ছোট্ট বয়সেই বিয়ে! ‘দিদি নাম্বার ১” চপ বেচেই বাজিমাত, শ্রীরামপুরের উমার দৈনিক আয় অবাক করবে

বাংলা হান্ট ডেস্ক : প্রচুর মানুষ এরকম আছেন যারা মনে করেন যে, অল্প বয়সের প্রেম নাকি দীর্ঘস্থায়ী হয় না। হ্যাঁ, অল্প বয়সে মানুষ ঠিক ভুলের পার্থক্য কম বোঝে ঠিকই তবে এই ধবি বোধহয় সবসময় সত্যি নয়। আর এবার সেটাই চাক্ষুষ প্রমাণ করে দেখিয়ে দিল হুগলির (Hooghly) শ্রীরামপুর (Serampore) মাহেশের দম্পতি উমা ও বিশ্বজিৎ।

জানা যায়, স্কুলে পড়ার বয়সেই পালিয়ে বিয়ে করেন দুজনে। সেই থেকে তারা একে অপরের সুখ, দুঃখের সাথী। সংসার চালানোর জন্য খুলেছিলেন তেলেভাজার দোকান। স্বামী স্ত্রী দুজন মিলেই সেই দোকান সামলান। আর এখন সেই দোকানই লোকমুখে খ্যাত দিদি নাম্বার ওয়ান (Didi No. 1) চপের দোকান নামে। সম্প্রতি টেলিভিশনের এক জনপ্রিয় টিভি শো-তে গিয়ে নিজেদের স্ট্রাগলের কথা তুলে ধরলেন এই দম্পতি।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে মাহেশ জগন্নাথ মন্দিরের পাশেই চপ, তেলেভাজার দোকান চালিয়ে আসছেন উমা রায় ও তার স্বামী বিশ্বজিৎ রায়। তাদের এই লড়াই শুরু হয়েছিল স্কুল জীবন শেষ করার আগেই। দশম শ্রেণীর বিশ্বজিৎ প্রেমে পড়েন সপ্তম শ্রেণীর উমার। সেখানে থেকেই শুরু হয় তাদের গল্প। এরপর পালিয়ে বিয়েও করেন তারা। সংসার সাজানোর জন্য খুলে ফেলেন তেলেভাজার দোকান।

আরও পড়ুন: এবার ময়দানে দেব-সৌমিতৃষা একসাথে! ছবি শেয়ার করে দিলেন বিশেষ খবর, উচ্ছ্বসিত ভক্তরা

একটা সময় এমন ছিল যখন তাদের দৈনিক রোজগার ছিল মাত্র ১০ থেকে ২০ টাকা। যা বর্তমান সময়ে এসে দাঁড়িয়েছে পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকায়। ত্রিপল ও দরমার ছোট্ট দোকান এখন ইট ও টালির গাঁথুনিতে পৌঁছেছে। এরপর সাল ২০১৭ তে তাদের উপর নজর পড়ে একটি জনপ্রিয় রিয়েলিটি সংস্থার কর্মকর্তাদের। ডাক আসে অডিশনের। শো জিততে না পারলেও দ্বিতীয় স্থান দখল করেন উমা। আর সেই থেকেই দোকানের নাম হয়ে যায় ‘দিদি নাম্বার ওয়ান’।

আরও পড়ুন : জি বাংলা নাকি স্টার জলসা, সূর্য-দীপা নাকি জগদ্ধাত্রী! টেলি অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডে কে পেল বেশি পুরস্কার?

উমার দোকানের প্রসঙ্গে এক স্থানীয় বাসিন্দা অশোক কুমার রুদ্র বলেন, ‘উমার দোকানে দীর্ঘ পাঁচ থেকে ছয় বছর ধরে চপ খেয়ে আসছি। একবার খেলে ভোলা যায় না। ফ্যাক্টরিতে কাজ সেরে বাড়ি ফেরার সময় প্রতিদিনই আমি এখান থেকেই চপ কিনে বাড়ি ফিরি। আর বাড়ির সকলেরও পছন্দ এই দোকানের চপ।’

didi number one

এদিকে উমা ও বিশ্বজিৎ-র কথায়, ‘দোকানের কোন কিছুই জানা ছিল না, কিভাবে চপ তৈরি করতে হয় তাও জানতাম না। আস্তে আস্তে সবটাই শিখেছি। জীবনে নিজের পায়ে দাঁড়াতে গিয়ে অনেক লড়াই করেছি। তবুও কখনো হেরে যায়নি, প্রভু জগন্নাথের কৃপায় দোকানে ক্রেতার ভিড় ভালোই হয়। আজ সংসার চালাতে কোন অসুবিধা হয় না। মেয়েরও বিয়ে হয়ে গেছে তারও একটি সন্তান রয়েছে।’


Moumita Mondal
Moumita Mondal

মৌমিতা মণ্ডল, গ্র্যাজুয়েশনের পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। বিগত ৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে লেখালেখির সাথে যুক্ত। প্রায় ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর