কেউ কালই বাড়ি ফিরতেন আবার কেউ পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী, দেশ ভুলবে না এই ৫ শহীদকে

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ জম্মুর পুঞ্চ জেলার সুরানকোটের অন্তর্গত ডেরা কি গলি এলাকায় গোপনে জঙ্গি নিকেশ করতে গিয়ে প্রাণ হারান ভারতের ৫ বীর সৈনিক। সোমবার ভোরে গপোন অভিযান চালায় নিরাপত্তা বাহিনী। আর সেখানে জঙ্গিদের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে প্রাণ হারান ৫ সেনা জওয়ান।

সেনার লেফটেন্যান্ট কর্নেল দেবেন্দ্র আনন্দ জানিয়েছেন, নিয়ন্ত্রণরেখা টপকে ৪-৫ সশন্ত্র জঙ্গি ভারতে অনুপ্রবেশ করে পুঞ্চের চামেরার জঙ্গলে লুকিয়ে রয়েছে -সূত্র মারফত এমন খবর আসে। এরপর শুরু হয় চিরুনি তল্লাশি অভিযান। সেই সময় গুলিবর্ষণে প্রাণ হারান নায়েক মনদীপ সিং, নায়েক সুবেদার জসবিন্দর সিং, সিপাহী বৈশাখ এইচ, সিপাহী সরোজ সিং ও সিপাহী গজ্জন সিং।

Indian Army Recruitment 2021 4

আসুন জেনে নেওয়া যাক, দেশ মাতৃকার জন্য প্রাণ উৎসর্গকৃত এই ৫ জওয়ানের বিষয়ে।

নায়েক সুবেদার জসবিন্দর সিং- ৩৯ বছর বয়সী এই জওয়ান, ২০০৬ সালে ৩ জঙ্গিকে হত্যা করার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেওয়ায়, তাঁকে সেনা মেডেল দেওয়া হয়। পাঞ্জাবের কাপুরথলা জেলার তালওয়ান্দি গ্রামের বাসিন্দা সুবেদার সিং-র বাড়িতে ৩৫ বছর বয়সী স্ত্রী সুখপ্রীত কৌর, ১৩ বছর বয়সী ছেলে বিক্রাজিৎ কৌর, ১১ বছরের মেয়ে হরনূর কৌর এবং ৬৫ বছর বয়সী মা রয়েছেন। তিনি দ্বাদশ শ্রেণী অবধি পড়াশুনা করেই ২০০১ সালে সেনাবাহিনীতে যোগ দিন।

কিছুদিনের মধ্যেই তাঁর প্রয়াত বাবার আত্মার শান্তি কামনা করে একটি অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। সেই কারণে শনিবার রাতে পরিবারের সঙ্গে আলোচনাও করেন তিনি। তাঁর পিতাও সেনাবাহিনীতে ক্যাপ্টেন পদে কর্মরত অবস্থায় অবসর গ্রহণ করেন।

নায়েক মনদীপ সিং- পাঞ্জাবের গুরুদাসপুরের ছাতা নিবাসী নায়েক মনদীপ সিং, তাঁরা দাদা জাগ্রুপ-র ১০ বছর পর সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন। ২০১৮ সালে বাবা মারা গেলেও পরিবারে স্ত্রী এবং ৩ বছর ১৮ মাসের একটা ছোট্ট ছেলে রয়েছে মনদীপের। বাড়িতে কম আসার কারণে, তাঁর সঙ্গে বেশির ভাগ সময় ভিডিও কলেই কথা হত পরিবারের লোকেদের।

সিপাহী সরোজ সিং- ভাইদের মধ্যে সর্ব কনিষ্ঠ মাত্র ২৫ বছরের সিপাহী সরোজ সিং ৪ বছর আগেই যোগ দেন সেনাবাহিনীতে। তাঁর বাকি দুই দাদা ভাইগুরপ্রীত এবং সুখবিন্দরও ছিলেন ভারতের সেনাবাহিনীর সৈনিক। ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। শেষবার রবিবার রাতে স্ত্রী রঞ্জিত কৌরের সঙ্গে কথা বলেছিলেন সরোজ সিং। এমনকি দিওয়ালিতে বাড়ি ফেরার আশ্বাসও দিয়েছিলেন সরোজ সিং।

বৈশাখ এইচ- কেরালার কোল্লাম জেলার কুদাভাত্তুর গ্রামের বাসিন্দা বছর ২৩-এর বৈশাখ এইচ-র আড়াই বছর আগে জম্মু ও কাশ্মীরে পোস্টং হয়। দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশুনা করেই ২০১৭ সালে সেনাবাহিনীতে যোগ বৈশাখ। সংসারে তিনি একমাত্র উপার্জিত সদস্য ছিলেন। পরিবারে তাঁর কর্মহীন বাবা, মা এবং ছোট বোন রয়েছে।

গজ্জন সিং- রূপনগর জেলার পাচারান্ডা গ্রামের বাসিন্দা গজ্জন সিং মাত্র ৪ মাস আগেই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন হরপ্রীত কৌরের সঙ্গে। আগামী ১৩ ই অক্টোবর ১০ দিনের জন্য তাঁর বাড়িতে আসার কথাও ছিল। পরিবারে তাঁর আরও তিন দাদা রয়েছে।

Avatar
Smita Hari

সম্পর্কিত খবর