বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কসবার ল’কলেজে আইনের ছাত্রীকে গণধর্ষণের (Kasba Rape Incident) অভিযোগ। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় তিন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন টিএমসিপির (TMCP) প্রাক্তন নেতা মনোজিৎ মিশ্র (Monojit Mishra)। এরপরেই সামনে আসতে শুরু করেছে মনোজিতের একাধিক কীর্তি। মুখ খুলেছেন বহু আতঙ্কিত ছাত্রছাত্রী।
কসবা গণধর্ষণ কাণ্ডের মূল অভিযুক্তের একাধিক কুকীর্তি ফাঁস!- (Monojit Mishra)
জানা যাচ্ছে, ২০১৪ সালে কসবার ওই কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন মনোজিৎ। তবে উত্তীর্ণ না হওয়ায় ডিসকলেজিয়েট হয়ে যান। তবে এরপর টিএমসিপির ইউনিট প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ক্রমেই বাড়তে থাকে তাঁর দাপট। কলেজের একসময়কার ছাত্রীদের দাবি, ওই ছাত্রনেতার দাপটের জেরে অনেকে কলেজে টিকতে পারেননি। হুমকি, মারধর, অপহরণ- তাঁর ‘জমানা’য় বাদ যায়নি কিছুই।
জানা যাচ্ছে, মনোজিৎ একসময় দক্ষিণ কলকাতার (South Calcutta) সাংগঠনিক দায়িত্ব পেয়েছিলেন। ছাত্র পরিষদ নেতৃত্ব অবশ্য তাঁর পদে থাকার কথা মানতে চায়নি। তবে পদ থাকুক বা না থাকুক, কলেজে মনোজিতের দাপট যে ছিল, সেটা একপ্রকার পরিষ্কার। অভিযোগ, পড়ুয়াদের পাশাপাশি শিক্ষকরাও তাঁর ভয়ে মুখ কুলুপ এঁটে রাখতেন।
আরও পড়ুনঃ রাজ্যে পরপর শিক্ষক নিয়োগ! SSC-র পর তৎপর প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ, নেওয়া হল বড় পদক্ষেপ
গত বছর আরজি কর কাণ্ডের (RG Kar Case) পর ‘রাত দখল’ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ায় কলেজের বেশ কয়েকজন পড়ুয়াকে মনোজিতের ‘রোষে’র মুখে পড়তে হয় বলে অভিযোগ। কারা আন্দোলনে শামিল হয়েছিলেন, সেটার তালিকা তৈরি করা হয়েছিল। কসবা কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত ও তাঁর অনুগামীরা ফেসবুক দেখে সেই লিস্ট বানিয়েছিলেন বলে অভিযোগ।
এরপর সেই তালিকা ধরে ধরে পড়ুয়াদের কলেজে ডেকে পাঠানো হয়। কেউ না আসলে হুমকি, প্রতিবাদ জানালে জুটত মারধর। অভিযোগ, একজন ছাত্র লেক মলের সামনে থেকে অপহৃত হয়ে মার খেয়ে রাস্তায় অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলেন। এক প্রাক্তন ছাত্রের দাবি, রাত দখলে যাওয়ার ‘অপরাধে’র জন্য প্রায় ১০-১২ জন পড়ুয়া এক বছর কলেজে প্রবেশ করতে পারেননি।
জানা যাচ্ছে, মনোজিতের (Monojit Mishra) বিরুদ্ধে মারধর, অপহরণ সহ একাধিক ধারায় মামলা হয়েছিল। বহু পড়ুয়া পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। বছর আটেক আগে কলেজ ক্যাম্পাসে ভাঙচুর, সিসিটিভি ভাঙার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। অধ্যক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে একবার গ্রেফতার হয়েছিলেন তিনি। সূত্রের দাবি, মনোজিতের বিরুদ্ধে ২০-রও বেশি মামলা আছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও তেমন কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুনঃ একধাক্কায় ১১% DA বাড়াল সরকার, কবে থেকে হাতে আসবে? বকেয়া নিয়েও বড় ঘোষণা
এক ছাত্রের দাবি, মনোজিৎকে ‘ক্যাজুয়াল স্টাফ’ হিসেবে নেওয়া হবে শোনার পর গত বছর বহু পড়ুয়া প্রতিবাদ করেছিলেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও তাতে কোনও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ।
চলতি সপ্তাহে মনোজিত (Monojit Mishra) ও তাঁর দুই অনুগামী কসবার সংশ্লিষ্ট ল’কলেজের আইনের ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন। ইতিমধ্যেই তিনজন গ্রেফতার হয়েছেন। এই আবহে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিকে চিঠি দিয়ে সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন আইনজীবীদের একাংশ। প্রাক্তন বিচারপতির তত্ত্বাবধানে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।