বাংলা হান্ট ডেস্ক : আরজিকরের তরুণী চিকিৎসকের নির্মম হত্যা-ধর্ষণ কান্ডের ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা দেশ। এরই মাঝে বেফাঁস মন্তব্য করে বিতর্কে কাঞ্চন মল্লিক (Kanchan Mullick) সেই ৯ আগস্ট তিলোত্তমার মৃত্যুর পর থেকে রাজ্যজুড়ে দফায় দফায় চলছে প্রতিবাদ মিছিল। মেয়ের বিচারের দাবিতে দিনের পর দিন বিনিদ্র রজনী কাটাচ্ছেন রাজ্যের মানুষ। কিন্তু আজও বিচার অধরা। কিন্তু এবার এর শেষ দেখেই ছাড়বেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আন্দোলনরত চিকিৎসকরা।
সুদীপ্তা চক্রবর্তী বন্ধুত্ব ত্যাগ করায় কি প্রতিক্রিয়া দিলেন কাঞ্চন মল্লিক (Kanchan Mullick)
প্রতিবাদ জানাতে রাজ্যজুড়ে কর্মবিরতিতে বসেছেন তাঁরা। আর এই সংবেদনশীল পরিস্থিতিতেও রবিবার আন্দোলনরত চিকিৎসকদের বেতন নিয়ে ‘খোঁচা’ দিতে গিয়ে বেলাগাম আক্রমণ করেছেন অভিনেতা তথা তৃণমূল বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিক (Kanchan Mullick)। রবিবার চিকিৎসকদের উদ্দেশ্যে কাঞ্চনের প্রশ্ন ছিল, ‘কর্মবিরতি পালন করছেন শাসকদলের বিরুদ্ধে, ভাল। কিন্তু, তাঁরা সরকারি বেতন নিচ্ছেন তো, না কি নিচ্ছেন না? এটা আমার প্রশ্ন। বোনাস নেবেন তো? না নেবেন না?’
কাঞ্চন মল্লিকের (Kanchan Mullick) এই মন্তব্য কার্যত দাবানলের গতিতে ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়। চিকিৎসকদের নিয়ে কাঞ্চনের মন্তব্য শুনে ছি ছি করতে শুরু করেন সহকর্মীরা। একই সুর অভিনেতার এককালের বন্ধু তথা সহকর্মী সুদীপ্তা চক্রবর্তীর (Sudipta Chakraborty) গলাতেও। এদিন তিনি ‘বন্ধু’ কাঞ্চনকে (Kanchan Mullick) ত্যাগ করে তাঁর উদ্দেশ্যে লিখেছেন, ‘এক সময়ের বন্ধু/সহকর্মী কাঞ্চন মল্লিক (Kanchan Mullick), তোকে ত্যাগ দিলাম।’
সেইসাথে চাঁচাছোলা ভাষায় অভিনেত্রী লিখেছেন, ‘অনুপ্রেরণার লকারে চোখ,কান,মাথা,মনুষ্যত্ব, বিবেক,বুদ্ধি,বিবেচনা,শিক্ষা সব ঢুকিয়ে রেখে চাবি টা হারিয়ে ফেলেছিস মনে হয়। চাবি টা খুঁজে পেলে খবর দিস বন্ধু। তখন আবার কথা হবে, আড্ডা হবে।’ সেইসাথে সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন মন্তব্য করার কারণ জানিয়ে সুদীপ্তা এদিন লিখেছেন, ‘কথাগুলো ফোন করে বা মেসেজ করেও বলতে পারতাম হয়ত, যদি তোর বলা কথাগুলো ফোনেই শুনতাম। তুই যেহেতু সংবাদ মাধ্যমকে বললি, আমিও তাই সোশ্যাল মিডিয়াতেই লিখলাম।’
আরও পড়ুন : RG Kar কাণ্ডে, কাঞ্চন মল্লিকের নিশানায় সরকারি কর্মচারীরা, সারাসরি ‘খোঁচা’ দিলেন বেতন নিয়ে
এছাড়াও আরও একটি ফেসবুক পোস্টে ‘এক সময়ের বন্ধু’ কাঞ্চন মল্লিককে (Kanchan Mullick) ‘মাননীয় বিধায়ক’ বলে সম্বোধন করে সুদীপ্তা লিখেছেন, ‘দেওয়ালে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবি ঝুলিয়ে রেখে এই নির্লজ্জ কমেডি করার আগে একবার ও ভাবলেন না? আপনার কমেডি অভিনয় ই কিন্তু মানুষের মনে একদিন আপনার পাকাপাকি স্থান দিয়েছিল। আমি ও তার ফ্যান।’
সেইসাথে এদিন সুদীপ্তা বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিককে পাল্টা প্রশ্ন করে লিখেছেন, ‘কর্মবিরতি তে থাকা ডাক্তাররা সরকারী চাকরি করেন বলে তাঁদের কর্মস্থলে দিনের পর দিন ধরে ঘটে যাওয়া সরকারের অন্যায় কাজ নিয়ে তাঁরা প্রশ্ন তুলতে পারবেন না? সরকারি পদক্ষেপ নিয়ে হতাশা বা উষ্মা প্রকাশ করতে গেলে একজন সরকারি চাকুরিজীবীর মাইনে নেওয়া যাবে না? বিচারের দাবিতে মিছিলে গিয়েছেন বলে তাঁদের পুজোর আগে প্রাপ্য বোনাস নিয়ে খিল্লি করে বলবেন- বোনাস যে হয়, সেটা নেবেন তো, না নেবেন না?’
আরও পড়ুন : সোনার দামে রেকর্ড পতন! সব ফেলে আজই ছুটুন দোকানে, কলকাতায় কত?
বন্ধু বিচ্ছেদের পর প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে এদিন আনন্দবাজার অনলাইনে কাঞ্চন বলেছেন, ‘আমি এ বিষয়ে কী আর বলব! সুদীপ্তার মনে হয়েছে, বলেছেন। যে যাঁর ব্যক্তিগত মত জানাচ্ছেন। আমিও আমার ব্যক্তিগত মতই প্রকাশ করেছিলাম।’ তবে কাঞ্চন দাবি করেছেন তিনি অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে ন্যায়বিচার চান।
সেইসাথে চিকিৎসকদের নিয়ে করা নিজের মন্তব্য প্রসঙ্গে সাফাই দিয়ে অভিনেতা বলেছেন, ‘আমি শুধু এটুকুই বলেছিলাম, চিকিৎসকেরা তো বেতন পান। মুমূর্ষু রোগীরা কি পরিষেবা পাবেন না? আমি যদি আন্দোলন করছি বলে কাজ না করি, আমাকে কি আমার প্রযোজক টাকা দেবেন? পেশাদার হিসেবে আমাকে পরিষেবা দিতেই হবে। তিনি চিকিৎসক হতে পারেন, আমার মতো অভিনেতা বা সাংবাদিকও হতে পারেন।’