কাশ্মীরে ‘টার্গেট কিলিং”-র জন্য নয়া পন্থা পাকিস্তানি জঙ্গিদের, চিন্তায় ভারত

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কাশ্মীরে ফের একবার নতুন করে চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে টার্গেট কিলিং। টার্গেট কিলিং সাধারানত কোন পরিচিত সন্ত্রাসবাদীদের দিয়ে করানো হয়না। বরং এর জন্য ব্যবহার করা হাইব্রিড বা পার্ট টাইম সন্ত্রাসবাদীদের। অর্থাৎ এরা সরাসরি কোন জঙ্গি সংগঠনের সদস্য নয় বরং এরা সাধারন নাগরিকের সাথেই বসবাস করে। সাধারনত বিশেষ কিছু পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠনের মদতে এরা কিছু সময়ের জন্য সক্রিয় হয়ে ওঠে, এদের অস্ত্র দেওয়া হয় ওই সমস্ত জঙ্গি গোষ্ঠীর তরফেই। এরপর কাজ শেষে আবার তাদের কাছ থেকে অস্ত্র ফেরত নিয়ে নেওয়া হয় এবং তারা সাধারণ জীবন যাপন করতে শুরু করে।

এর ফলে সাধারনত দুটি বড় সুবিধা হয় পাকিস্তানি জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির। একদিকে যেমন উপত্যকা জুড়ে সৃষ্টি হয় ভয়ের বাতাবরণ তেমনি খুব সহজেই তারা এই সমস্ত বিষয়ে নিজেদের সমস্ত ভূমিকা অস্বীকার করতে পারে। অর্থাৎ পাকিস্তান খুব সহজেই এই বার্তা দিতে পারে যে কাশ্মীরি যুবকরাই এই সমস্ত হত্যাকান্ড ঘটাচ্ছে এর সঙ্গে তাদের কোন যোগ নেই। কিন্তু কেন এই ভয়ংকর কাজে লিপ্ত হচ্ছে যুবকরা? এক পুলিশ আধিকারিকের মতে এর পিছনে রয়েছে ড্রাগস এবং টাকা। সাধারণত ড্রাগস এবং টাকার বিনিময়েই এই সমস্ত কাজে জড়িয়ে পড়ে এলাকার যুবকরা।

গত বৃহস্পতিবারও শ্রীনগরে একটি স্কুলের অধ্যক্ষ সুপিন্দর কৌর এবং শিক্ষক দীপক চন্দকে হত্যা করেছে এই পার্ট টাইম কিলাররা। গত দুই সপ্তাহের মধ্যেই রীতিমতো সন্ত্রাসের বাতাবরন সৃষ্টি হয়েছে উপত্যকায়। নিহত হয়েছেন সাতজন সাধারণ নাগরিক এবং তাদের মধ্যে চারজনই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। এই ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে দিল্লিও। ইতিমধ্যেই কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গর্ভনরের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কাজ শেষে সাধারণ নাগরিকদের সাথে মিশে যাওয়ায় এই হাইব্রিড তথা পার্ট টাইম সন্ত্রাসীদের খুঁজে বের করা অত্যন্ত কঠিন কাজ পুলিশের জন্য। এই বছরে এখনও পর্যন্ত প্রায় ২৮ জন সাধারন নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে এদের হাতে। তাদের মধ্যে ২১ জন মুসলিম,এছাড়া বেশ কয়েকজন কাশ্মীরি পণ্ডিতও রয়েছেন। একটি পরিসংখ্যান বলছে, কাশ্মীরে এখনও অবধি প্রায় ৫২ জন সন্ত্রাসী সক্রিয় রয়েছে।

Indian Army encountered 5 terrorist in Jammu and Kashmir

 

পুলিশের এক কর্মকর্তা আগেই জানিয়েছিলেন, উপত্যকায় সন্ত্রাস রুখতে যথেষ্ট কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে প্রশাসন। কিন্তু এই হাইব্রিড সন্ত্রাসীদের নতুন করে নিয়োগ করা হয়েছে, আর সেই কারণেই তাদের খুঁজে বের করতে এতটা অসুবিধার মুখে পড়তে হচ্ছে পুলিশকে। আর এক কর্মকর্তা জানান, “সন্ত্রাসীদের এই ধরনের নকশা ফাঁস করার জন্য একটি বিশেষ কৌশল প্রণয়নের প্রয়োজন রয়েছে, যাতে অস্ত্রের সরবরাহ এবং যুবকদের উপর নজর রাখা যায়। কাশ্মীরে দেখা গেছে যে কোন সন্ত্রাসী সংগঠনে যোগদানকারী ব্যক্তিদের গ্রেফতার করা হয় অথবা এক মাসের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।”

Avatar
Abhirup Das

সম্পর্কিত খবর