বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কসবা ল’কলেজের (Kasba Rape Incident) ঘটনায় বর্তমানে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। তার মধ্যে তৃণমূল (Trinamool Congress) সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Kalyan Banerjee) মন্তব্যে ক্ষুব্ধ দল। কসবার আইন কলেজে গণধর্ষণের ঘটনা নিয়ে শুক্রবার তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন ‘যদি একজন বন্ধু তাঁর বান্ধবীকে ধর্ষণ করে, সেখানে নিরাপত্তা কী করতে পারে? শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভিতরে যদি এই ঘটনা ঘটে, সেখানে কি পুলিশ থাকবে?’ কলেজের ভিতর সহপাঠী এরকম ঘটনা ঘটালে নিরাপত্তা দেওয়া হবে কী করে? প্রশ্ন তোলেন কল্যাণ। সোমবার হুগলির ডানকুনিতে একটি রাজনৈতিক কর্মসূচি থেকে কল্যাণ বলেন, ‘আইন আছে তাই ফাঁসি হবে। আইন না থাকলে ল্যাম্পপোস্টে বেঁধে গুলি করে মেরে দেওয়া উচিত!’ এমনকী, ‘কেন এই ধরনের বিকৃত মনস্ক মানুষ দলে থাকবেন?’ প্রশ্ন তোলেন তৃণমূল সাংসদ।
এক্স হ্যান্ডেলে কী লিখলেন কল্যাণ (Kalyan Banerjee)?
তৃণমূল সাংসদের এ এহেন মন্তব্যে শুক্রবার থেকেই বিতর্ক শুরু হয়েছিল রাজনৈতিক মহলে। সেই বিতর্কের মধ্যেই শনিবার সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করে শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদের সঙ্গে দলগতভাবে দূরত্ব বাড়িয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। এই পোস্টের কিছুক্ষণ পরেই পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানান কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি সমাজমাধ্যমে জানালেন, দলের বক্তব্যের সাথে তিনি একমত নন।
এমনকি, কসবার ল’কলেজের ঘটে যাওয়া ঘটনার পরিপেক্ষিতে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যের প্রসঙ্গে শনিবার প্রথমে তৃণমূলের (TMC) তরফ থেকে জানানো হয়, তাঁর বক্তব্যটি একান্তই ব্যক্তিগত মতামত। দল এই বক্তব্যের সঙ্গে কোনোভাবেই সহমত নয়। এক্স হ্যান্ডেলে আরও লেখা হয়, “এই ধরনের বক্তব্য কোনও ভাবেই দলের অবস্থানকে প্রতিফলিত করে না। আমাদের অবস্থান স্পষ্ট, মহিলাদের উপর অপরাধের ক্ষেত্রে বরাবরই জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করা হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও করা হবে। যারা এই নৃশংস ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে যেন কঠোরতম শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়।’’
আরও পড়ুনঃ সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য, সরকারি কর্মীরা আদৌ বকেয়া DA পাবেন? কী বলছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ
তৃণমূল কংগ্রেসের এই বিবৃতির পর কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ঘন্টাখানেকের মধ্যেই পাল্টা গর্জে ওঠেন। শনিবার তৃণমূল কংগ্রেসের পোস্টের পরেই এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লিখেছেন, ‘‘আমি তৃণমূলের বক্তব্যের সম্পূর্ণ বিরোধিতা করছি। যাঁরা এই ধর্ষকদের আড়াল করছেন, ওঁরা কি পরোক্ষে সেই সব নেতাদের সমর্থন করছেন? এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে সুশীল বিবৃতি দিয়ে কোনও পরিবর্তন হবে না। বরং অভিযুক্ত নেতাদের বিরুদ্ধে এখনই কড়া পদক্ষেপ করতে হবে।’’
এইদিন তৃণমূল সংসদ আরও জানান, কেন এই ধরনের বিকৃত মনের মানুষ দলে থাকবেন। যদি এই রকমের মানুষ দলে থাকে তাহলে তাকে চিহ্নিত করে বার করে দেওয়া উচিত। এই মানুষগুলিকে বার করে দিলে তাতে খুশি হবে সাধারণ নাগরিক। এছাড়াও কল্যাণ (Kalyan Banerjee) তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ভূমিকা নিয়েও একাধিক প্রশ্ন তোলেন। তাঁর বক্তব্য , ‘সবচেয়ে দুঃখের একজন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ছেলে ছাত্রীকে ধর্ষণ করেছে। এর থেকে দুঃখের কিছু হতে পারে না। এই ধরনের মানুষ দলে থেকে দলের উপকারের তুলনায় অপকার বেশি করছে।’