বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আজ ২১ জুলাই, তৃণমূলের শহীদ দিবস (TMC Shahid Diwas)। এবছর ৩০ বছরে পদার্পণ করেছে ২১ জুলাই শহিদ তৰ্পন অনুষ্ঠান। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসছেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। বিশাল জমায়েত। মহানগরীর বুকে ঢল নেমেছে জোড়াফুলের সমর্থকদের।
সমাবেশে যোগ দিতে বিভিন্ন জেলা থেকে আসা কর্মীদের থাকা-খাওয়ার বন্দোবস্ত করা হয়েছে বিভিন্ন স্থানে। এই যেমন মালদা এবং মুর্শিদাবাদের তৃণমূল কর্মীদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে কসবার গীতাঞ্জলি স্টেডিয়ামে। অন্যদিকে জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, দুই দিনাজপুর ও দার্জিলিঙের কর্মী-সমর্থকদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্কে। মওলানা আজাদ কলেজ লাগোয়া শিবিরেও এলাহী ব্যবস্থা আগতদের জন্য।
সব শিবিরেই খাবারের মেনুতে অবশ্যই থাকছে ঝুরঝুরে সাদা ভাত, ডিম। বিরোধীদের কথায় ‘ডিম্ভাত’। ২১ জুলাই তৃণমূলের সমাবেশে ঐতিহ্যবাহী ডিম-ভাতের (Dim Bhat) যুগলবন্দী যে থাকবেই সেই বিষয়ে কারও সন্দেহের অবকাশ নেই। তবে জানেন কি মাছ, মাংস বাদ দিয়ে কেন এই ডিম-ভাতকেই কাছে টেনে নেয় তৃণমূল? এক দুটি নয়! এর পেছনে রয়েছে বহু কারণ।
প্রথমেই পকেটের বিষয়টা। সস্তায় পুষ্টিকর, খরচ বাঁচানোটার জন্য বছরের পর বছর ডিম ভাতকে সমাবেশের মেনু হিসেবে বেছে নেওয়া হয়। সস্তায় আমিষ খাবারের দিক থেকে দেখতে গেলে ডিমের জুড়ি মেলা ভার। তবে এটি অন্যতম একটা কারণ হলেও একমাত্র কারণ নয়।
মাছ কিংবা মাংস খাওয়াতে গেলে তার প্রচুর ঝামেলা। কাটারও যেমন ঝামেলা তেমনি রান্নারও। আবার কোনও পিস একটু বড়, কোনওটা একটু ছোট। স্কেল দিয়ে তো আর মেপে কাটা যায়না। তাই আমার পাতে ছোট ওর পাতে বড়, এই অভিযোগ গুলো এড়াতে ডিমই শ্রেয়। একটা করে দিলেই সমস্যা মিটে গেল।
আবার ডিমের আরেকটি সুবিধা হল যদি কোনও ক্ষেত্রে কমও পড়ে যায় তবে বাজার থেকে তড়িঘড়ি এনে সেদ্ধ করে দিলেই হয়ে গেল। মাছ বা মাংসের ক্ষেত্রে এই নিয়ে প্রচুর হ্যাপা। আবার মাছ-মাংসের তুলনায় ডিম হজমও হয় জলদি। তাই দূর দূরান্ত থেকে ছুটে আসে দলীয় কর্মীদের স্বাস্থ্যের বিষয়ে ধ্যান দিয়েও ডিমকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। অন্যদিকে নগরীকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতেও বদ্ধপরিকর শাসকদল।
খাওয়াদাওয়ার পর চিকেন বা মাছের হাড় বা কাঁটা যাই বলা হোক না কেন, এই দিয়ে সভাস্থল নোংরা হওয়াটা খুব স্বাভাবিক। তবে ডিমের ক্ষেত্রে সেইসব কোনও ঝামেলা নেই। মুখে পুরে নিলেই শেষ।
এবার যদি রাজনৈতিক সুবিধার দিক থেকে দেখা যায় তবে ডিম-ভাতের অন্যতম একটি সুবিধা হল, শুধু ডিম গুণেই বলে দেওয়া যায় সভায় কত লোক হয়েছে। ২১ জুলাই এর মত বড় সভায় সেটা পুরোপুরি ধারণা করা না গেলেও মোটের উপর একটা আন্দাজ অবশ্যই মেলে। যে কোনও রাজনৈতিক দলের ক্ষেত্রেই সমাবেশ, কর্মসূচীতে লোকের উপস্থিতির পরিমাণের বিষয়ে অবগত থাকা ভীষণ জরুরি। তাই সবদিক থেকে বিবেচনা করে ভরসা সেই ‘ডিম-ভাত’এ।