বাংলা হান্ট ডেস্ক : কসবার সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে (Kasba Law College) ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনার (Gangrape) রেশ এখনও কাটেনি। সেই ঘটনার জেরেই এবার অনির্দিষ্ট কালের জন্য কলেজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলেজের গভর্নিং বডি (Bar Council Action)। কিন্তু হঠাৎ এমন সিদ্ধান্তে অখুশি রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Education Minister Bratya Basu)। তাঁর সাফ কথা, “কলেজ কর্তৃপক্ষ কীভাবে এই সিদ্ধান্ত নিল, জানি না।” এরপর ব্রত অবশ্য কলেজে পঠন পাঠন শীঘ্রই চালু হওয়ার কথা উল্লেখ করে বলেন, “আশা করছি ছাত্র-ছাত্রীরা দ্রুত স্বাভাবিক ছন্দে ফিরবে।” এই বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন ব্রাত্য বসু।

জানা যায় ঘটনার পর থেকেই চাপের মুখে ছিল কলেজ কর্তৃপক্ষ। ভুক্তভোগী হয়েছে অন্যান্য ছাত্রছাত্রীরা। এই প্রসঙ্গে কিছু ছাত্র-ছাত্রী জানায়, ‘আগে থেকে কলেজ বন্ধ হওয়ার ব্যাপারে আমাদের কিছু জানানো হয়নি। হঠাৎ করেই রবিবার রাতে প্রত্যেকের কাছে মেল ও মেসেজ পাঠানো হয় যে সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে কলেজ।” কলেজ কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তে হতবাক পড়ুয়ার। তারা অবিলম্বে ধর্ষকের শাস্তি চাইছে কিন্তু তার জন্য গোটা কলেজ বন্ধ রাখার বিষয়টিতে নারাজ ছাত্র-ছাত্রীরা।
‘ক্যারিয়ার অনিশ্চিত হয়ে গেল’—ক্ষুব্ধ ছাত্রছাত্রীদের ক্ষোভ
কলেজের এক ছাত্রী জানান, “আমাদের রেজাল্ট আটকে রয়েছে। জুনিয়রদের পরীক্ষা বন্ধ হয়ে গেছে। এই কলেজ থেকে আমরা প্রফেশনাল ডিগ্রি নিচ্ছি। এত বড় ঘটনা ঘটেছে ঠিক আছে, কিন্তু পড়াশোনায় তো ক্ষতি করা উচিত নয়।” অনেক পড়ুয়ার বক্তব্য, দীর্ঘদিন ধরে ক্লাস ঠিক মতো হচ্ছিল না। তার মধ্যেই এই সিদ্ধান্তে তাঁরা নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। কেউ কেউ বলছেন, “একটা ঘটনার জন্য গোটা কলেজকে বন্ধ করা ন্যায্য নয়। এটা আরও একটা চাপ হয়ে দাঁড়াল।”
আরও পড়ুন : লক্ষ্মীর ভাণ্ডারই শেষ নয়! তারপরেও সরাসরি মিলবে রাজ্য সরকারের এই ভাতা, জেনে নিন
বার কাউন্সিলের কড়া পদক্ষেপের ইঙ্গিত
ঘটনায় মূল অভিযুক্ত কলেজের অস্থায়ী কর্মী ও আইনজীবী ছিলেন। তাঁকে চাকরি থেকে আগেই বরখাস্ত করা হয়েছে। এবার তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে প্রস্তুত বার কাউন্সিলও। জানা গিয়েছে, অভিযুক্তর আইনজীবী হিসেবে লাইসেন্স থাকবে কি না, তা নিয়েও বৈঠক ডাকছে রাজ্য বার কাউন্সিল। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেছেন, “কলেজে পঠনপাঠন চালু থাকাটাই কাম্য। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ছাত্রছাত্রীদের যাতে কোনওভাবে ক্ষতি না হয়, সেদিকে নজর দেওয়া হবে।” এই ঘটনায় তীব্র চাপে কলেজ কর্তৃপক্ষ। তবে প্রশাসন ও শিক্ষামন্ত্রকের অবস্থান স্পষ্ট—ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ কোনওভাবেই বলি দেওয়া চলবে না।