ইগো নাকি দলীয় ষড়যন্ত্র? কল্যাণের ইস্তফার পর অভিষেকের ফোনে নতুন জল্পনা

Published on:

Published on:

Kalyan Banerjee Resigns as TMC Chief Whip Amid Abhishek’s Rise in Parliament

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বেশ কিছুদিন ধরে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্ব বদলের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছিল। সেই আবহে গত সোমবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে লোকসভার দলনেতা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এই ঘোষণা হওয়া মাত্রই উত্তাল হয়ে উঠেছে দলীয় অন্দরমহল। আর সেই উত্তাপ আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের দীর্ঘদিনের মুখ্য সচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Kalyan Banerjee)। অভিষেককে নেতৃত্বে আনতেই কি সরে যেতে হল তাঁকে? নাকি দলেই ক্রমশ কোণঠাসা হয়ে পড়ছিলেন তিনি? ইস্তফা দিয়ে এই প্রশ্নগুলোই আরও জোরদার করে তুললেন কল্যাণ (Kalyan Banerjee)।

অভিষেককে ঘিরে নেতৃত্ব বদলের সুর, ইস্তফা দিলেন কল্যাণ (Kalyan Banerjee)

তৃণমূলের তরফে লোকসভায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Kalyan Banerjee) ভবিষ্যৎ নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছিল। কারণ, দলের সংসদীয় নিয়ম অনুযায়ী, দলনেতার নির্দেশেই মুখ্য সচেতককে চলতে হয়। তখন থেকেই জল্পনা ছিল, কল্যাণ কি অভিষেকের অধীনে কাজ করবেন?

সেই জল্পনার মধ্যেই সোমবার আচমকা সংবাদমাধ্যমের সামনে এসে কল্যাণ (Kalyan Banerjee) জানান, তিনি লোকসভায় মুখ্য সচেতকের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। তিনি বলেন, “মমতাদি বলেছেন, আমি নাকি সঠিকভাবে সাংসদদের মধ্যে সমন্বয় রাখতে পারছি না। কে কখন বক্তৃতা দেবেন, সেটাও নাকি ঠিক করতে পারছি না। সেই কারণেই আমি ইস্তফা দিয়েছি।”

মহুয়াকে নিয়ে বিস্ফোরক কল্যাণ (Kalyan Banerjee)

ইস্তফার পাশাপাশি এদিন কল্যাণ (Kalyan Banerjee) মুখ খোলেন মহুয়া মৈত্রকে নিয়েও। দলের বৈঠকের আগেই মহুয়াকে উদ্দেশ করে তাঁর মন্তব্য, “যাহ, আজকের দিনটা গেল।” স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে, মহুয়া ও কল্যাণের মধ্যে দ্বন্দ্ব অনেক দিন ধরেই চলছে।

তবে ইস্তফার পরে কল্যাণ (Kalyan Banerjee) জানান, অভিষেক তাঁকে ফোন করেছিলেন এবং বলেছেন, “৭ তারিখ দিল্লি যাচ্ছি, ততদিন অপেক্ষা করুন।” এর থেকেই ইঙ্গিত মিলছে, অভিষেক চাইছেন না এখনই কল্যাণ পুরোপুরি সরে দাঁড়াক। এদিকে কল্যাণের ইস্তফা এখনও দলের তরফে গৃহীত হয়নি। তবে আপাতত ঠিক হয়েছে কাকলি ঘোষদস্তিদার সাংসদদের সমন্বয়ের দায়িত্ব সামলাবেন।

উল্লেখ্য, ২০০৯ সাল থেকে লোকসভার সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। আইনজীবী হওয়ার সুবাদে সংসদের নানা নিয়মকানুনে তাঁর দক্ষতা রয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরে অভিজ্ঞতার নিরিখে তিনিই হতে পারতেন দলনেতা। কিন্তু হঠাৎ অভিষেকের নাম ঘোষণায় হতাশ হয়ে পড়েন তিনি। দলেরই একাংশের মতে, কল্যাণ (Kalyan Banerjee) হয়তো আঁচ করেছিলেন, তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে। তাই আগেভাগেই পদত্যাগ করে পরিস্থিতি নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখলেন।

এখন প্রশ্ন উঠছে, কল্যাণ না চাইলে কে হবেন নতুন মুখ্য সচেতক? মহুয়া মৈত্র, কাকলি ঘোষদস্তিদার, শত্রুঘ্ন সিনহা কিংবা কীর্তি আজা, এই চারজনের নাম ঘুরপাক খাচ্ছে। এরমধ্যে মহুয়ার নাম বেশি উঠে আসছে, কারণ, কাকলির শরীর ভালো নয়, বাকি দু’জনের অভিজ্ঞতা সীমিত। ফলে অনেকে মনে করছেন, এই পরিস্থিতি বিচার করেই কল্যাণকে ধৈর্য ধরতে বলছেন অভিষেক।

Kalyan Banerjee Resigns as TMC Chief Whip Amid Abhishek’s Rise in Parliament

আরও পড়ুনঃ ‘শুধু ব্যর্থতা নয়, এটা ষড়যন্ত্র’, বাংলার বন্যা পরিস্থিতির জন্য DVC-র ভূমিকা হিসাব দিয়ে বুঝিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী

তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরমহলে এই মুহূর্তে যে নেতৃত্ব ও আস্থার সংকট চলছে, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Kalyan Banerjee) ইস্তফা যেন তারই প্রতিফলন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্থান নিঃসন্দেহে নতুন প্রজন্মকে সামনে আনছে, কিন্তু প্রবীণদের কি দল থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার হবে? এই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে দলীয় অন্দরে।