়াপ্ত করে ইডি। বাজেয়াপ্ত হওয়া সেই ফোনের একটি কল রেকর্ডিং ইডির হাতে আসে।
ইডির দাবি সুজয়কৃষ্ণ রাহুলকে ফোনে থাকা কুকীর্তির কিছু তথ্য মুছে ফেলার নির্দেশ দেন। তবে সত্যিই সেই কণ্ঠস্বর যে সুজয়কৃষ্ণেরই কী না তা এখনও জানা যায়নি। ধন্দই থেকে গিয়েছে। এরপর গত জুলাই মাসে কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠস্বর সংগ্রহের জন্য আদালতে আবেদন জানায় ইডি। অনুমতিও দেয় আদালত।
যদিও এরপরই হঠাৎ সুজয়কৃষ্ণের স্ত্রীর প্রয়াণ হয়। স্ত্রীর শেষকৃত্যের সময় আদালত তাকে প্যারোলে মুক্ত হওয়ার অনুমতি দেয়। এদিকে প্যারোলের মেয়াদ ফুরোলে জেলে ফিরতেই বুকে ব্যাথা শুরু হয় সুজয়কৃষ্ণের। তড়িঘড়ি তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই তার বাইপাস সার্জারি করানো হয়।
বাইপাস সার্জারির পর ছাড়া পেলে ফের প্রেসিডেন্সি জেলে আনা হয় তাকে। তবে জেলে ফিরতেই ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন সুজয়কৃষ্ণ। তড়িঘড়ি SSKM হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাকে। সেই থেকে সেখানেই রয়েছেন সুজয়কৃষ্ণ। তাই পরিস্থিতি বুঝে এবার হাসপাতালে গিয়েই সুজয়কৃষ্ণের কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইডি।