বাংলা হান্ট ডেস্কঃ তৃণমূল নেতাদের কলেজে চাকরি দেওয়া নিয়ে আবারও বিতর্কে জড়াল শাসকদল। কসবা কলেজের পর এবার কাকদ্বীপ কলেজ। সেখানেই সাতজন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা-কর্মী অস্থায়ী কর্মী হিসেবে নিযুক্ত হওয়ায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। আর এই বিতর্কে ফের সামনে এলেন দলের বর্ষীয়ান সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Kalyan Banerjee)। তাঁর মন্তব্যে কার্যত বিঁধলেন দলীয় নেতৃত্বকেই। প্রশ্ন তুললেন, নেতারা রাজনীতি করবেন না চাকরি করবেন—দুটো একসঙ্গে হয়? তাঁর সাফ কথা, “কর্মীদের চাকরি দিন, নেতাদের নয়।”
জানা গিয়েছে, কাকদ্বীপ কলেজে নিযুক্ত সাতজন TMCP কর্মী ২০২২ সাল থেকেই অস্থায়ীভাবে কাজ করছেন। কলেজের পরিচালন সমিতির চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল বিধায়ক মন্টুরাম পাখিরা বলেন, “NAAC মূল্যায়নের সময় অতিরিক্ত লোকের দরকার ছিল, তাই গভর্নিং বডির সিদ্ধান্তে নিয়োগ হয়েছে।” তিনি আরও জানান, নিযুক্তরা প্রত্যেকেই আর্থিকভাবে দুর্বল পরিবারের সন্তান। তবে কলেজের অধ্যক্ষ শুভঙ্কর চক্রবর্তী জানান, “আমি যোগদানের আগেই এই নিয়োগ হয়েছে।” ফলে নিয়োগ প্রক্রিয়া ঘিরে শুরু হয়েছে দ্বন্দ্ব এবং দায় ঠেলার রাজনীতি।
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Kalyan Banerjee) স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, “এটা আমি মেনে নিতে পারছি না। নেতারা যদি চাকরি পেতে থাকেন, তাহলে কর্মীদের ভবিষ্যৎ কোথায়?” সিপিএম আমলেও এমন হয়েছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, তৃণমূল আমলেও এই প্রবণতা চলছে, তবে নেতাদের কাজ দেওয়া এবারই প্রথম শুনলেন! তিনি আরও বলেন, “এটা আমার ব্যক্তিগত মতামত। লিখে নিন। না হলে আবার AITC বলবে, ‘দল আমার সঙ্গে নেই’।”
কসবা (Kasba) গণধর্ষণ কাণ্ডে মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন কল্যাণ ও মদন মিত্র। সেবার তৃণমূল (TMCP) জানিয়েছিল, তাঁদের মন্তব্য দল সমর্থন করে না। এবারও কল্যাণের বক্তব্য নিয়ে অস্বস্তি বাড়লেও, দলের তরফে এখনো কোনও প্রতিক্রিয়া নেই। তবে প্রশ্ন উঠছে—কল্যাণের মতো বর্ষীয়ান নেতা বারবার প্রকাশ্যে দলের বিরুদ্ধে কথা বললেও কেন চুপ থাকছে নেতৃত্ব? দলীয় শৃঙ্খলার প্রশ্নে নেতৃত্বের এই ‘নীরবতা’ নিয়েও কটাক্ষ শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।